শ্রমিকের সংখ্যা কয়েক হাজার। তাঁদের প্রভিডেন্ট ফান্ড-এর আওতায় আনার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের নির্দেশও আছে। কিন্তু সেই নির্দেশকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে শ্রমিকদের বঞ্চিত করা হচ্ছে। এমন অভিযোগ উঠেছে হাওড়ার শ্যামপুরের ইটভাটাগুলিতে।
শ্যামপুরের অর্থনীতি অনেকটাই নির্ভর ইটভাটার উপরে। প্রায় দেড়শো ভাটা আছে শ্যামপুর ১ ও ২ ব্লক মিলিয়ে। শ্রমিকের সংখ্যা প্রায় ৩০ হাজার। স্থানীয় শ্রমিক যেমন আছেন, তেমনই ঝাড়খন্ড, ওড়িশা থেকেও শ্রমিকেরা আসেন কাজ করতে। কেউ মাসিক বেতনে আবার কেউ কাজ করেন ঠিকা চুক্তিতে। তবে সব ধরনের শ্রমিককেই প্রভিডেন্ট ফান্ডের আওতায় আনার নির্দেশ দিয়েছে কেন্দ্র।
কিন্তু সরেজমিন পরিদর্শনে দেখা গিয়েছে শ্যামপুরের কোথাও ইটভাটাগুলি সেই নির্দেশ মানছে না। বেশিরভাগ ইটভাটাতেই গুটিকয়েক শ্রমিককে প্রভিডেন্ট ফান্ড-এর আওতায় আনা হয়েছে। দেখা গিয়েছে, তাঁদের বেশিরভাগই মালিকের পরিবারের লোকজন। অভিযোগ, সরকারের চোখে ধুলো দিতেই ভাটা মালিকেরা তাঁদের পরিবারের লোকজনকে শ্রমিক হিসাবে দেখিয়েছেন।
মালিকদের অবশ্য বক্তব্য, ভাটায় যে সব শ্রমিক কাজ করেন তাঁদের বেশিরভাগই অস্থায়ী। ফলে তাঁদের প্রভিডেন্ট ফান্ড-এর আওতায় আনার ক্ষেত্রে সমস্যা আছে। এক ভাটা মালিক জানান, তাঁর ভাটায় এ বছর যে শ্রমিক কাজ করছেন, পরের মরসুমে সেই শ্রমিক হয়তো অন্য ভাটায় চলে গেলেন। সে ক্ষেত্রে ওই শ্রমিককে প্রভিডেন্ড ফান্ড-এর আওতায় আনা যাবে কী ভাবে?
শ্রমিক সংগঠনগুলির পাল্টা বক্তব্য, এতে সমস্যার কিছু নেই। যে কোনও চাকরির মতোই এখানেও যদি কোনও শ্রমিক ভাটা বদলে ফেলেন তাহলে যে ভাটাতে তিনি যাচ্ছেন তার মালিক ওই শ্রমিককে প্রভিডেন্ট ফান্ড-এর আওতায় আনবেন।
সিটু প্রভাবিত হাওড়া জেলা ইটভাটা শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের নেতা উত্তম রায়চৌধুরী বলেন, ‘‘অবিলম্বে যাতে সব শ্রমিককে প্রভিডেন্ট ফান্ড-এর আওতায় আনা হয়, সে জন্য আমরা বিভিন্ন মহলে স্মারকলিপি দিয়েছি।’’
হাওড়া আঞ্চলিক প্রভিডেন্ট ফান্ড কমিশনারের দফতরের এক পদস্থ কর্তা জানান, সব শ্রমিককে প্রভিডেন্ট ফান্ড-এর আওতায় আনার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে শ্যামপুরের ভাটা মালিকদের। ভাটামালিকদের পক্ষে বংশী কর বলেন, ‘‘আমরা সরকারি নির্দেশ মেনে চলব।’’ তবে একইসঙ্গে ভাটা মালিকেরা জানান, সব শ্রমিককে প্রভিডেন্ট ফান্ড-এর আওতায় আনতে সময় লাগবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy