Advertisement
E-Paper

গোষ্ঠী গড়া চলছেই, প্রশ্ন স্বনির্ভরতা নিয়ে

গরিব মানুষের অর্থনৈতিক উন্নতির ক্ষেত্রে বিশেষ জোর দিতে কেন্দ্রীয় সরকারের ‘স্বর্ণজয়ন্তী গ্রাম স্বরোজগার প্রকল্প’-এর আওতায় স্বনির্ভর দলের গঠন শুরু হয় ১৯৯৯ সালে।

পীযূষ নন্দী

শেষ আপডেট: ০২ জুলাই ২০১৮ ০৬:৪০
প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

জেলাজুড়ে স্বনির্ভর গোষ্ঠী গড়া হয়েছে প্রচুর। প্রতিবছর জেলা প্রশাসনের দেওয়া লক্ষ্যমাত্রা ছুঁতে আরও গোষ্ঠী গড়তে হবে— আর তা নিয়ে পঞ্চায়েতগুলোর মধ্যে প্রতিযোগিতাও রয়েছে।
কিন্তু প্রশাসনের একাংশই অভিযোগ করছে, ঘটা করে গোষ্ঠী তৈরি হলেও ৯০ শতাংশ স্বনির্ভর গোষ্ঠীই দুর্বল।

গরিব মানুষের অর্থনৈতিক উন্নতির ক্ষেত্রে বিশেষ জোর দিতে কেন্দ্রীয় সরকারের ‘স্বর্ণজয়ন্তী গ্রাম স্বরোজগার প্রকল্প’-এর আওতায় স্বনির্ভর দলের গঠন শুরু হয় ১৯৯৯ সালে। গোষ্ঠী সদস্যদের সক্ষমতা বাড়ানো এবং ঋণ ও অনুদানের সুযোগ পৌঁছে দেওয়া ছিল অন্যতম সে প্রকল্পের লক্ষ্য।

অভিযোগ, প্রকল্পের শুরুর দিকে গোষ্ঠী গড়া বা তার আওতায় বেশি সংখ্যক দরিদ্র মানুষকে আনার ক্ষেত্রে সাড়া মিললেও তাঁদের আয় বাড়ানোর ক্ষেত্রে বিশেষ সাফল্য মেলেনি। পরে প্রকল্পটির প্রতিবন্ধকতা খতিয়ে দেখে ত্রুটি বিচ্যুতি শুধরে নতুন প্রকল্প ‘জাতীয় গ্রামীণ জীবিকা মিশন’-এর আনুষ্ঠানিক সূচনা হয় ২০১২ সালের ১ এপ্রিল। এ রাজ্যে তার নামকরণ হয়েছে ‘আনন্দধারা’। তাতে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যদের কাজের ক্ষেত্র বেড়েছে বটে। কিন্তু অর্থনৈতিক অবস্থার বিশেষ পরিবর্তন হয়নি বলেই অভিযোগ।

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, হুগলির ১৮টি ব্লকের ২০৭টি পঞ্চায়েত এলাকায় গ্রামীণ জীবিকা মিশন বা আনন্দধারা প্রকল্পের অধীন প্রায় ২১ হাজার গোষ্ঠী রয়েছে। গোষ্ঠী পিছু ১০-১৫ জন মহিলা সদস্য। সকলেই দুঃস্থ। জেলায় প্রতি বছর গড়ে ৪-৫ হাজার গোষ্ঠী গঠনের লক্ষ্যমাত্রা থাকে। তা পূরণও হয়ে যায়। কিন্তু অর্থনৈতিক লাভ হয় না।

কেন এই দশা?

গোঘাটের কামারপুকুর আশা সঙ্ঘের অধীন স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলির সদস্যদের অনেকেই বললেন, “আমরা ২০০৯ সাল থেকে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্য। কিন্তু আজও স্বনির্ভর হতে পারিনি।’’
তাঁদের অভিযোগ, যাবতীয় সরকারি সুযোগ সুবিধা লুটে নিচ্ছে শাসক ঘনিষ্ঠ দলগুলি। প্রশাসনেরও নজর নেই।’’ খানাকুলের ঘোষপুর পঞ্চায়েত এলাকার স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যরা জানিয়েছেন, রোজগারের লোভ দেখিয়ে শুধুই দল গড়া হচ্ছে। বেশির ভাগ দলই সক্রিয় নয়। দলের এক সদস্য বলেন, ‘‘শুধু মিড-ডে মিলের রান্না করে কি আর স্বনির্ভর হওয়া যায়!”

গোষ্ঠীগুলির মধ্যে কোন্দলও রয়েছে বলে জানা গিয়েছে। বেশিরভাগ দলেই দলনেত্রী নির্বাচন ক্ষোভ রয়েছে। অভিযোগ, শাসক দলের কোনও প্রভাবশালী ব্যক্তির স্ত্রীকেই দলনেত্রী করা হচ্ছে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে। গোষ্ঠীগুলির মধ্যে স্বচ্ছতার অভাব। এমনকি দলনেত্রী সিদ্ধান্তও সব সদস্য সময় মতো জানতে পারেন না বলে অভিযোগ।

জাতীয় গ্রামীণ জীবিকা মিশন বা আনন্দধারা প্রকল্পের জেলা প্রকল্প আধিকারিক দেবাশিস বৈদ্য কিন্তু দায় চাপিয়ে দিয়েছেন দলগুলির ঘাড়েই। তিনি বলেন, “স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলিকে যে ভাবে প্রশিক্ষিত করা হয়েছে বা সরকারি বিভিন্ন প্রকল্পে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে, তাতে সদস্যরা চাইলে অনেক ভাল কিছু করতে পারেন। নিজেদের ইচ্ছেটা তো থাকতে হবে! অনেক গোষ্ঠীই উন্নতি করতে পেরেছে।”

Self Help Group TMC স্বনির্ভর গোষ্ঠী
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy