Advertisement
১৯ মে ২০২৪

বৃষ্টিকে হারিয়েই উৎসবের উদ্বোধন চন্দননগরে

আকাশ মেঘলা। বৃষ্টি শুরু হয়েছিল সকাল থেকে। কিন্তু প্রস্তুতি থামেনি। এর মধ্যেই বিকেলে উদ্বোধন! শুক্রবার, চতুর্থীতেই ঢাকে পড়ল কাঠি। ছাতা মাথায় চন্দননগরের রাস্তায় নামলেন মানুষ। শুরু হয়ে গেল জগদ্ধাত্রী পুজো।

পুজোর উদ্বোধনে সাংসদ রত্না দে নাগ। আছেন দুই মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, তপন দাশগুপ্ত।

পুজোর উদ্বোধনে সাংসদ রত্না দে নাগ। আছেন দুই মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, তপন দাশগুপ্ত।

গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায়
শেষ আপডেট: ০৫ নভেম্বর ২০১৬ ০২:১৮
Share: Save:

আকাশ মেঘলা। বৃষ্টি শুরু হয়েছিল সকাল থেকে। কিন্তু প্রস্তুতি থামেনি। এর মধ্যেই বিকেলে উদ্বোধন!

শুক্রবার, চতুর্থীতেই ঢাকে পড়ল কাঠি। ছাতা মাথায় চন্দননগরের রাস্তায় নামলেন মানুষ। শুরু হয়ে গেল জগদ্ধাত্রী পুজো।

স্টেশন লাগোয়া কলপুকুর ধারের মণ্ডপে এ দিন বিকেলে কয়েকশো মানুষের ভিড়। পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, পর্যটনমন্ত্রী ইন্দ্রনীল সেন, কৃষি বিপণন মন্ত্রী তপন দাশগুপ্ত এবং সাংসদ রত্না দে নাগ সেখানে পৌঁছতেই শুরু হয়ে যায় হইহই। লাল পাড় শাড়ি পরা মহিলারা ফুল দিয়ে অতিথিদের বরণ করেন। বেজে ওঠে শাঁখ। প্রদীপের সলতেতে আগুন দিয়ে উৎসবের সূচনা করেন সাংসদ-মন্ত্রীরা এবং রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের সন্ন্যাসী স্বামী হরিময়ানন্দ। ফিরহাদ নিজেও ঢাক বাজান।

বউবাজার কলপুকুরধার সর্বজনীন। ছবি: তাপস ঘোষ।

‘চন্দননগরের জগদ্ধাত্রী’ বলা হলেও চন্দননগর ছাড়াও ভদ্রেশ্বর, মানকুণ্ডু এবং চুঁচুড়ার একাংশের বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে ছড়িয়ে রয়েছে এই পুজো। কিন্তু বৃহস্পতিবার বিকেল থেকেই মেঘলা আকাশ আর থেকে থেকে বৃষ্টি পুজো উদ্যোক্তাদের ঘুম কেড়ে নিয়েছিল। ওই রাতে ভদ্রেশ্বরের তেঁতুলতলা সর্বজনীন পুজোয় মণ্ডপের একাংশ ভেঙে পড়ে। এই দুর্যোগের মধ্যেও পুজোর প্রস্তুতিতে খামতি ছিল না। শহরের উত্তর থেকে দক্ষিণ— পুজো উদ্যোক্তাদের একটাই চাহিদা ছিল, ‘প্রকৃতি যেন সদয় হয়’। এর মধ্যেই শুক্রবার অনেক মণ্ডপ কাজ সেরে উদ্বোধন করে ফেলল। সাধারণ মানুষ অবশ্য বৃষ্টির তোয়াক্কা করেননি। তাঁরা রাস্তায় নেমেছেন।

দক্ষিণ চন্দননগরের মানকুণ্ডু সর্বজনীনের থিম ‘নীল পরীর দেশ’। কিন্তু কী করে কাজ শেষ হবে, সেই চিন্তায় উদ্যোক্তাদের মাথায় হাত পড়েছিল। সংগঠনের সহ-সম্পাদক সুভাষ দাস বলেন, “মায়ের কাছে প্রার্থনা করছি। সব পুজোর সংগঠকদের হয়ে এটাই আমার প্রার্থনা।” নিয়োগী বাগানে পৌঁছে দেখা গেল, চারদিকে ছড়িয়ে নানা মুখোশ, জন্তুর খুলি। উদ্যোক্তাদের পক্ষে তাপস চট্টোপাধ্যায়ের আক্ষেপ, “আরও একটা দিন হাতে পেলেই আমরা গুছিয়ে নিতে পারতাম। কিন্তু আকাশ বাধ সাধল। আমাদের থিমে এ বার আদিবাসী নৃত্য উঠে আসছে। ১২ জন আদিবাসী শিল্পী এখানে নাচবেন। কিন্তু আকাশ আমাদের ভয় পাইয়ে দিচ্ছে। জানি না কী হবে!”

নানা মণ্ডপে এ দিন থেকেই শুরু হয়ে গিয়েছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। কলকাতা থেকে নামী-দামি শিল্পীর চন্দননগরে আসাও এ দিন থেকেই শুরু হয়ে গিয়েছে। গোন্দলপাড়া মনসাতলার পুজো এ বার ৭৫ বছরে পা দিল। ক্লাবের সভাপতি বীরেন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় জানান, নানা অনুষ্ঠানের মাধ্যমে পুজোর দিনগুলিকে সাজানো হয়েছে। তাঁর কথার মাঝেই অনুষ্ঠান-মঞ্চে হাজির ভূমির সুরজিৎ। সন্ধ্যা নামতেই অনুষ্ঠানের শুরু।

বৃষ্টিতে জেলার পুলিশ প্রশাসনও নিজেদের প্রস্তুতি চূড়ান্ত করে ফেলেছে। শুক্রবার সন্ধ্যা থেকেই শগরে পুলিশি টহল শুরু হয়েছে। পুলিশ সুপার প্রবীণ ত্রিপাঠী জানিয়েছেন, মোট ৩৯টি পুলিশ সহায়তা কেন্দ্র করা হয়েছে শহরে। আজ, শনিবার পুলিশের পক্ষ থেকে পুজোর ‘গাইড ম্যাপ’ প্রকাশ করা হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Chandannagar Rain
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE