Advertisement
১৯ মে ২০২৪

মিড-ডে মিলে বদল, প্রশ্ন বরাদ্দ নিয়েই

হুগলির জেলাসদরে চুঁচুড়া বালিকা বাণীমন্দির স্কুলে মিড-ডে মিলে বাচ্চাদের নুন-ভাত খাওনোর ছবিটা বেআব্রু হয়ে পড়তেই নড়ে বসেছে প্রশাসন।

ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায়
চুঁচুড়া শেষ আপডেট: ২৭ অগস্ট ২০১৯ ০২:১৪
Share: Save:

বদল এল মিড-ডে মিলের মেনুতে। কিন্তু প্রশ্ন উঠল বরাদ্দ নিয়ে।

হুগলির জেলাসদরে চুঁচুড়া বালিকা বাণীমন্দির স্কুলে মিড-ডে মিলে বাচ্চাদের নুন-ভাত খাওনোর ছবিটা বেআব্রু হয়ে পড়তেই নড়ে বসেছে প্রশাসন। হুগলির জেলাশাসক রত্নাকর রাও একই দিনে জেলার এক হাজার স্কুলে মিড-ডে মিলের হালহকিকত জানতে প্রশাসনিক তদন্ত করেছেন। ঠিক করে দিয়েছেন প্রতিদিনের মেনুও। কিন্তু এখন প্রতিটি স্কুলের শিক্ষকেরা প্রশ্ন তুলেছেন, রাজ্য সরকার যে টাকা বাচ্চাদের খাওয়ার জন্য বরাদ্দ করছে, এই বাজারে সেই টাকায় আদৌ কি বাচ্চাদের মুখে মিড-ডে মিল তুলে দেওয়া সম্ভব?

হুগলির জেলাশাসক বলেন, ‘‘আমি যে নতুন খাদ্য-তালিকা তৈরি করেছি, তাতে আমিষ এবং নিরামিষ—দু’রকম পদই রয়েছে। আমি চাইছি স্কুলের বাচ্চারা যাতে বেশি প্রোটিন পায়। স্কুল কর্তৃপক্ষ পরিস্থিতি অনুযায়ী যেমন পারবেন, খাওয়াবেন। বাধ্যতামূলক কোনওটাই নয়। তাই সমস্যা হওয়ার কথা নয়।’’

তবু চিন্তা যাচ্ছে না শিক্ষকদের। জাঙ্গিপাড়ার রসিদপুরের একটি স্কুলে তিন মাস ধরে মিড ডে-মিলের দায়িত্ব সামলাচ্ছেন এক অঙ্কের শিক্ষক। তিনি বলেন, ‘‘প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ুয়াপিছু ১০০ গ্রাম করে চাল এবং ৪ টাকা ৪৮ পয়সা করে বরাদ্দ। এই বাজারেওই টাকায় কোনও ভাবেই খরচ চালানো যাচ্ছে না।’’ পান্ডুয়ার তিন্না এলাকার একটি স্কুলের প্রধান শিক্ষক বলেন, ‘‘ষষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ুয়াপিছু ৬ টাকা ৭১ পয়সা বরাদ্দ। এতে সরকারি নির্দেশমতো সপ্তাহে দু’দিন গোটা ডিম এবং একদিন মুরগির মাংস খাওয়ানো যাবে না। মশলা এবং আনাজের দাম বাড়ছে। একটা ডিমের দাম এখন ৫ টাকা। আমরা মিড-ডে মিল চালাতে হিমসিম খাচ্ছি। মাংস কী ভাবে খাওয়াব?’’ শিয়াখালার একটি প্রাথমিক স্কুলের এক শিক্ষকও ফাঁপরে। তিনি বলেন,‘‘স্কুলে ছাত্রছাত্রী কম থাকায় টাকা এবং চালের সরকারি বরাদ্দ নামমাত্র। কী করে মিড-ডে মিল চালাব, কোনও দিশা পাচ্ছি না।’’

জেলা প্রশাসনের নির্দেশে বলা হয়েছে, বৃহস্পতিবার এবং শনিবার—সপ্তাহে দু’দিন গোটা ডিম দিতে হবে পড়ুয়াদের। বুধবার মুরগির মাংস। জেলাশাসক ব্লক আধিকারিকদের নির্দেশ দিয়েছেন স্কুলগুলি পরিদর্শন করতে। ফলে, নতুন নির্দেশিকা কী ভাবে মানা হবে, তা নিয়ে চিন্তায় জেলার প্রায় সব স্কুল কর্তৃপক্ষই।

জাঙ্গিপাড়ার এক স্কুলশিক্ষক জানান, বরাদ্দ কম থাকায় তাঁরা ঘুরপথ ধরেন। প্রতিদিন সব ক্লাসে ছেলেমেয়ে আসে না। আবার যারা আসে, তাদের মধ্যে অনেকে মিড-ডে মিল খেতে চায় না। সেই সুযোগে খাতায়-কলমে তাঁরা হিসেব মিলিয়ে দেন।

কিন্তু এ বার আর তা সম্ভব হবে না বলে মনে করছেন অনেকে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Mid Day meal Mamata Banerjee
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE