Advertisement
E-Paper

নাম-বিভ্রাটে নাস্তানাবুদ বেলুড়ের আর এক স্কুল

গত বুধবার দ্বিতীয় শ্রেণির এক পড়ুয়ার শ্লীলতাহানির অভিযোগ উঠেছিল ‘বেলুড় গার্লস হাইস্কুল প্রাইমারি সেকশন’-এর এক অশিক্ষক কর্মীর বিরুদ্ধে। অভিযোগ, সেই দিন থেকেই জেরবার অবস্থা ‘বেলুড় গার্লস হাইস্কুল’-এর শিক্ষিকা থেকে অশিক্ষক কর্মীদের।

শান্তনু ঘোষ

শেষ আপডেট: ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০১:২৮
প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

একেই বলে নাম বিভ্রাট!

এক জনের নামের সঙ্গে অপর জনের নামের পার্থক্য মাত্র দু’টি শব্দের। আর তাতেই যত বিপত্তি। এক প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের তির পদে পদে খোঁচা দিচ্ছে অন্য প্রতিষ্ঠানকে। গত বুধবার দ্বিতীয় শ্রেণির এক পড়ুয়ার শ্লীলতাহানির অভিযোগ উঠেছিল ‘বেলুড় গার্লস হাইস্কুল প্রাইমারি সেকশন’-এর এক অশিক্ষক কর্মীর বিরুদ্ধে। অভিযোগ, সেই দিন থেকেই জেরবার অবস্থা ‘বেলুড় গার্লস হাইস্কুল’-এর শিক্ষিকা থেকে অশিক্ষক কর্মীদের। যদিও প্রাইমারি সেকশন-এর ওই স্কুলের ঘটনার সঙ্গে কোনও যোগাযোগই নেই প্রায় দু’শো মিটার দূরের ‘বেলুড় গার্লস হাইস্কুল’-এর।

বেলুড়ে জিটি রোডের উপরে রয়েছে পঞ্চম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত বেলুড় গার্লস হাইস্কুল। আর ওই স্কুলের পাশ দিয়ে যাওয়া গলি শিবচন্দ্র চ্যাটার্জি স্ট্রিটের ভিতরে রয়েছে প্রাক্ প্রাথমিক ও প্রথম থেকে চতুর্থ শ্রেণির বেলুড় গার্লস হাইস্কুল প্রাইমারি সেকশন। কিন্তু ওই ঘটনার পরে অনেক জায়গাতেই দোষীর শাস্তি চেয়ে যে পোস্টার লাগানো হয়েছে তাতে লেখা জিটি রোডের উপরে থাকা স্কুলের নাম।

ওই স্কুল সূত্রের খবর, ভাষা দিবসের দিনে ওই ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়ার পর থেকেই শুরু হয়েছে বিপত্তি। কখনও সংবাদমাধ্যম তো কখনও পুলিশ ‘ভুল’ করে ঢুকে পড়ছে স্কুল চত্বরে। আর প্রতি বারই বেলুড় গার্লস হাই স্কুল কর্তৃপক্ষকে হাতজোড় করে বলতে হয়েছে, ‘আপনারা ভুল করেছেন। ওটা পাশের স্কুল।’

শুধু তাই নয়। বন্ধুবান্ধব, আত্মীয়, পরিজন, প্রতিবেশী সকলেই ঘটনার পর থেকে ঘনঘন ফোন করেছেন জিটি রোডের উপরের ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা থেকে অন্যদের। প্রধান শিক্ষিকা চৈতালী বাগচী বলেন, ‘‘নাম বিভ্রাটে একেবারে প্রাণান্তকর অবস্থা হয়ে উঠেছে। যে স্কুলে স্বামী বিবেকানন্দ এসেছিলেন, তার নাম রাস্তার পোস্টারে দেখে খুব অপমানিত হচ্ছি।’’

বেলুড়ের জিটি রোডের উপর ওই স্কুলে ২ জন ক্লার্ক ও ৩ জন চতুর্থ শ্রেণির পুরুষ কর্মী রয়েছেন। প্রত্যেকেই এখন ছুটি নিয়ে কার্যত হাঁফ ছেড়ে বাঁচতে চাইছেন। তাঁদেরই এক জন প্রসূন সান্যাল বলেন, ‘‘ওই দিনের পর থেকে কাউকে বলতে পারছি না কোন স্কুলে চাকরি করি। আগে সম্মান, তার পরে তো সব। ঘটনার দিন কম করে হলেও ২৮টি ফোন এসেছিল।’’

প্রতিবেশী স্কুলের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের জেরে এখন পরিচিতদের বিভিন্ন প্রশ্নবাণে কার্যত জেরবার অবস্থা বলেই দাবি বেলুড় গার্লস হাইস্কুলের কর্মীদের।

এক অশিক্ষক কর্মী বলেন, ‘‘এত বছর ধরে এই স্কুলে চাকরি করছি। কোনও দিন কেউ কোনও অপবাদ দিতে পারেনি। আর এখন চলাফেরা করাই দায়।’’

চৈতালীদেবী জানান, স্কুল ছুটির পরে উঁচু শ্রেণির ছাত্রীদের নিরাপত্তার কারণেই মূল গেটে দাঁড়িয়ে থাকেন অশিক্ষক কর্মীরা। কিন্তু ২১ ফেব্রুয়ারির পর থেকে সেটাও সম্ভব হচ্ছে না। অগত্যা রাস্তায় এসে দাঁড়াতে হচ্ছে খোদ প্রধান শিক্ষিকাকে। তাঁর অভিযোগ, পথচারীরা আঙুল তুলে স্কুলের দিকে দেখাচ্ছেন। কেউ টিপ্পনি কাটছেন।

চৈতালীদেবী বলেন, ‘‘স্কুলের পরিচালন সমিতির সভাপতির সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। সিসি ক্যামেরা বসানোর জন্য টেন্ডার ডাকা হচ্ছে। বিষয়টি জেলা স্কুল পরিদর্শক ও পুলিশকে জানিয়েছি।’’

Belur Primary School Student Molestation বেলুড় গার্লস হাইস্কুল বেলুড় গার্লস হাইস্কুল প্রাইমারি সেকশন
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy