Advertisement
E-Paper

দুই দফতরের কাজিয়া, থমকে রাস্তা সংস্কার

বিদ্যুতের খুঁটি কে সরাবে তা নিয়েই কাজিয়া। বিদ্যুৎ দফতরের দাবি, ‘খুঁটি সরানোর খরচ দিতে হবে পূর্ত দফতরকে’। আর পূর্ত দফতরের যুক্তি, ‘অনুমতি না নিয়েই তাদের জায়গায় খুঁটি পুঁতেছে বিদ্যুৎ দফতর। তাই বিদ্যুৎ দফতরকেই খুঁটি সরানোর খরচ দিতে হবে’।

পীযূষ নন্দী

শেষ আপডেট: ০৫ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০২:০৫
রাস্তার ধারে বসানো এই বিদ্যুতের খুঁটিই সমস্যার মূলে। আরামবাগের পল্লিশ্রীতে। ছবি: মোহন দাস।

রাস্তার ধারে বসানো এই বিদ্যুতের খুঁটিই সমস্যার মূলে। আরামবাগের পল্লিশ্রীতে। ছবি: মোহন দাস।

বিদ্যুতের খুঁটি কে সরাবে তা নিয়েই কাজিয়া।

বিদ্যুৎ দফতরের দাবি, ‘খুঁটি সরানোর খরচ দিতে হবে পূর্ত দফতরকে’। আর পূর্ত দফতরের যুক্তি, ‘অনুমতি না নিয়েই তাদের জায়গায় খুঁটি পুঁতেছে বিদ্যুৎ দফতর। তাই বিদ্যুৎ দফতরকেই খুঁটি সরানোর খরচ দিতে হবে’। দুই সরকারি দফতরের এই কাজিয়ায় থমকে গিয়েছে রাস্তা সংস্কার। ঘটনাটি আরামবাগ মহকুমার।

মহকুমা পূর্ত দফতরের (সাধারণ) সহকারী বাস্তুকার নিরঞ্জন ভড়ের অভিযোগ, ‘‘সরকারি জায়গায় যত্রতত্র পোঁতা বিদ্যুতের খুঁটি সরানোর জন্য নোটিস পাঠানো হচ্ছে। কিন্তু বিদ্যুৎ বণ্টন কোম্পানি তা সরাচ্ছে না। এর ফলে রাস্তার কাজ আটকে আছে।’’ বিদ্যুৎ বণ্টন কোম্পানির আরামবাগ শাখার ভারপ্রাপ্ত ডিভিশনাল ম্যানেজার শ্রীমন্তকুমার চট্টোপাধ্যায়ের দাবি, ‘‘খুঁটি সরানোর জন্য খরচের হিসাব পাঠানো হয়েছে। কিন্তু পূর্ত দফতর কিছু কারণ দেখিয়ে তা ফেরত পাঠিয়েছে।’’

গত তিন মাস ধরে দুই দফতরের এমন টানাপড়েনে শিকেয় মহকুমায় রাস্তা সারানোর কাজ। আরামবাগ শহর তথা দক্ষিণবঙ্গের গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা লিঙ্ক রোড, আরামবাগ-বর্ধমান রোডের পল্লিশ্রী এলাকা, আরামবাগ-তারকেশ্বর রোডের হরাদিত্য এবং সাঁওতা এলাকা, আরামবাগ-কোতলপুর রোডের বেঙ্গাই ও মদিনা এলাকা এবং পুরশুড়ার সোদপুর থেকে খুশিগঞ্জ পর্যন্ত ১১ কিলোমিটার নতুন রাস্তার কাজ থমকে গিয়েছে। এতে ভোগান্তি হচ্ছে সাধারণ মানুষের।

পূর্ত দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, আরামবাগ লিঙ্ক রোডের ক্ষেত্রে বিদ্যুৎ দফতর তাদের খুঁটি না সরানোয় ফুটপাথ এবং নিকাশি কাজ ফেলে রাখতে হয়েছে। আরামবাগ-বর্ধমান রোডে পল্লিশ্রী এলাকায় মোট ৭২টি খুঁটি সরানোর প্রয়োজন। সেই কাজ-সহ হরাদিত্য, সাঁওতা, কুলকি, মদিনা প্রভৃতি চালু সব কাজই থমকে আছে। পুরশুড়ার সোদপুর থেকে খুশিগঞ্জ পর্যন্ত ১১ কিলোমিটার রাস্তার জন্য ১৪ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে। টেন্ডার প্রক্রিয়াও শেষ। কিন্তু ৭০টি বিদ্যুতের খুঁটি না সরালে রাস্তার কাজই শুরু করা যাচ্ছে না। রাস্তার কাজ শুরু করতে গোটা মহকুমাজুড়ে অবিলম্বে প্রায় ২৫০ খুঁটি সরানোর প্রয়োজন।

সম্প্রতি পল্লিশ্রী এলাকার ৭২টা খুঁটি সরানোর জন্য বিদ্যুৎ বণ্টন কোম্পানি ৩৩ লক্ষ টাকা দাবি করেছে পূর্ত দফতরের কাছে। পূর্ত দফতর সেই হিসাব বিদ্যুৎ বণ্টন কোম্পানির কাছে ফেরত পাঠিয়ে খুঁটি পোঁতার জন্য অনুমতিপত্র (এনওসি) চেয়েছে। বিদ্যুৎ বণ্টন কোম্পানির আরামবাগ ডিভিশন্যাল ম্যানেজার শ্রীমন্তবাবু বলেন, ‘‘দফতরের নিয়ম অনুযায়ী খুঁটি সরানোর খরচ চাওয়া হয়েছে পূর্ত দফতরকে। তারা খুঁটি পোঁতার অনুমতিপত্র দেখতে চেয়ে তা ফেরত পাঠিয়েছে। জনসাধারণকে বিদ্যুৎ পরিষেবা দেওয়ার ক্ষেত্রে অনুমতি নিতে হবে বলে আমার জানা নেই। বিষয়য়ি সমাধানের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নজরে আনা হয়েছে।’’

পূর্ত দফতরের মহকুমা সহকারী বাস্তুকার নিরঞ্জনবাবুর দাবি, ‘‘রাস্তাও জনসাধারণের পরিষেবার জন্যই। এক দফা খুঁটি সরানোর খরচ বহন করেছি আমরা। তারপরেও অনুমতি ছাড়া মাস দেড়েক ধরে যেখানে সেখানে বিদ্যুতের খুঁটি পোঁতা হয়েছে। ওই সব খুঁটি সরাতে ফের খরচ চাইছে তারা। সরকারি অর্থের ওই অপচয়টাই রুখতে চাইছি আমরা।’’

দুই দফতরের কাজিয়ায় ডামাডোল মিটে ফের কবে রাস্তার কাজ শুরু হবে, তারই অপেক্ষায় মহকুমার মানুষ।

Conflict PWD Power dept Work stopped
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy