কেব্ল সংস্থার অফিস (বাঁদিকে)। শুক্রবারের হামলার ছবি ধরা পড়েছে কেব্ল অপারেটর অফিসের সিসি ক্যামেরায় (ডানদিকে)। নিজস্ব চিত্র
ঘরে আলো রয়েছে। টিভিও চলছে। কিন্তু মাঝপথে বিশ্বকাপের খেলা বন্ধ!
শুক্রবার রাতে টিভিতে সার্বিয়া-সুইজারল্যান্ড ম্যাচ পুরো দেখতে না-পেয়ে বেজায় চটেছিলেন চুঁচুড়ার ধরমপুর, পেয়ারাবাগান, পিপুলপাতি, ইমামবাজার, ব্যান্ডেল-সহ বিস্তীর্ণ এলাকার বহু মানুষ। ওই রাতেই তাঁরা হাজির হয়েছিলেন চুঁচুড়ার খাদিনা মোড়ে সংশ্লিষ্ট কেব্ল সংস্থার অফিসে। তাঁরা জানতে পারেন, ওই সংস্থার সঙ্গে একটি বহুজাতিক টিভি নেটওয়ার্ক সংস্থার কাজিয়াতেই তাঁদের ভুগতে হয়েছে। ওই রাতে আর খেলা দেখা হয়নি তাঁদের। শনি-রবি খেলা দেখতে পারলেও ফের যে একই পরিস্থিতি হতে পারে, এ আশঙ্কাও তাঁদের রয়েছে। কারণ, দুই সংস্থার কাজিয়া থানা-পুলিশ পর্যন্ত গড়িয়েছে।
ওই রাতে কেব্ল সংস্থার অফিসে হামলা এবং কর্মীদের মারধরের অভিযোগ ওঠে ওই বহুজাতিক টিভি নেটওয়ার্ক সংস্থার লোকজনের বিরুদ্ধে। বহুজাতিক টিভি নেটওয়ার্ক সংস্থা আবার কেব্ল সংস্থার বিরুদ্ধে বকেয়া শোধ না-করে চুরি করে তাদের অনুষ্ঠান সম্প্রচারের পাল্টা অভিযোগ দায়ের করেছে থানায়। চন্দননগর পুলিশ কমিশনারেটের এক কর্তা জানান, দু’পক্ষের অভিযোগই খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
ওই কেব্ল সংস্থা বিভিন্ন বহুজাতিক টিভি নেটওয়ার্কের সঙ্গে চুক্তি করে খেলা থেকে শুরু করে নানা অনুষ্ঠান সম্প্রচার করে। তার মধ্যে একটি বহুজাতিকের (এই সংস্থা অবশ্য খেলা দেখাচ্ছে না) সঙ্গে চুক্তি নিয়েই গোলমালের সূত্রপাত। কেব্ল সংস্থার অভিযোগ, ওই বহুজাতিক চুক্তির পরেও বাড়তি টাকা জমার দাবি তোলে। রাজি না-হওয়ায় লাইন কেটে দেওয়ার হুমকি দেওয়া হয়। ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত চুক্তি থাকা সত্ত্বেও তিন মাস আগে ওই সংস্থা তাদের চ্যানেল বন্ধ করে দেয়।
তার পর থেকে মাঝেমধ্যেই চুরি করে তাদের চ্যানেলের অনুষ্ঠান সম্প্রচার করা হচ্ছে, এই অভিযোগে কেব্ল সংস্থার অফিসে হানা দিতে থাকে বহুজাতিকের লোকেরা। শুক্রবার বিশ্বকাপের খেলা চলাকালীন তারা সংস্থার অফিসে হামলা চালায় এবং কর্মীদের মারধর করে। এর জেরেই ওই রাতে সম্প্রচার বন্ধ হয়ে যায়।
হামলার প্রতিবাদে রাতেই বহুজাতিকের কর্তাদের ঘিরে বিক্ষোভ শুরু করেন গ্রাহক এবং কেব্ল অপারেটররা। পুলিশ বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌছে ওই কর্তাদের উদ্ধার করে নিয়ে যায়। মারধরে আহত কেব্ল সংস্থার তিন কর্মীকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। রাতেইকেব্ল সংস্থা সম্প্রচার শুরু করে। তবে, গ্রাহকদের আর খেলা দেখা হয়নি।
কেব্ল সংস্থার পরিচালন কমিটির সদস্য বিনয় হালদারের দাবি, ‘‘ওরা চুক্তির বাইরে গিয়ে বাড়তি টাকা চাইছে। আমরা দেব কেন? ওরা লাইন বন্ধ করে দেওয়ায় আমরা ওদের চ্যানেল দেখাচ্ছি না। তা সত্ত্বেও আমাদের বিরুদ্ধে চুরির মিথ্যা অভিযোগ তুলে হামলা চালাল।’’
হামলার অভিযোগ নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি ওই বহুজাতিকের কর্তা সতীন্দ্র সিংহ। তাঁর পাল্টা অভিযোগ, ‘‘নির্দিষ্ট টাকা জমা না-দেওয়ায় কেব্ল সংস্থার লাইন বন্ধ করে দেওয়া হয়। তা সত্ত্বেও ওরা গোপনে চুরি করে আমাদের অনুষ্ঠান সম্প্রচার করছিল।’’
দুই সংস্থার এই কাজিয়ার কথা জানতে পেরে অনেকেই সংশয়ে ভুগছেন। ধরমপুরের এক বাসিন্দা বলেন, ‘‘আমরা টাকা দিয়েও খেলা দেখতে পাব না কেন? গোলমাল তো আবার হতে পারে!’’
পিপুলপাতির এক গ্রাহকের ক্ষোভ, ‘‘সে দিন টিভিতে খেলা বন্ধ হয়ে যেতে মাথা গরম হয়ে গিয়েছিল। পরে ঘটনার কথা জানতে পারি। এ সব মানা যায় না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy