Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

পিন নম্বর দিতে উধাও ৩৪ হাজার

লোকটির কথা বিশ্বাস করে শৈলেন্দ্রনাথবাবু তাঁর দু’টি এটিএম কার্ডের যাবতীয় তথ্য জানিয়ে দেন। মোবাইলে এসএমএস মারফত পাঠানো ‘ওটিপি’ (ওয়ান টাইম পাসওয়ার্ড) পর্যন্ত বলে দেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা
ভদ্রেশ্বর শেষ আপডেট: ২৮ জুলাই ২০১৭ ১১:২০
Share: Save:

প্রতারণার ফাঁদে পা টাকা খোওয়ানোর ঘটনা অব্যাহত হুগ‌লিতে। সম্প্রতি ভদ্রেশ্বরের এক অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মীর এটিএম নম্বর জেনে তাঁর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে এই কায়দাতেই ৩৪ হাজার টাকা তুলে নেওয়া হয় বলে অভিযোগ। টাকা ফেরত পেতে পুলিশের দ্বারস্থও হয়েছেন ওই বৃদ্ধ। পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করলেও বৃহস্পতিবার পর্যন্ত কেউ গ্রেফতার হয়নি। উদ্ধার হয়নি টাকাও।

অভিযোগকারী শৈলেন্দ্রনাথ দত্ত ভদ্রেশ্বরের আর বি অ্যাভেনিউর বাসিন্দা। অবসরপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মী ওই ব্যক্তি জানান, সোমবার বিকেল সাড়ে ৫টা নাগাদ তাঁর মোবাইলে ফোন আসে। ফোনের ও পার থেকে এক ব্যক্তি নিজেকে একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের ভদ্রেশ্বর শাখার ম্যানেজার বলে পরিচয় দেন। ওই শাখায় শৈলেন্দ্রনাথবাবুর অ্যাকাউন্ট রয়েছে। লোকটি বলে, অ্যাকাউন্টে সংযুক্তির জন্য আধার কার্ডের নম্বর এবং অন্য তথ্য চেয়ে শৈলেন্দ্রনাথবাবুর মোবাইল ফোনে এসএমস করা হয়েছে। কিন্তু শৈলেন্দ্রনাথবাবু করেননি। ফলে এটিএম কার্ডের নম্বর না জানালে অ্যাকাউন্ট এবং এটিএম কার্ড ‘ব্লক’ হয়ে যাবে।

লোকটির কথা বিশ্বাস করে শৈলেন্দ্রনাথবাবু তাঁর দু’টি এটিএম কার্ডের যাবতীয় তথ্য জানিয়ে দেন। মোবাইলে এসএমএস মারফত পাঠানো ‘ওটিপি’ (ওয়ান টাইম পাসওয়ার্ড) পর্যন্ত বলে দেন। পরে বুঝতে পারেন, অ্যাকাউন্ট থেকে পেটিএম মারফত ৩৪ হাজার টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে। ভুল বুঝতে পেরে তিনি ব্যাঙ্ক অ্যকাউন্ট এবং এটিএম কার্ড বন্ধ করে দেন। ভদ্রেশ্বর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগের ভিত্তিতে নির্দিষ্ট ধারায় মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।

চন্দননগর কমিশনারেটের এক অফিসারের বক্তব্য, এমন ঘটনা আকছার ঘটছে। প্রায় সব ক্ষেত্রেই ঝাড়খন্ড থেকে ‘অপারেশন’ চালানো হয়েছে। কয়েক মাস আগে এ ভাবে জালিয়াতি করে টাকা হাতানোর অভিযোগে এক যুবককে ঝাড়খণ্ড থেকে গ্রেফতার করে বিধাননগরের সাইবার ক্রাইম থানা। ওই অফিসার বলেন, ‘‘এত প্রচারের পরেও শিক্ষিত লোকজ‌ন একটা ফোনেই বিব্রত হয়ে গোপনীয় তথ্য দিয়ে ফে‌লছেন। ব্যাঙ্কে বিষয়টি যাচাই করলেই যে সমস্যা মিটে যাবে, সেটুকু তাঁদের মাথায় থাকছে না। তাতেই বিপত্তি।’’

কিছু দিন আগে প্যারীমোহন কলেজের এক কর্মী বা শ্রীরামপুরের মাহেশ কলোনির গৃহবধূর সঙ্গেও জালিয়াতি ঘটে। তাঁরা অভিযোগ করলেও ঘটনার কিনারা হয়নি। পুলিশের একটি সূত্রের বক্তব্য, ‘সাইবার ক্রাইম’য়ের তদন্তে নেমে নানা প্রতিকূলতায় পড়তে হয় পুলিশকে। টাকা উদ্ধার করা দুষ্কর হয়। সম্প্রতি হুগলিতে কমিশনারেট হয়েছে। তবে সাইবার থানা এখনও হয়নি। ফ‌লে রোজকার আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি, তদন্ত বা অন্য কাজ সামলেই সাইবার অপরাধ সংক্রান্ত মামলার তদন্ত করতে হয়। উপযুক্ত প্রশিক্ষণ, পরিকাঠামোর অভাবে তদন্ত ধামাচাপা পড়ে যায়। তবে মানুষের সচেতনতাই এই সমস্যা মেটাতে পারে, বলছে পুলিশ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE