Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪
COVID-19

কোভিড-প্রতিষেধক, লক্ষ্যপূরণ হল না জেলা হাসপাতালে

শনিবার এই জেলায় টিকাকরণ আনুষ্ঠানিক ভাবে চালু হয় চুঁচুড়া ইমামবাড়া জেলা হাসপাতালে।

চুঁচুড়া জেলা সদর হাসপাতালে টিকাকরণ কর্মসূচিতে জেলাশাসক ওয়াই রত্নাকর রাও। ছবি: তাপস ঘোষ।

চুঁচুড়া জেলা সদর হাসপাতালে টিকাকরণ কর্মসূচিতে জেলাশাসক ওয়াই রত্নাকর রাও। ছবি: তাপস ঘোষ।

প্রকাশ পাল
চুঁচুড়া শেষ আপডেট: ১৭ জানুয়ারি ২০২১ ০৪:০৪
Share: Save:

লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১০০ জনকে দেওয়ার। উৎসাহ এবং ব্যবস্থাপনার খামতি ছিল না। কিন্তু শনিবার, কোভিড টিকাকরণের প্রথম দিন চুঁচুড়া ইমামবাড়া জেলা হাসাপাতালে সেই লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হল না।

হুগলি জেলা প্রশাসন এবং স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকরা মনে করছেন, স্বাস্থ্যকর্মীদের একাংশের মধ্যে সংশয়ই এর কারণ। এ জন্য স্বাস্থ্যকর্মীদের আরও ‘মোটিভেট’ করা দরকার বলে মনে করছেন তাঁরা। তবে, এক স্বাস্থ্যকর্তার দাবি, ‘‘এ দিন বেলা যত গড়িয়েছে, টিকা নিতে আসা স্বাস্থ্যকর্মীদের সংখ্যা বেড়েছে। বিকেল চারটে পর্যন্ত জেলার ১২টি কেন্দ্রে গড়ে ৭০ জন টিকা নিয়েছেন।’’

এ দিন জেলার ১২টি হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রে কোভিড ভ্যাকসিন দেওয়া হয়। প্রথম পর্যায়ে স্বাস্থ্যকর্মীদের এই প্রতিষেধক পাওয়ার কথা। জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, হুগলিতে এই সংখ্যা ৩৪ হাজার। প্রত্যেককে দু’টি ডোজ় দেওয়া হবে। ইতিমধ্যে ৩২ হাজার ভ্যাকসিন এসে পৌঁছেছে। অর্থাৎ, ১৬ হাজার স্বাস্থ্যকর্মীর ভ্যাকসিন হাতে রয়েছে।

শনিবার এই জেলায় টিকাকরণ আনুষ্ঠানিক ভাবে চালু হয় চুঁচুড়া ইমামবাড়া জেলা হাসপাতালে। যে ভবনে এর ব্যবস্থা করা হয়েছে, তার সামনে নীল-সাদা বেলুন, ফুলগাছ দিয়ে সাজানো হয়েছিল। উপস্থিত ছিলেন জেলাশাসক ওয়াই রত্নাকর রাও, অতিরিক্ত জেলাশাসক (জেলা পরিষদ) প্রলয় মজুমদার, মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক শুভ্রাংশু চক্রবর্তী এবং হাসপাতালের সুপার উজ্জ্বলেন্দুবিকাশ মণ্ডল।

এখানে প্রথম টিকা নেন সাফাইকর্মী শচীন হরিজন। তার পরে বর্ণা ভট্টাচার্য এবং বেবি জানা নামে দুই নার্স। ভ্যাকসিন কেন্দ্র থেকেই নবান্নে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভিডিয়ো কনফারেন্সে যোগ দেন জেলাশাসক ও মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক। সেখানে বছর চল্লিশের শচীনকেও ডেকে নেওয়া হয়। সংবাদমাধ্যমকে শচীন বলেন, ‘‘লকডাউনে সবাই যখন ঘরে, তখনও আবর্জনা পরিষ্কার করেছি ভাইরাসের ভয় না করে। আজও টিকা দেওয়ার সময় কোনও টেনশন হয়নি। প্রথম টিকা নিতে বলায় এক কথায় রাজি হয়ে যাই। এতে যদি ভাল হয়, ক্ষতি কোথায়? বাড়ির লোকেরাও নিশ্চিন্তে থাকতে পারবেন। আমার ভালই লাগছে।’’ চন্দননগর মহকুমা হাসপাতালে টিকা নেন এসিএমওএইচ (চন্দননগর) মহুয়া মহান্তি, হাসপাতাল-সুপার সঞ্জয়কুমার রায়, সহকারী সুপার শান্তনু মুখোপাধ্যায়। জেলাশাসক জানান, ভ্যাকসিন দেওয়ার পরে কারও শরীরে কোনও পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি।

তবে, সব কেন্দ্রে দূরত্ববিধি যথাযথ ভাবে রক্ষিত হয়নি। জেলা হাসপাতালেও দেখা গিয়েছে, টিকা নেওয়ার পরে পাশাপাশি চেয়ারে বসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। কাউকে অবশ্য মাস্ক ছাড়া দেখা যায়নি।

জেলাশাসক জানান, সোম, মঙ্গল, শুক্র, শনি— সপ্তাহে এই চার দিন ভ্যাকসিন দেওয়ার কাজ চলবে। প্রতি কেন্দ্রে দৈনিক একশো জনকে টিকা দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা রাখা হচ্ছে। ১২টি কেন্দ্রে এ দিন চালু হলেও মোট ৮২টি কেন্দ্র ঠিক করা হয়েছে। অন্য কেন্দ্রগুলিতেও ধীরে ধীরে এই কাজ চালু হবে। মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক জানান, প্রথম দিন বর্তমান চিকিৎসকদের পাশাপাশি অবসরপ্রাপ্ত কয়েক জন চিকিৎসকও টিকা নিয়েছেন। নার্স, চিকিৎসক-কর্মী, চতুর্থ শ্রেণির কর্মী, সাফাইকর্মী, অ্যাম্বুল্যান্স চালকেরাও টিকা নেন। যে স্বাস্থ্যকর্মীরা করোনা সংক্রমিত হয়েছেন, তাঁরা প্রথম পর্যায়ের তালিকায় নেই।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Chinsurah jilla Hospital COVID-19 Coronavirus
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE