চিকিৎসক রেবতীমোহন ঘোষের অপমৃত্যুতে আরও ছন্নছাড়া অবস্থা হল রিষড়া সেবাসদন হাসপাতালের। দীর্ঘদিন ধরে আইসিসিইউ বিভাগ কার্যত আগলে রেখেছিলেন ওই প্রবীণ চিকিৎসক। ট্রেনের ধাক্কায় তাঁর মৃত্যুর জেরে বৃহস্পতিবার ওই ওয়ার্ড থেকে রোগীদের ছুটি দিয়ে দেওয়া হয়। অন্তর্বিভাগে রোগী ভর্তি নিয়েও অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে। তবে, বহির্বিভাগ এবং চোখের অস্ত্রোপচার চালু থাকছে।
হাসপাতালের তদারকি কমিটির সভাপতি তথা শ্রীরামপুরের মহকুমাশাসক রজত নন্দা বলেন, ‘‘হাসপাতালের পরিস্থিতি নিয়ে কিছু দিন আগেই স্বাস্থ্য ভবনে রিপোর্ট পাঠানো হয়েছিল। বুধবার ফের একটি রিপোর্ট পাঠিয়েছি। আশা করছি শীঘ্রই জবাব আসবে। সরকার অডিটের ব্যবস্থাও করবে। দু’এক দিনের মধ্যেই গোটা পরিস্থিতি বোঝা যাবে বলে আশা করছি। সেবাসদনের অন্য চিকিৎসকদের সঙ্গে কথা বলব।’’
রেবতীবাবু কয়েক দশক ধরে এই হাসপাতালের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। বুধবার সন্ধ্যায় হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে তিনি ট্রেনের সামনে ঝাঁপ দিয়ে আত্মঘাতী হন বলে প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি। এ দিন শ্রীরামপুর ওয়ালশ হাসপাতালে ময়না-তদন্তের পরে রেবতীবাবুর দেহ নিয়ে যাওয়া হয় সেবাসদনে। কর্মীরা জানান, হাসপাতালটি যাতে ঘুরে দাঁড়াতে পারে সে জন্য রেবতীবাবু রাজ্য সরকার এবং জনগণের কাছে আবেদন জানিয়েছিলেন। হাসপাতালের এক নার্স বলেন, ‘‘ডাক্তারবাবু আবেদনপত্রটি আমাদের হাতে দিয়ে বলেছিলেন, সেটি যেন যথাস্থানে পৌঁছে দেওয়া হয়।’’ হাসপাতালের মর্গের সামনে দাঁড়িয়ে রেবতীবাবুর ছেলে গৌতম ঘোষ বলেন, ‘‘বাবা চিকিৎসায় নিবেদিত প্রাণ ছিলেন। সেবাসদনের কী ভাবে ভাল হবে, সব সময় সেই চিন্তা করতেন।’’
কয়েক বছর ধরেই হাসপাতালটি ধুঁকছে। হাসপাতালটিকে পুনরুজ্জীবিত করার দাবিতে গত সোমবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করেন সেখানকার কর্মীরা। মুখ্যমন্ত্রী তাঁদের আশ্বস্ত করেন। স্বাস্থ্য ভবন নড়েচড়ে বসে। হাসপাতালের কর্মীদের অভিযোগ, সেখানকার হিসাবরক্ষক দীপক ঘোষ নানা হিসেব গরমিল করেছেন। বৃহস্পতিবার তাঁরা থানাতেও ওই অভিযোগ জানান। দীপকবাবু অভিযোগ মানেননি। পুলিশ জানিয়েছে, অভিযোগের তদন্ত করে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy