Advertisement
E-Paper

সেতুর দায়িত্ব নিয়ে জটিলতা, আটকে সংস্কার

হাওড়া-তারকেশ্বর মেন শাখার রেল লাইনের উপর শেওড়াফুলির অদূরে দিল্লি রোডের এই উড়ালপুলের (রেল ওভারব্রিজ) রক্ষণাবেক্ষণের কাজ শেষ কবে হয়েছিল? বলতে পারছেন না প্রশাসনের কর্তারাই

গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ০৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০১:২৫
আশঙ্কা: বিপদবার্তা দিয়েছে প্রশাসনই। ছবি: দীপঙ্কর দে।

আশঙ্কা: বিপদবার্তা দিয়েছে প্রশাসনই। ছবি: দীপঙ্কর দে।

কথায় বলে, ভাগের মা গঙ্গা পায় না। তেমনই হাল হয়েছে হাওড়া-তারকেশ্বর মেন শাখার রেল লাইনের উপরের পিয়ারাপুর সেতুর। এই সেতু কে তৈরি করেছে তার কোনও হদিশই দিতে পারেনি প্রশাসন। ফলে তার দেখভালের দায়িত্ব নিয়ে রেল আর পূর্ত দফতরের মধ্যেও চলেছে দায় ঠেলাঠেলি। আর এ সবের মধ্যে পড়ে বেহাল পড়ে রয়েছে দিল্লি রোডের এই উড়ালপুল।
হাওড়া-তারকেশ্বর মেন শাখার রেল লাইনের উপর শেওড়াফুলির অদূরে দিল্লি রোডের এই উড়ালপুলের (রেল ওভারব্রিজ) রক্ষণাবেক্ষণের কাজ শেষ কবে হয়েছিল? বলতে পারছেন না প্রশাসনের কর্তারাই। পরিস্থিতি বেগতিক বুঝে রেল কর্তৃপক্ষ হুগলি জেলা প্রশাসনকে বিষয়টি লিখিতভাবে জানান। এরপর ওই সেতু দিয়ে ভারী যান চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে প্রশাসন।
কিন্তু সেতুটাই তৈরি করল কে? কারাই বা ওই সেতুর রক্ষণাবেক্ষণের কাজ করবে? সেই প্রশ্নই এখন ঘুরপাক খাচ্ছে রেল আর প্রশাসনের কর্তাদের মধ্যে। যে প্রশ্নের উত্তর বুধবার রাত পর্যন্ত দিতে পারেননি হুগলির জেলাশাসক জগদীশপ্রসাদ মিনা। তাঁর কথায়, ‘‘আমরা জেলার প্রতিটি সেতুর পরিকাঠামো খতিয়ে দেখব। তবে দিল্লি রোডের উপর ওই সেতুটি রেল সংস্কার না করলে আমরা পূর্ত দফতরকে দিয়ে করাব।’’
সেতুটির হাল ঠিক কী রকম?
মাস কয়েক আগে ওই সেতুর ফুটপাতে বড় গর্ত হয়ে গিয়েছিল। সতর্ক হয়ে যাতায়াত না করলে ওই গর্তে পড়লে গন্তব্য একেবারে নীচের রেললাইন। তবে সংবাদপত্রে প্রতিবেদন প্রকাশের পর দায়সারা ভাবে ওই গর্ত বোজায় প্রশাসন। কিন্তু এখন ফের যে কে সেই অবস্থা। এখন ৫০ ফুট লম্বা এবং ২৫ ফুট চওড়া ওই সেতুর উপরের রেলিংয়ের বড় বড় ফাটল। চাঙড়ও খসে পড়ছে।
মাঝেরহাট সেতু ভেঙে পড়ার পর প্রশ্ন উঠেছে পিয়ারাপুরের এই উড়ালপুলের নিরাপত্তা নিয়ে। দিল্লি রোডে বড় দশ চাকার ট্রাক চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এখন ওই পথে ছোট গাড়ি চলাচল করছে। কিন্তু সেতুর যা হাল এর মাঝে কোনও দুর্ঘটনা ঘটে গেলে তার দায় কে নেবে? সেই প্রশ্ন তুলেছেন নিত্যযাত্রীরা।
দিল্লি রোড লাগোয়া বড়বেলু এলাকায় হিমঘর রয়েছে অশোক কোলের। তিনি বলেন,‘‘ওই সেতুর এমন হাল, হিমঘরে আমাদের মালপত্র আসতে সমস্যা হচ্ছে। ঘুরপথে তেল পুড়িয়ে নিত্য যানজটে পড়তে হচ্ছে।’’ প্রভাস রুইদাস পিয়ারাপুর এলাকার বাসিন্দা। তিনি বলেন, ‘‘বড় গাড়ি গেলে সেতু কাঁপত। এখন আপাতত ছোট গাড়ি যাচ্ছে বলে কিছুটা রেহাই।’’
রেলের সেতু নির্মাণের সঙ্গে যুক্ত এক প্রবীণ বাস্তুকারের কথায়, ‘‘সেতু পুরনো হয়ে গেলে ছ’মাস থেকে এক বছর অন্তর নিয়মিত পরীক্ষা করা উচিত। চোখে দেখা এবং পরিকাঠামোগত দুই-ই পরীক্ষাই জরুরি।’’ কিন্তু যে সেতুর মালিকানা নিয়েই প্রশ্ন ঝুলে রয়েছে তার কোনও কিছুই নিয়ম করে হয় না বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন।
রেলের আরওবিগুলোর রক্ষণাবেক্ষণের নির্দিষ্ট বিভাগ রয়েছে। সেই বিভাগেরই পদস্থ কর্তা সুশীল কুমার বর্মা বলেন, ‘‘রেল কেন ওই আরওবি-র কাজ করবে? ওটা তো রেলের নয়। যেহেতু নীচ দিয়ে ট্রেন চলে, আমরা তাই হুগলির জেলাশাসককে ইতিমধ্যেই পুরো বিষয়টি জানিয়েছি। ওই সেতুর সংস্কার প্রয়োজন। আমরা জানানোর পরই, ওই পথে বড় ট্রাক চলাচল বন্ধ
করা হয়।’’
আপাতত রেল ও জেলা প্রশাসনের চাপান-উতোরেই ঝুলে মানুষের নিরাপত্তা। এখন দেখার, সেতু সংস্কার কবে হয়।

Uralpool Bridge Collapse Administration
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy