প্রতীকী ছবি।
অনিশ্চিত সাহাগঞ্জের ডানলপ কারখানার ভবিষ্যৎ। ফলে, ভবিষ্যৎ নিয়ে আতঙ্কে ভুগছে কারখানার স্কুলের বারোশোরও বেশি ছাত্রছাত্রীও।
রাজ্য সরকার অধিগ্রহণের কথা ঘোষণা করলেও কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে ওই কারখানা দু’বছর ধরে জাতীয় কোম্পানি আইন ট্রাইবুনালে। মূলত কর্মীদের ছেলেমেয়েদের পড়াশোনার জন্য কারখানার ভিতরেই ইংরেজি মাধ্যম স্কুলটি তৈরি হয় ১৯৬৬ সালে। এখনও স্কুলের আইসিএসই বোর্ডের স্বীকৃতি মেলেনি। ৩৬ জন শিক্ষক ও কর্মী ওই স্কুলের সঙ্গে যুক্ত। তাঁদের অভিযোগ, বেতন বাড়ছে না এবং ‘প্রভিডেন্ড ফান্ড’ (পিএফ)-এ টাকা জমা পড়ছে না। ফলে, তাঁদের ভবিষ্যৎও অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
অভিভাবকেরা মনে করছেন, এই ডামাডোলে তাঁদের সন্তানদের পড়াশোনায় ক্ষতি হচ্ছে। সমস্যার কথা তাঁরা জেলা প্রশাসনকে জানিয়েছেন। আদালতেরও দ্বারস্থ হয়েছেন। এ বিষয়ে স্কুলের প্রশাসনিক ম্যানেজার বিশ্বরূপ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। হোয়াটসঅ্যাপেরও উত্তর দেননি। জেলা প্রশাসনের এক কর্তা জানিয়েছেন, স্কুলটিকে চালু রাখার জন্য কারখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে।
প্রশাসন সূত্রের খবর, ওই স্কুলে দু’ধরনের শিক্ষক-শিক্ষিকা আছেন। স্থায়ী এবং চুক্তিভিত্তিক। স্থায়ী শিক্ষিকদের অভিযোগ, ২০১৪ সাল থেকে তাঁদের বেতন বাড়েনি। পিএফ-এর জন্য টাকা কেটে নেওয়া হলেও তা জমা দেওয়া হয়নি। চুক্তিবদ্ধ শিক্ষকদের আবার অনেকের পিএফ অ্যাকাউন্টই খোলা হয়নি বলে অভিযোগ। এই সব ‘অনিয়ম’-এর প্রতিবাদেই অভিভাবকদের সংগঠনের হয়ে চন্দননগরের ‘আইনি সহায়তা কেন্দ্র’ সম্প্রতি কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করে। অনিয়ম নিয়ে অভিভাবকেরা মুখ খোলায় ইতিমধ্যে পাঁচ ছাত্রছাত্রীকে ‘টিসি’ দিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ।
অভিভাবক সংগঠনের এক পদাধিকারী বলেন,‘‘স্কুলের নানা অনিয়মের বিরুদ্ধে মুখ খুলেছিলাম। কিন্তু আমার বাচ্চা কী দোষ করল? স্কুল থেকে ওকে সরিয়ে দেওয়া হল।’’ ‘আইনি সহায়তা কেন্দ্র’-এর পক্ষে বিশ্বজিৎ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘শিক্ষার অধিকার আমাদের দিয়েছে ভারতীয় সংবিধান। এই ভাবে বাচ্চাদের স্কুল থেকে বের করে দেওয়া সেই অধিকারেই হস্তক্ষেপের নামান্তর। ডানলপ কর্তৃপক্ষ শিক্ষিকদের পিএফ নিয়েও অনিয়ম করেছেন। বাচ্চাদের বিষয়টি নিয়ে আমরা ফের আদালতে জানাব।’’
বিশ্বজিৎবাবুরা শিক্ষক-শিক্ষিকাদের ‘পিএফ বঞ্চনা’ নিয়ে প্রভিডেন্ট ফান্ড দফতরে অভিযোগও দায়ের করেন। কলকাতায় ওই দফতরের অ্যাসিট্যান্ট কমিশনার রাহুল বর্মা ওই শিক্ষক ও কর্মচারীদের কেটে নেওয়া সমস্ত টাকা ফেরত দিতে নির্দেশ দিয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছেন। কিন্তু সেই প্রক্রিয়া এখনও অসম্পূর্ণ বলে বলে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের অভিযোগ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy