Advertisement
E-Paper

জিলিপির টাকা চাইতেই জুটল মার

পুলিশ জানিয়েছে, ধৃত শেখ শামিমউদ্দিন স্থানীয় উদনা গ্রামের বাসিন্দা। তার ছয় শাগরেদ অবশ্য পলাতক। মঙ্গলবার শামিমকে আরামবাগ আদালতে তোলা হলে ১৪ দিন জেল হেফাজতের নির্দেশ  দেন বিচারক।

পীযূষ নন্দী

শেষ আপডেট: ১৮ জুলাই ২০১৮ ০২:১৩
লন্ডভন্ড: ভাঙচুর চালানো হয়েছে দোকানে। নিজস্ব চিত্র

লন্ডভন্ড: ভাঙচুর চালানো হয়েছে দোকানে। নিজস্ব চিত্র

জিলিপি খেয়েছিল গ্রামের এক মাতব্বর, সঙ্গে তার জনা ছয়েক শাগরেদ। দোকান মালিকের অভিযোগ, টাকা চাইতেই ‘পচা জিলিপি’-র বাহানা তুলে ভাঙচুর করা হয় দোকান। মার খেয়ে হাসপাতালে ভর্তি মালিক ও তাঁর স্ত্রী। অবশ্য ছাড় পাননি নিজেকে তৃণমূলের নেতা বলে জাহির করা সেই মাতব্বর শেখ শামিমউদ্দিনও। স্থানীয়রা পিটুনি দিয়ে তাকে তুলে দিয়েছে পুলিশের হাতে। সোমবার রাতে খানাকুলের হেলান বাজার এলাকার ঘটনা।

পুলিশ জানিয়েছে, ধৃত শেখ শামিমউদ্দিন স্থানীয় উদনা গ্রামের বাসিন্দা। তার ছয় শাগরেদ অবশ্য পলাতক। মঙ্গলবার শামিমকে আরামবাগ আদালতে তোলা হলে ১৪ দিন জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গত কয়েক বছরে তাঁতিশাল পঞ্চায়েত এলাকায় দাপট বেড়েছে শামিম ও তাঁর দলবলের। বাসিন্দাদের অভিযোগ, পারিবারিক ঝামেলা, কোনও বাড়ির পাঁচিল দেওয়া বা অন্য কোনও বিষয়ে কোথাও সামান্য বিবাদের গন্ধ পেলেই অযাচিত ভাবে ঝাপিয়ে পড়ে শামিম। তারপর শাসকদলের নাম করে শুরু হয় তোলাবাজি। শামিমের দাদাগিরি থেকে বাদ যায় না পাশের রামমোহন-২ পঞ্চায়েত এলাকার গ্রামগুলিও। এ নিয়ে এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে ক্ষোভ বাড়ছিল। শামিমের বাবাও তৃণমূলের নেতা বলে এলাকায় পরিচিত।

অভিযোগ, গত সোমবার রাত পৌনে ৮টা নাগাদ হেলান বাজারে তুষার বটব্যাল নামে এক দোকানির মিষ্টির দোকানে জিলিপি খান শামিমরা। তারপর তুষারবাবু ও তাঁর স্ত্রী বিষ্ণুপ্রিয়াদেবী টাকা চাইলে তাঁদের উপর চড়াও হয়। তাঁদের মারধর করে দোকান ভাঙচুর করা হয়। বাবা-মাকে বাঁচাতে গিয়ে আক্রান্ত হন তুষারবাবুর ছেল দিব্যেন্দুও। তিনি বলেন, ‘‘জিলিপি খেলেও টাকা দিতে চাইছিল না ওরা। বাবা টাকা চাইতে ওরা অপবাদ দেয় আমরা নাকি পচা জিলিপি বিক্রি করছি। তারপর শুরু হয় মারধর। আমরা এখানে দীর্ঘদিনের বাসিন্দা। দোকানের বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ নেই। তাই প্রতিবেশীরাই রুখে দাঁড়িয়েছিলেন।’’

স্থানীয় ব্যবসায়ী ও অন্যরা ঘিরে ধরেন শামিমদের। পাল্টা মারে কাহিল শামিমকে আটকে রেখে পুলিশের হাতে তুলে দেন তাঁরা। যদিও ততক্ষণে পগার পার ছয় শাগরেদ। তুষারবাবু ও তাঁর স্ত্রীকে উদ্ধার করে তাঁরাই খানাকুল গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি করান। এ দিন হাসপাতালে তুষারবাবু বলেন, ‘‘ওই প্রথম নয়। এর আগে জুন মাসেও এ ভাবে আমাদের উপর চড়াও হয়েছিল শামিম ও দলবল।’’

তুষারবাবুর অভিযোগ, গত মাসের মাঝামাঝি ওই একই দলবল নিয়ে শামিম মাংসের পকোড়া খেয়েছিল। সে বারও টাকা চাইতেই বিপত্তি বাধে। ভাগাড়ের পচা মাংস দিয়ে পকোড়া বানানো হয়েছে অভিযোগ তুলে সে বারও দোকান ভাঙচুর করেছিল শামিমের দল।

হেলান বাজারের ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক গোপাল গুছাইত বলেন, “ওই দোকানে বিকেল থেকে জিলিপি ভাজা হয়েছে, আমরা দেখেছি। সমস্ত বিষটা পুলিশকে জানিয়েছি। ব্যবসায়ীদের নিরাপত্তা নিয়ে পুলিশ আশ্বাস দিয়েছে।”

তোলবাজি নিয়ে যেখানে খোদ দলনেত্রী বারবার বার্তা দিচ্ছেন, সেখানে গ্রামস্তরের নেতাও ছোট ছোট দোকান থেকে তোলা তুলে খাচ্ছে কেমন করে? এ প্রশ্নের উত্তরে তৃণমূলের জেলা সভাপতি ও রাজ্যের মন্ত্রী তপন দাশগুপ্ত বলেন, “দলের নাম ভাঁড়িয়ে কেউ কোথাও অশান্তি ছড়ালে বা অন্যায় করলে পুলিশই কড়া ব্যবস্থা নেবে।’’

TMC TMC leader
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy