Advertisement
২১ মে ২০২৪
হুগলিতে বাড়ি গিয়ে হুমকি দেওয়ায় অভিযুক্ত তৃণমূল আর হাও়ড়ায় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয় ২৩ পঞ্চায়েতে

প্রত্যাহার, নইলে যাবে চাকরি বা প্রাণ

বুধবার বেলা ৩টে থেকে মনোনয়ন প্রত্যাহার শুরু হয়েছে। প্রথম দিনেই গোঘাট থেকে জেলা পরিষদ আসনের সিপিএম প্রার্থী প্রভাত কুমার সাঁতরা মনোনয়ন তুলে নেন।

চিহ্ন: বোমা পড়ল বাড়িতে। ব্যান্ডেলে। নিজস্ব চিত্র

চিহ্ন: বোমা পড়ল বাড়িতে। ব্যান্ডেলে। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ১২ এপ্রিল ২০১৮ ০১:২২
Share: Save:

মনোনয়ন দাখিল পর্ব মিটেছে। এ বার সেই মনোনয়ন প্রত্যাহারের জন্য চাপ।

হুগলিতে বিরোধীদের উপর হামলা, হুমকির অভিযোগ উঠতে শুরু করে দিয়েছে শাসক দলের বিরুদ্ধে। তৃণমূলের ‘হামলা’র প্রতিবাদে আজ, বৃহস্পতিবার কলকাতায় নির্বাচন কমিশন দফতরে বিক্ষোভ দেখাবে জেলা বামফ্রন্ট।

বুধবার বেলা ৩টে থেকে মনোনয়ন প্রত্যাহার শুরু হয়েছে। প্রথম দিনেই গোঘাট থেকে জেলা পরিষদ আসনের সিপিএম প্রার্থী প্রভাত কুমার সাঁতরা মনোনয়ন তুলে নেন। দলের অভিযোগ, তৃণমূলের ছেলেরা প্রভাতবাবুর বাড়িতে চড়াও হয়ে বাড়িঘর জ্বালিয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়েছে। গোঘাটের সিপিএম নেতা অরুণ পাত্র বলেন, ‘‘তৃণমূলের সন্ত্রাসের কারণেই উনি মনোনয়নপত্র তুলতে বাধ্য হয়েছেন। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বাড়িতে গিয়ে হুমকি দেওয়া হয়েছে।’’ প্রভাতবাবুর সঙ্গে অবশ্য যোগাযোগ করা যায়নি। তাঁর মোবাইল ফোন বন্ধ ছিল।

গোঘাটের দু’টি ব্লকে চারটি জেলা পরিষদ আসনের মধ্যে ২টিতে বিরোধীরা মনোনয়ন দিতেই পারেনি। ওই দুই আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতেছে তৃণমূল। প্রভাতবাবু মনোনয়ন তুলে নেওয়ায় সেই সংখ্যা দাঁড়াল তিনে। সিপিএমের জেলা সম্পাদক দেবব্রত ঘোষ বলেন, ‘‘জেলা জুড়েই তৃণমূলের সন্ত্রাস অব্যাহত। বৃহস্পতিবার ১৭ দলের পক্ষ থেকে শাসক তৃণমূলের একরতফা সন্ত্রাসের প্রতিবাদে কমিশনের দফতরে বিক্ষোভ সমাবেশ হবে। স্মারকলিপি দেওয়া হবে।’’

সূত্রের খবর, মঙ্গলবার রাতে দিলীপ ঘোষ নামে মগরা পঞ্চায়েতের এক সিপিএম প্রার্থীর বাড়িতে চড়াও হয় তৃণমূলের লোকেরা। তাঁর মা, স্ত্রীর সামনেই বেধড়ক মারধর করে তাঁর দাঁত ভেঙে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। ঘটনার প্রতিবাদে সিপিএমের স্থানীয় এরিয়া কমিটির সম্পাদক বাবলু ঘোষ মগরা থানায় স্মারকলিপি দেন। এর পরে তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকেরা বাবলুবাবুর বাড়িতেও ভাঙচুর চালায় বলে অভিযোগ। তারকেশ্বরে সিপিএমের জেলা পরিষদ প্রার্থী তন্ময় জানা প্রহৃত হন। খানাকুল, আরামবাগ, পুরশুড়া, তারকেশ্বরেও প্রার্থীদের মনোনয়ন তুলে নেওয়ার জন্য চাপ দেওয়া হচ্ছে বলে সিপিএম নেতৃত্বের অভিযোগ।

দেবব্রতবাবুর অভিযোগ, ‘‘মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার না করলে প্রার্থীদের পরিবারের ব্যবসা বন্ধ বা চাকরির ক্ষেত্রে সমস্যা তৈরি করার হুমকিও দেওয়া হচ্ছে। জাঙ্গিপাড়াতেও আমাদের জেলা পরিষদের প্রার্থীকে মারধর করা হয়েছে। সব ঘটনাই নির্বাচন কমিশনকে জানিয়েছি।’’

বিজেপি-র মগরা মণ্ডল সভাপতি সন্দীপ সাঁধুখাকে মারধরের অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। সন্দীপবাবু বলেন, ‘‘চুঁচুড়া-মগরা পঞ্চায়েত সমিতির চারটি আসনে মনোনয়ন তুলে নেওয়ার হুমকি দিয়ে আমাকে মারধর করে।’’ ঘটনার প্রতিবাদে বুধবার বিজেপির হুগ‌লি সাংগঠনিক জেলা সভাপতি সুবীর নাগ থানায় স্মারকলিপি দেন। খানাকুল-২ ব্লকের জেলা পরিষদের বিজেপি প্রার্থী শোভনলাল মুখোপাধ্যায়য়ের বাড়িতে গিয়ে তৃণমূলের ছেলেরা হুমকি দেয় বলে অভিযোগ। তার পর থেকে তিনি ঘরছাড়া বলে দলীয় নেতৃত্বের অভিযোগ। পরিবারের লোকেরা অবশ্য জানান, তিনি আত্মীয়ের বাড়িতে গিয়েছেন।

হুমকি, মারধরের অভিযোগ তৃণমূল নেতত্ব মানেননি। দলের জেলা সভাপতি তপন দাশগুপ্ত বলেন, ‘‘বিরোধীরা মিথ্য বলছেন। হুগলির কোথাও সেই ভাবে কোনও সমস্যা হয়নি।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE