Advertisement
E-Paper

ক্ষোভ অ্যাসিড আক্রান্তের পরিবারের

অভিযোগ দায়েরের পর কেটে গিয়েছে পুরো একটা দিন। কিন্তু অভিযুক্ত ৬ জনের একজনকেও পুলিশ গ্রেফতার করতে না পারায় ক্ষোভ দেখা দিয়েছে উলুবেড়িয়ায় অ্যাসিড আক্রান্ত বধূর পরিবারে।

নুরুল আবসার

শেষ আপডেট: ১৫ নভেম্বর ২০১৬ ০১:০৬
আক্রান্তের বাড়িতে ‘সেভ ডেমোক্রেসি’র প্রতিনিধিরা।—সুব্রত জানা।

আক্রান্তের বাড়িতে ‘সেভ ডেমোক্রেসি’র প্রতিনিধিরা।—সুব্রত জানা।

অভিযোগ দায়েরের পর কেটে গিয়েছে পুরো একটা দিন। কিন্তু অভিযুক্ত ৬ জনের একজনকেও পুলিশ গ্রেফতার করতে না পারায় ক্ষোভ দেখা দিয়েছে উলুবেড়িয়ায় অ্যাসিড আক্রান্ত বধূর পরিবারে।

যদিও পুলিশের দাবি, আক্রান্তের পরিবারের তরফে অভিযোগ দায়ের হওয়ার পর থেকেই আরিফার স্বামী-সহ শ্বশুরবাড়ির লোকজন পালিয়ে গিয়েছে। হাওড়া গ্রামীণ জেলা পুলিশের এক কর্তা জানান, অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি চালানো হচ্ছে। কাউকে ছাড়া হবে না।

অ্যাসিড হামলায় জখম গৃহবধূ আরিফা বেগমের সঙ্গে দেখা করতে সোমবার উলুবেড়িয়ার পালোড়া গ্রামে তাঁর বাপের বাড়িতে আসেন ‘সেভ ডেমোক্রেসি’-র সদস্যরা। তাঁদের কাছেও পুলিশের ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন আরিফার পরিবার।

গত ১১ নভেম্বর আরিফাকে অ্যাসিড খাইয়ে পুড়িয়ে মারার চেষ্টার অভিযোগ ওঠে তাঁর শ্বশুরবাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে। তিনদিন কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকার পরে রবিবার সকালে তিনি বাপের বাড়িতে ফেরেন।

সেভ ডেমোক্রেসির ছয় প্রতিনিধি দলের নেতৃত্বে ছিলেন সংগঠনের রাজ্য সম্পাদক চঞ্চল চক্রবর্তী। তিনি বলেন, ‘‘আমরা আক্রান্ত মহিলার সঙ্গে কথা বলেছি। চিকিৎসার প্রয়োজনীয় কাগজপত্র দেখেছি। এই ক্ষত অ্যাসিডের বলেই চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন।’’

উল্লেখ্য, রবিবার রাতেই আরিফার বাপের বাড়ির পক্ষ থেকে আরিফার স্বামী সেখ নজরুল, শ্বশুর সেখ গুলফান, শাশুড়ি জুবেদা বেগম, ভাসুর সেখ রেজাউল, দুই ননদ মারুফা খাতুন এবং সরিফা খাতুনের বিরুদ্ধে উলুবেড়িয়া থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়। পুলিশ ইতিমধ্যেই অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আরিফাকে খুনের চেষ্টা, অ্যাসিড মারা এবং পণের দাবিতে তাঁর উপর অত্যাচারের মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে। চঞ্চলবাবু বলেন, ‘‘অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে পুলিশ যে সব ধারা দিয়েছে তা সঠিক বলে আমরা মনে করছি। তবে পুলিশ এখনও অভিযুক্তদের ধরতে পারেনি। আগামী দু’দিনের মধ্যে অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা না হলে আমরা উচ্চ পদস্থ কর্তাদের কাছে দরবার করব।’’

তিনি জানান, প্রতিটি অ্যাসিড আক্রান্তকে ৩ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। সেই টাকা যাতে আরিফা পান সে জন্য রাজ্য সরকারের কাছে তাঁরা তদ্বির করবেন।

২০১২ সালে আরিফার বিয়ে হয়েছিল উলুবেড়িয়ার বাজারপাড়ার বাসিন্দা নজরুলের সঙ্গে। বিয়ের পর থেকেই তাঁর উপরে পণের দাবিতে অত্যাচার শুরু হয় বলে আরিফার অভিযোগ। তিন মাস আগে তাঁর বাবা নজরুলের হাতে এক লক্ষ টাকা তুলে দেন। তারপরেও সমস্যা মেটেনি বলে আরিফার বাবা আলতাফ মোল্লা জানান।

আরিফার অভিযোগ, ‘‘গত শুক্রবার, ১১ নভেম্বর সকালে স্বামী, শ্বশুর-শাশুড়ি, ভাসুর এবং দুই ননদ মিলে একটি বোতলে অ্যাসিড এনে আমাকে জোর করে খাওয়াতে যায়। বলে তোকে অ্যাসিড খাইয়েই মারব। আমি বাধা দিলে অ্যাসিডে আমার দুটো হাতই পুড়ে যায়। জ্ঞান‌ হারাই আমি। পরে দেখি হাসপাতালে শুয়ে আছি।’’

শ্বশুরবাড়ির লোকেরা অবশ্য দাবি করেছে, তাদের বিরুদ্ধে অ্যাসিড ঢেলে আরিফাকে পুড়িয়ে মারার অভিযোগ মিথ্যা। সংসারে অশান্তির জেরে জেরে আরিফা নিজেই নিজের হাতে অ্যাসিড ঢেলে দিয়েছিল।

Untraced Acid Accused
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy