ট্র্যাফিক আইন ভাঙলে পুলিশ রাস্তায় আর ‘কেস’ দেবে না। করবে না ‘স্পটফাইনও’। কিন্তু আইনভঙ্গকারীরা যদি ভাবেন পালিয়ে পার পাবেন, তা হলে সে গুড়ে বালি। তাঁদের অজান্তেই পুলিশ জেনে যাবে কী ভাবে দুর্ঘটনা ঘটছে, কোন গাড়ি আইন ভেঙে পালাচ্ছে ইত্যাদি তথ্য। সৌজন্য, ক্যামেরার চোখ। শুধু আইন ভাঙা গাড়ি চিহ্নিত করাই নয়, তার মালিকের ঠিকুজি-কুষ্ঠি বার করে কোন ধারায় জরিমানা হবে, তা-ও তৈরি হবে কম্পিউটারে। মামলার নোটিস চালকের অজান্তেই পৌঁছে যাবে তাঁর বাড়িতে।
ট্র্যাফিক আইন যাঁরা মানবেন না, তাঁদের শাস্তি দিতে হাওড়া শহরে এমনই ব্যবস্থা চালু করতে চলেছে হাওড়া সিটি পুলিশ। তাদের দাবি, এই ব্যবস্থা রাজ্যে প্রথম। নতুন এই প্রযুক্তির নাম দেওয়া হয়েছে ‘নম্বর প্লেট রিডার টেকনোলজি’।
কী ভাবে কাজ করবে নয়া ব্যবস্থা? হাওড়া সিটি পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এই ব্যবস্থা চালু করতে ১২টি গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে অত্যাধুনিক ক্যামেরা বসানো হচ্ছে। ওই ক্যামেরা প্রতিটি যানবাহনের নম্বর প্লেটের ছবি তোলার পাশাপাশি নম্বর পড়তেও পারবে। কোনও গাড়ি ট্র্যাফিক আইন ভাঙলে সেটির নম্বর পড়ে কন্ট্রোল রুমের সার্ভারে পাঠিয়ে দেবে ওই ক্যামেরা। সেখান থেকে গাড়ির মালিকের তথ্যপঞ্জি জেনে তা ডিজিটাল পদ্ধতিতে নথিভুক্ত হয়ে যাবে পুলিশের খাতায়। পাশাপাশি ট্র্যাফিক আইনের ঠিক কোন ধারায় ওই গাড়ি চালককে জরিমানা করা হবে, সেই নোটিস তৈরি হবে কম্পিউটারে।
আইনভঙ্গকারীর সব তথ্য পুলিশের ওয়েবসাইটে দেখা তো যাবেই, মালিকের বাড়িতেও পৌঁছে যাবে মামলার কাগজপত্র।
হাওড়া সিটি পুলিশ জানিয়েছে, নাইট ভিশন ক্যামেরার থেকেও উন্নত এই আধুনিক ক্যামেরা রাতেও গাড়ির নম্বর পড়তে পারবে। ফলে রাতে কোনও গাড়ি আইন ভেঙে পালালেও ছাড় পাবে না।
হাওড়া সিটি পুলিশের দাবি, এই ব্যবস্থা এখন কলকাতাতেও নেই। কলকাতায় এখনও ট্র্যাফিক
পুলিশ ‘কেস’ দেয় কাগজে লিখে। তবে কলকাতা পুলিশও এমন ক্যামেরা বসানোর পরিকল্পনা করেছে। হাওড়ার পুলিশ কমিশনার দেবেন্দ্রপ্রকাশ সিংহ বলেন, ‘‘এই আধুনিক ক্যামেরা আর কোথাও আছে বলে আমার জানা নেই। প্রাথমিক ভাবে কাজীপাড়া, ঊনসানি, ইছাপুর, বেলুড় বাজার ও নারায়ণ হাসপাতালের কাছে আন্দুল রোডের মোড়ে এই ক্যামেরা বসানো হয়েছে। এর পরে হ্যাং স্যাং মোড়, হাওড়া ব্রিজ চত্বরেও সেগুলি বসানো শুরু হবে।’’
পুলিশ কমিশনার জানান, গোটা হাওড়া শহরে উন্নত সিসি ক্যামেরা বসানোর ফলে কোন গাড়ি কখন ঢুকছে বা বেরোচ্ছে, তা পুলিশি নজরদারিতে থাকে। শুধু তাই নয়, ছিনতাই বা ডাকাতির পরে কোনও গাড়িতে দুষ্কৃতীরা পালালেও সেটিকে এই ক্যামেরার সাহায্যে চিহ্নিত করা যাবে। সিপি-র মতে, এই আধুনিক ব্যবস্থা অপরাধ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করার পাশাপাশি অপরাধীদের চিহ্নিত করতেও কাজে লাগবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy