Advertisement
০৪ মে ২০২৪
পড়ুয়াদের দুর্ভোগ

নির্দেশ সত্ত্বেও শুরু হয়নি স্কুলঘর তৈরি

সাত বছর ধরে টাকা এসে পড়ে রয়েছে। জমি হাতে। মাস তিনেক আগে কলকাতা হাইকোর্টও স্কুলভবন তৈরির নির্দেশ দিয়েছে। কিন্তু বাগনানের চন্দ্রভাগ শ্রীকৃষ্ণ প্রাথমিক স্কুলের ভবন তৈরির কাজ এখনও শুরুই হল না। সেখানকার পড়ুয়াদের পঠনপাঠন চলছে পাশের চন্দ্রভাগ বালিকা বিদ্যালয়ে।

মনিরুল ইসলাম
বাগনান শেষ আপডেট: ০৬ জুন ২০১৫ ০২:২৬
Share: Save:

সাত বছর ধরে টাকা এসে পড়ে রয়েছে। জমি হাতে। মাস তিনেক আগে কলকাতা হাইকোর্টও স্কুলভবন তৈরির নির্দেশ দিয়েছে। কিন্তু বাগনানের চন্দ্রভাগ শ্রীকৃষ্ণ প্রাথমিক স্কুলের ভবন তৈরির কাজ এখনও শুরুই হল না। সেখানকার পড়ুয়াদের পঠনপাঠন চলছে পাশের চন্দ্রভাগ বালিকা বিদ্যালয়ে।

প্রধান শিক্ষিকা অলোকা মণ্ডলের দাবি, ‘‘আমি অসুস্থ। সেই কারণে দায়িত্ব নিয়ে কাজটি করাতে পারব না বলে ব্লক শিক্ষা দফতরকে জানিয়েছি। তার পরেও কেন কাজ শুরু হয়নি বলতে পারব না।’’ বাগনান-২ ব্লকের বিডিও প্রণব মণ্ডল বলেন, ‘‘প্রধান শিক্ষিকার চিঠি পেয়েছি। আমাদের তরফে যতটা সাহায্য করা দরকার করব।’’ বাগনান দক্ষিণ চক্রের অবর স্কুল পরিদর্শক সন্তু ফৌজদার বলেন, ‘‘প্রধান শিক্ষিকার আবেদনটি কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি। তাঁদের নির্দেশ পেলেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেব।’’

যদিও হাওড়া জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান পুলক দেব বলেন, ‘‘এমন কোনও বিষয় জানা নেই। প্রধান শিক্ষিকা বা এসআই কারও তরফ থেকে বিষয়টি জানানো হয়নি। জানালে ব্যবস্থা নিতাম। আদালতের নির্দেশ মতোই কাজ হবে।’’ পুলকবাবু স্কুল কর্তৃপক্ষের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন।

এ দিকে, দীর্ঘদিন ধরেই চন্দ্রভাগ বালিকা বিদ্যালয়ে চলছে প্রাথমিক স্কুল। ২০০৭ সালে স্থানীয় কয়েক জন বাসিন্দা সাত শতক জমি স্কুলভবন তৈরির জন্য দান করেন। প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ ভবন তৈরির অনুমতি দেয়। সর্বশিক্ষা মিশন ও বিধায়ক তহবিল— সব মিলিয়ে প্রায় সাড়ে তিন লক্ষ টাকা বরাদ্দ হয়। কিন্তু গ্রামবাসীর একাংশ ও চন্দ্রভাগ বালিকা বিদ্যালয়ের পরিচালন সমিতির একাংশও ওই দানের জমিটি স্কুল ভবন তৈরির জন্য উপযুক্ত নয় বলে আপত্তি তোলেন। তাঁরা প্রাথমিক স্কুলের নামে অন্য জমি বরাদ্দ করে প্রাথমিক শিক্ষা সংসদে আবেদন করেন। কিন্তু সেই আবেদন মানা হয়নি। শিক্ষা সংসদ পুরনো দানের জমিতেই স্কুল ভবন গড়ার নির্দেশ দেয়।

কিন্তু সেই নির্দেশ মানতে পারেননি আলাদা জমি দান করতে ইচ্ছুক গ্রামবাসীদের ও বালিকা বিদ্যালয়ের পরিচালন সমিতির একাংশ। তাঁরা আদালতের দ্বারস্থ হন। গত ১৮ ফেব্রুয়ারি হাইকোর্ট অবিলম্বে পুরনো জমিতেই ৬ মাসের মধ্যে স্কুলভবন তৈরির নির্দেশ দেয়। কিন্তু নির্দেশের পরে তিন মাস কেটে গেলেও কাজ শুরু হয়নি। ফলে ক্ষোভ বাড়ছে জমিদাতাদের মধ্যে। তাঁদেরই এক জন গৌর ঘোষ বলেন, ‘‘স্কুলের জন্য আমরা জমি দিলাম। এলাকার কিছু লোক বাধা দিতে উঠেপড়ে লাগল। পরে আদালত নির্দেশ দিলেও আবার প্রশাসনের উদ্যোগ নেই।’’ অভিভাবক প্রবীর চট্টোপাধ্যায়, জগবন্ধু সরকাররা বলেন, ‘‘বৈধ জায়গাতেই স্কুলভবন হোক। প্রশাসন সহায়তা করুক। ছেলেমেয়েদের সকালে স্কুলে পাঠাতে নানা সমস্যা হচ্ছে। বিশেষ করে শীতকালে ভোরে উঠতে তারা কষ্ট পাচ্ছে।’’

চন্দ্রভাগ বালিকা বিদ্যালয়ের সম্পাদক স্বপন ভৌমিক আদালতের নির্দেশ নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তিনি বলেন, ‘‘স্কুলের কাছে যে জমি রয়েছে, সেখানেই প্রাথমিক স্কুল ভবন হলে ভাল হত। কিন্তু যেখানে স্কুলটি করার চেষ্টা হচ্ছে সেটা কিছুটা দূরে। তাই আপত্তি উঠেছিল।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

bagnan village bagnan school building manirul islam
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE