Advertisement
E-Paper

বাঁশবেড়িয়ার কিশোরী উদ্ধার বিহার থেকে

সাত মাস ধরে নিখোঁজ নাবালিকাকে বিহারের ছাপড়া জেলা থেকে উদ্ধার করল মগরা থানার পুলিশ। এই ঘটনায় একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।পুলিশ সূত্রের খবর, বাঁশবেড়িয়ার কলবাজার এলাকার বাসিন্দা বছর পনেরোর ওই নাবালিকা গত বছরের ২০ নভেম্বর রাতে কার্তিক পুজোর বিসর্জন দেখতে বেরিয়ে নিখোঁজ হয়।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৫ জুন ২০১৫ ০১:৫৯
ধৃত আধেশ।—নিজস্ব চিত্র।

ধৃত আধেশ।—নিজস্ব চিত্র।

সাত মাস ধরে নিখোঁজ নাবালিকাকে বিহারের ছাপড়া জেলা থেকে উদ্ধার করল মগরা থানার পুলিশ। এই ঘটনায় একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

পুলিশ সূত্রের খবর, বাঁশবেড়িয়ার কলবাজার এলাকার বাসিন্দা বছর পনেরোর ওই নাবালিকা গত বছরের ২০ নভেম্বর রাতে কার্তিক পুজোর বিসর্জন দেখতে বেরিয়ে নিখোঁজ হয়। অনেক খোঁজাখুজির পর কোনও হদিস না পেয়ে ২৩ নভেম্বর কিশোরীর কাকা মগরা থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করেন। তারপরেও কোনও খোঁজ না মেলায় অপহরণের মামলা শুরু করে পুলিশ।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, নাবালিকার মা মারা যাওয়ার পরে তার বাবা তাকে ছেড়ে অন্যত্র চলে যায়। এরপর সে ঠাকুমা, কাকাদের কাছেই মানুষ হতে থাকে। স্থানীয় হিন্দি মাধ্যম স্কুলের ওই ছাত্রীর সঙ্গে কলবাজার এলাকার এক যুবক ত্রিলোকী পাণ্ডের ভালবাসার সম্পর্ক গড়ে ওঠে। কিন্তু কী ভাবে সে বিহারে পৌঁছল? পুলিশের দাবি, জেরায় ওই নাবালিকা জানিয়েছে, কাতির্ক পুজোর বিসর্জনের রাতে তার সঙ্গে ত্রিলোকীর দেখা হলে সে তার সঙ্গেই ঘুরছিল। ভোরবেলা ত্রিলোকী তাকে ব্যান্ডেল স্টেশনে নিয়ে আসে। সেখানে আর এক যুবক তাকে ট্রেনে চাপিয়ে বিহারের ছাপড়া জেলায় নিয়ে যায়। পরে সে জানতে পারে ত্রিলোকী তাকে ১৫ হাজার টাকায় ওই যুবকের কাছে বিক্রি করে দিয়েছে। ওই যুবকের নাচের দল রয়েছে। চাপড়ায় নিয়ে গিয়ে নাচের দলের ওই সর্দার তাকে বানিয়াপুরের বাসিন্দা আধেশ কুমার সা’র হাতে তুলে দেয়। আধেশেরও নাচের দল রয়েছে। নিজের স্ত্রী-পুত্র-সংসার থাকা সত্ত্বেও আধেশ তাকে বিয়ে করে। এর পর থেকেই তার ওপর শুরু হয় নিয়মিত যৌন নির্যাতন।

গত মে মাসে ওই নাবালিকা কোনওরকমে সুযোগ পেয়ে বাড়িতে ঠাকুমাকে ফোন করে। পরিবারের সদস্যরা তার ঠিকানা জানতে চাইলেও সে জানাতে পারেনি। এর পর নাবালিকার পরিবার মগরা থানায় ওই ফোন নম্বর-সহ পুলিশকে সব জানায়। ফোনের সূত্র ধরে মগরা থানার সাব ইন্সপেক্টর রঞ্জন দাস, এএসআই অনুপ মজুমদারের নেতৃত্বে ছয় জনের একটি দল ১০ জুন বিহারের উদ্দেশে রওনা হন। সেখানে বানিয়াপুর থানার সহযোগিতায় হারপুর, দাউদপুর প্রভৃতি জায়গায় হানা দিয়ে শেষে একটি বিয়েবাড়িতে অতিথি সেজে ঢুকে নাচের আসর থেকে ওই নাবালিকাকে উদ্ধার করে। সেখান থেকে গ্রেফতার করা হয় আধেশকে।

হুগলির পুলিশ সুপার প্রবীণ ত্রিপাঠী বলেন, ‘‘মোবাইলের সূত্র ধরে ওই নাবালিকাকে উদ্ধার করা হয়েছে। ধৃতকে জিজ্ঞাসাবাদ করে নারী পাচার চক্রে জড়িত অন্যদের খোঁজে তল্লাশি চালানো হবে।’’

রবিবার ভোরে নাবালিকা এবং ধৃত ব্যক্তিকে নিয়ে মগরায় পৌঁছয় পুলিশ। খবর দেওয়া হয় নাবালিকার পরিবারকে। ধৃত আধেশকে চুঁচুড়া আদালতে তোলা হলে বিচারক তাকে দশ দিনের পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন। নাবালিকাকে চাইল্ড ওয়েলফেয়ার সোসাইটির দফতরে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়।

পুলিশের দাবি, জেরায় ধৃত আধেশ জানিয়েছে, তাদের নাচের দলে মেয়ে জোগান দেওয়ার জন্য ব্যান্ডেলে একজন রয়েছে। বিয়ের মরসুমে নাচের ভাল ব্যবসা হয়। ওই নাবালিকাকে সে বিয়ে করে নিজের কাছেই রেখেছিল। বাঁশবেড়িয়া ও ব্যান্ডেল এলাকার আরও কয়েকটি মেয়ে ওখানে নাচের দলে রয়েছে। তবে ওখানে একবার গেলে আর বাড়ির লোকের সঙ্গে যোগাযোগ করতে দেওয়া হয় না।

এ দিন নাতনিকে ফিরে পেয়ে নাবালিকার ঠাকুমা বলেন, ‘‘পুলিশ সাহায্য না করলে নাতনিকে হয়তো আর ফিরেই পেতাম না।’’

women trafficking girl trafficking bansberia girl chhapra bihar
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy