Advertisement
E-Paper

মনোনয়নেও গোষ্ঠী-কাজিয়া

খানাকুলের পর এ বার জাঙ্গিপাড়া। ফের পঞ্চায়েত ভোটের মনোনয়ন ঘিরে শাসকদলের গোষ্ঠী-কাজিয়া সামনে এল। আবার অস্বস্তিতে পড়লেন জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৭ এপ্রিল ২০১৮ ০২:০৬
বর্ম: লাঠি হাতে মনোনয়ন জমা দেওয়ার পথে। নিজস্ব চিত্র

বর্ম: লাঠি হাতে মনোনয়ন জমা দেওয়ার পথে। নিজস্ব চিত্র

খানাকুলের পর এ বার জাঙ্গিপাড়া। ফের পঞ্চায়েত ভোটের মনোনয়ন ঘিরে শাসকদলের গোষ্ঠী-কাজিয়া সামনে এল। আবার অস্বস্তিতে পড়লেন জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব।

গত বুধবার খানাকুলের ভীমপুরে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর সংঘর্ষে জখম হন কয়েকজন। বোমাবাজি, মোটরবাইকে অগ্নিসংযোগে তেতে উঠেছিল এলাকা। শুক্রবার জাঙ্গিপাড়া ব্লক অফিসের কাছে আক্রান্ত হলেন স্থানীয় তৃণমূল বিধায়কের অনুগামীরা। অভিযোগ, দলেরই জাঙ্গিপাড়া পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতির অনুগামীরা তাঁদের বেধড়ক বাঁশপেটা করে। রেয়াত করা হয়নি মহিলাদেরও। পুলিশ লাঠি চালিয়ে হামলাকারীদের ছত্রভঙ্গ করে। আহত এক তৃণমূল নেতাকে পুলিশই জাঙ্গিপাড়া গ্রামীণ হাসপাতালে নিয়ে যায়। বেলা গড়াতে পুলিশি প্রহরায় বিধায়কের অনুগামী প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র জমা দেন।

পঞ্চায়েত ভোটের আগে বারবার দলীয় কোন্দল মেটাতে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্ব। কিন্তু মনোনয়ন-পর্বে যে ভাবে দলের গোষ্ঠী-কাজিয়া সামনে আসছে, তাতে ক্ষুব্ধ দলের সাধারণ কর্মী-সমর্থকেরাই। এতে বিজেপি বাড়তি সুবিধা পেয়ে যাবে বলে মনে করছেন অনেকে। শুক্রবারের ঘটনাটিকে অবশ্য লঘু করে দেখানোর চেষ্টা করেছেন জেলা তৃণমূল সভাপতি তপন দাশগুপ্ত। তিনি বলেন, ‘‘ভোটর সময়ে ভুল বোঝাবুঝি থাকেই। এ ক্ষেত্রে তাই হয়েছিল। মিটে গিয়েছে।’’

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গোলামালের আশঙ্কায় এ দিন জাঙ্গিপাড়ার ধনপোতা গ্রামে ফুরফুরা, মুণ্ডলিকা, রাধানগর, দিলাকাশ-সহ কয়েকটি পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রার্থীরা জড়ো হন। সেখান থেকে চারটি গাড়ি এবং বেশ কিছু মোটরবাইকে অন্তত দেড়শো জন ব্লক অফিসের উদ্দেশে রওনা হন। পথে জাঙ্গিপাড়া বাজারের তিন মাথার মোড়ে পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি শেখ মইনুদ্দিন ওরফে বুধোর দলবল তাঁদের পথ আটকায়। অভিযোগ, বাঁশ এবং লাঠি নিয়ে অন্তত ১০০ জন ওই দলের উপরে চড়াও হয়। রাধানগর পঞ্চায়েতের দলীয় প্রার্থীদের মারধর করা হয়। ভয়ে প্রার্থীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যান। সংঘর্ষ জাঙ্গিপাড়া বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত ছড়ায়। তৃণমূলের মুণ্ডলিকা অঞ্চল সভাপতি গোপাল পালও প্রহৃত হন। এর পরেই পুলিশ গিয়ে লাঠি চালানো শুরু করে। গোপালবাবুকে পুলিশই হাসপাতালে নিয়ে যায়। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গ্রামীণ) কামনাশিস সেনও ঘটনাস্থলে যান। পুলিশ দু’জনকে আটক করেছে।

জাঙ্গিপাড়ার বিধায়ক স্নেহাশিস চক্রবর্তী বলেন, “মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া গেলেও এক সময় ওঁরা এমন পরিস্থিতি তৈরি করেছিল যে, শ্রীরামপুরে আমাদের দলের প্রার্থীদের এনে মহকুমাশাসকের কাছে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার কথাও ভাবতে হয়েছিল।” অভিযোগ উড়িয়ে জাঙ্গিপাড়ার পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি শেখ মইনুদ্দিন বলেন, “মনোনয়নপত্র জমা এতদিন শান্তিপূর্ণই ছিল। আজ একটু গোলমাল হয়েছে শুনেছি। ওখানে আমি ছিলাম না। এ বিষয়ে যা বলার দলই বলবে।”

আরামবাগেও অশান্তি অব্যাহত। দলীয় কার্যালয়গুলির সামনে তৃণমূল ঘেরাও-জমায়েত করার জন্যই তারা এ দিন মনোনয়ন জমা দিতে পারেনি বলে অভিযোগ তুলেছে বিরোধীরা। মহকুমা নির্বাচন দফতরও জানিয়েছে, এ দিন বিরোধী দলের মনোনয়ন জমা পড়েনি। কিন্তু এ দিন আরামবাগ পঞ্চায়েত সমিতি এবং আরামবাগের ১৫টি পঞ্চায়েতের মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল সিপিএমের। সেইমতো পুলিশি নিরাপত্তা চাওয়া হয়। কিন্তু সকাল থেকেই শহরের পি সি সেন রোডে সিপিএম জোনাল কার্যালয়টির সামনে তৃণমূল জমায়েত-ঘেরাও করে এবং পাঁচ সিপিএম নেতাকে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ।

West Bengal Panchayat Elections 2018 Group Clash TMC
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy