প্রশাসনের অনুরোধে পিছিয়ে এলেন বাসমালিকরা!
শ্রীরামপুর-জাঙ্গিপাড়া ৩১ নম্বর রুটে বাস ধর্মঘটের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে নিল ওই রুটের বাসমালিকদের সংগঠন। মাধ্যমিক পরীক্ষার মুখে হুগলির পরিবহণ দফতর এবং প্রশাসিনিক আধিকারিকরা বাসমালিকদের ধর্মঘটের সিদ্ধান্তে চিন্তায় পড়েছিলেন। রবিবার ধর্মঘট প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত স্বস্তি দিয়েছে তাঁদের। তবে বাস মালিকদের বক্তব্য, প্রশাসন বেআইনি গাড়ির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেওয়াতেই তাঁরা ধর্মঘটের সিদ্ধান্ত থেকে পিছিয়ে এসেছেন। কিন্ত এ বারও আশ্বাস বাস্তবায়িত না হলে আরও বড় আন্দোলনে নামবেন তাঁরা।
হুগলির আঞ্চলিক পরিবহণ অধিকর্তা শুভেন্দুশেখর এ দিন বলেন, ‘‘ওঁরা ধর্মঘট তুলে নিচ্ছেন। ট্রেকারের ছাদে বা পাদানিতে যাত্রী তোলা বন্ধ করতে শীঘ্রই অভিযান চালু করা হবে। লাগাতার অভিযান চলবে।’’ তাঁর আশ্বাস, যাত্রীবাহি গাড়ি চলাচলে শৃঙ্খলা ফেরাতে যথাযথ পদক্ষেপ করা হবে।
বাসমালিক সংগঠন সূত্রে খবর, শ্রীরামপুর থেকে জাঙ্গিপাড়া পর্যন্ত ৪২ কিলোমিটার দীর্ঘ ওই রুটে বর্তমানে ২২টি বাস চলে। কিন্তু গত কয়েক বছরে বেআইনি গাড়ির দাপটে তাঁদের ব্যবসায় মন্দা দেখা দিয়েছে। বাস চালিয়ে লাভের মুখ দেখা যাচ্ছে না। এই পরিস্থিতিতে অনেকেই বাস বসিয়ে দিচ্ছেন। বাসমালিক এবং কর্মীদের অভিযোগ, শ্রীরামপুর থেকে ফুরফুরার তালতলা হাট পর্যন্ত প্রচুর ট্রেকার চলে। নিয়ম-কানুনের তোয়াক্কা না করে ট্রেকারের ছাদে, পাদানিতে যাত্রী তোলা হয়। বিভিন্ন জায়গায় বাসরুটে টোটোর বাড়বাড়ন্ত। সব মিলিয়ে, যান চলাচলে কোনও নিয়ন্ত্রণ নেই প্রশাসনের। এক বাসমালিক বলেন, ‘‘আমরা সরকারকে কর দিয়ে বাস চালাই। কিন্তু দিনের পর দিন পরিস্থিতি খারাপ হচ্ছে। বাসচালক এবং কন্ডাক্টররাও সংসার চালাতে বেকায়দায় পড়ছেন। অথচ সরকারি দফতরে অজস্রবার আবেদন-নিবেদন করেও লাভ হচ্ছে না। প্রশাসনিক আধিকারিক থেকে বিভাগীয় মন্ত্রী— সকলেই শুধু আশ্বাস দিয়ে দায় সেরেছেন। বাসমালিকরা আন্দোলনে নামলে সাময়িক ধড়পাকড় হয়েছে। কিন্তু কিছু দিন পরে ফের একই অবস্থা ফিরে আসে।’’
এই পরিস্থিতিতে আজ, সোমবার থেকে অনির্দিষ্টকাল বাস ধর্মঘটের ডাক দিয়েছিলেন ওই রুটের বাসমালিকরা। দিন কয়েক পরেই মাধ্যমিক পরীক্ষা। রবিবার আনন্দবাজার পত্রিকায় এই খবর প্রকাশিত হয়। এই পরিস্থিতিতে প্রশাসন এবং পরিবহণ দফতরের আধিকারিকরা চিন্তায় পড়ে যান। প্রশাসন সূত্রে খবর, রবিবার, ছুটির দিন হওয়া সত্ত্বেও হুগলির আঞ্চলিক পরিবহণ অধিকর্তা (আরটিও) শুভেন্দুশেখর দাস দফায় দফায় বাসমালিক এবং দফতরের আধিকারিকদের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন। মাধ্যমিক পরীক্ষার মুখে তাঁদের ধর্মঘট না করার আর্জি জানান পরিবহণ দফতরের কর্তারা।
বাসমালিক সংগঠনের সম্পাদক প্রণব রায়চৌধুরী বলেন, ‘‘আরটিও আশ্বাস দিয়েছেন, অবিলম্বে ট্রেকারের পাদানি এবং ছাদ খুলে ফেলা হবে। কোনও পরিস্থিতিতেই ট্রেকারের ছাদে এবং পাদানিতে যাত্রী তোলা বরদাস্ত করা হবে না। ওই আশ্বাস পেয়ে সংগঠনের তরফে বৈঠকে ধর্মঘট প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত হয়।’’ তবে তিনি জানান, আগেও দেখা গিয়েছে, প্রশাসন নামমাত্র অভিযান চালায়। এ বারও তেমনটা ঘটলে জোরদার আন্দোলনে নামা ছাড়া উপায় থাকবে না।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy