Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪

দেড় মাস নিখোঁজ মেয়ে, পুলিশকে দুষলেন বাবা-মা

ভোরবেলা স্বামী-স্ত্রী ঘুম থেকে উঠে দেখেন ঘরে মেয়ে নেই। দরজা খোলা। ভেবেছিলেন বোধহয় শৌচাগারে গিয়েছে। পরে বুঝতে পারেন মেয়ে নিখোঁজ হয়েছে। বছর ষোলোর মেয়ের খোঁজে বাবা-মা বেরিয়ে পড়েন এলাকায়।

মেয়ের ছবি নিয়ে এসপি-র কাছে বাবা-মা। ছবি: তাপস ঘোষ।

মেয়ের ছবি নিয়ে এসপি-র কাছে বাবা-মা। ছবি: তাপস ঘোষ।

নিজস্ব সংবাদদাতা
ভদ্রেশ্বর শেষ আপডেট: ০৮ জুলাই ২০১৫ ০১:৩০
Share: Save:

ভোরবেলা স্বামী-স্ত্রী ঘুম থেকে উঠে দেখেন ঘরে মেয়ে নেই। দরজা খোলা। ভেবেছিলেন বোধহয় শৌচাগারে গিয়েছে। পরে বুঝতে পারেন মেয়ে নিখোঁজ হয়েছে। বছর ষোলোর মেয়ের খোঁজে বাবা-মা বেরিয়ে পড়েন এলাকায়। খোঁজ নেন আত্মীয়স্বজন ও মেয়ের বন্ধুদের বাড়িতেও। কোথাও না পেয়ে শেষ পর্যন্ত পুলিশে অভিযোগ দায়ের করেন। কিন্তু তাঁদের অভিযোগ, এক মাস কেটে গেলেও পুলিশ তাঁদের মেয়েকে খুঁজে দেওয়ার ব্যাপারে একেবারেই তৎপর নয়। বাধ্য হয়ে পুলিশ সুপারের দ্বারস্থ হয়েছেন তাঁরা।

কিশোরীর পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, নিখোঁজের ঘটনাটি ঘটে গত ২৯ মে সকালে ভদ্রেশ্বরের অ্যাঙ্গাস খাঁ পুকুর এলাকায়। সারাদিন খুঁজেও মেয়েকে না পেয়ে বাবা-মা পরদিন ৩০ মে অ্যাঙ্গাস পুলিশ ফাঁড়িতে নিখোঁজ সংক্রান্ত অভিযোগ দায়ের করেন। কিশোরীর পরিবারের অভিযোগ, উমেশ সরোজ নামে স্থানীয় এক যুবক বেশ কিছুদিন ধরে কিশোরীকে স্কুলে যাওয়ার সময় নানাভাবে উত্যক্ত করত। মেয়ে তাঁদের সে কথা জানিয়েওছিল। কিন্তু বড় কোনও বিপদের আশঙ্কায় তাঁরা কাউকে কিছু জানাতে ভয় পেয়েছিলেন। বদলে মেয়েকে সাবধানে চলাফেরা করতে বলেছিলেন। কিন্তু এক মাস পরেও মেয়ের কোনও খোঁজ না পেয়ে তাঁরা উমেশের সঙ্গে যোগায়োগ করেন। কিন্তু উমেশ বলে যে সে কিছু জানে না। নিরুপায় হয়ে তাঁরা এরপর উমেশের বিরুদ্ধে ৩রা জুন ভদ্রেশ্বর থানায় মেয়েকে অপহরণের লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগের ভিত্তিতে ভদ্রেশ্বর থানার পুলিশ উমেশকে জিজ্ঞাসাবদের জন্য আটক করে। কিন্তু তার কাছ থেকে মেয়েটির কোনও খোঁজ না মেলায় তাকে ছেড়ে দেয়।

কিশোরীর বাবার অভিযোগ, এরপর থেকেই উমেশ ফোনে তাঁদের হুমকি দেওয়া শুরু করে। নিখোঁজ হওয়ার কয়েক দিন আগে কিশোরী একটি ফোন থেকে তার জামাইবাবু নজরুল হককে ফোন করেছিল। তিনি সেই ফোন নম্বরে ফোন করলে অপরদিক থেকে জানানো হয় ‘ফোন নম্বর কোথা থেকে পেয়েছেন’। এরপরই ফোনের সুইচ বন্ধ করে দেওয়া হয়। তিনি সেই নম্বর পুলিশকে জানান। তদন্তে জানা যায় ফোন নম্বরটি ভিন রাজ্যের। কিন্তু তারপর প্রায় দেড় মাস কাটতে চললেও মেয়ের খোঁজ করার বিষয়ে পুলিশ আর কোনও উৎসাহ দেখাচ্ছে না। স্থানীয় পুলিশের নিষ্ক্রিয়তার বিরুদ্ধে ওই পরিবার মঙ্গলবার হুগলির জেলা পুলিশ সুপার প্রবীণ ত্রিপাঠীর সঙ্গে দেখা করেন।

যদিও পুলিশের নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন জেলা পুলিশর এক কর্তা। তিনি জানান, অপহরণের মামলা শুরু হয়েছে। তদন্তও চলছে। সূত্রও মিলছে। মেয়েটির নিরাপত্তার স্বার্থেই সব প্রকাশ করা যাচ্ছে না। তবে শীঘ্রই মেয়েটিকে উদ্ধারের চেষ্টা হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

police girl hooghly southbengal
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE