Advertisement
১৯ মে ২০২৪

অদ্ভুত আঁধার এক

গঙ্গার পশ্চিম পাড়ে ছোট্ট আবাসিক শহর এই চন্দননগর। কিন্তু তার খ্যাতির ব্যাপ্তি প্রসারিত বহুদূর। শান্তিপ্রিয় জায়গা বলে চিরকালই সুনাম রয়েছে এই শহরের। চন্দননগর চিরকালই বহু মানুষকে আশ্রয় দিয়ে এসেছে স্বাধীনতার আগে এবং পরে।

বিশ্বজিৎ মুখোপাধ্যায় (সমাজকর্মী, চন্দননগরের বাসিন্দা)

বিশ্বজিৎ মুখোপাধ্যায় (সমাজকর্মী, চন্দননগরের বাসিন্দা)

বিশ্বজিৎ মুখোপাধ্যায় (সমাজকর্মী, চন্দননগরের বাসিন্দা)
শেষ আপডেট: ০১ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০০:৫৪
Share: Save:

গঙ্গার পশ্চিম পাড়ে ছোট্ট আবাসিক শহর এই চন্দননগর। কিন্তু তার খ্যাতির ব্যাপ্তি প্রসারিত বহুদূর। শান্তিপ্রিয় জায়গা বলে চিরকালই সুনাম রয়েছে এই শহরের। চন্দননগর চিরকালই বহু মানুষকে আশ্রয় দিয়ে এসেছে স্বাধীনতার আগে এবং পরে। ফরাসি উপনিবেশ চন্দননগরে বহু গুণী-পণ্ডিত মানুষ সময় কাটাতে আসতেন। শহরকে ভালবেসে এখানে বসবাসও গড়ে তোলেন অনেকে। শহরের অমলিন, স্নিগ্ধতাকে উপভোগ করতেন তাঁরা।

কিন্তু সাম্প্রতিক কালে বিশেষ করে কয়েক বছর ধরে কেমন যেন অশান্ত হয়ে উঠেছে একদা শান্ত এই শহর। একের পর এক দুষ্কৃতী তাণ্ডব, কখনও তার জেরে মৃত্যু এ শহরের মানুষকে আতঙ্কিত করেছে। শান্তিপ্রিয় মানুষ প্রশাসনের কাছে ছুটেছেন। কিন্তু অবস্থার পরিবর্তন অধরাই থেকে গিয়েছে। উল্টে আরও বেড়েছে দুষ্কৃতী দৌরাত্ম্য, খুন।

আজ সরস্বতী পুজো। পুজোর জাঁকজমকের আয়োজনে রাস্তায় নেমে পড়েছে স্কুলপড়ুয়া থেকে বাড়ির কচিকাঁচারা। তারই মধ্যে যে ভাবে দিনের আলোয় জনবহুল এলাকায় দুষ্কৃতীদের গুলিতে খুন হলেন একজন তাতে আর পাঁচজনের মতো আতঙ্ক আমারও। গত কয়েক বছরে শহরের বুকে এমনই হত্যালীলা ঘটে চলেছে, যা থেকে বাদ যায়নি চটকল কর্তা থেকে শ্রমিক, আলোকশিল্পী, সমাজকর্মীও। সব চন্দননগরবাসীর মতো এই হত্যালীলায় আতঙ্কিত আমিও। যে ভাবে অধিকাংশ ক্ষেত্রে গুলি করে খুনের ঘটনা ঘটছে তাতে এটা পরিষ্কার, বেআইনি আগ্নেয়াস্ত্র এখন জলভাত চন্দননগরে। সরস্বতী পুজোর আগে হাতের কলম ফেলে দিয়ে অন্য অস্ত্র (বন্দুক) উঁচিয়ে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে দুষ্কৃতীরা। কখনও সমাজবিরোধীদের নিজেদের গণ্ডগোলে কেউ খুন হচ্ছেন। আবার কখনও বলি হচ্ছেন সাধারণ নাগরিক। এই পরিস্থিতিতে অসহায়, আতঙ্কিত মানুষের কাছে প্রশাসনের কড়া পদক্ষেপই ভরসা। অথচ দেখা যাচ্ছে তাদের ভূমিকা নির্বিকার, নির্লিপ্ত।

অশান্ত এই পরিবেশে শহরের ঐতিহাসিক, সাংস্কৃতিক ভাবমূর্তি প্রায় হারাতে বসেছে। শহরের উৎসবের আনন্দকে আতঙ্কে পরিণত করছে। স্বাধীনতাকামী যে বিপ্লবীরা এই শহরে এক সময় আস্তানা গেড়ে শহরের ঐতিহ্য বাড়িয়ে ছিলেন এখন সেখানে দুষ্কৃতীদের দাপাদাপি।

তবে আমি আশাবাদী। নিরীহ, শান্তিপ্রিয় এ শহরের মানুষ নিশ্চয়ই সাহস সঞ্চয় করে এই দুষ্কৃতী-তাণ্ডবের মোকাবিলায় রুখে দাঁড়াবেন। অবসান ঘটবে আতঙ্কের বাতাবরণের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Chandannagar
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE