Advertisement
E-Paper

জ্বরে মৃত্যু, প্রশ্নে সচেতনতা

করোনা সংক্রমণ রুখতে মাস্ক পরা, দূরত্ব-বিধি বজায় রাখা এবং স্যানিটাইজ়ার ব্যবহারে জোর দিচ্ছে সরকার। জ্বর, সর্দি-কাশি বা শ্বাসকষ্টের মতো উপসর্গ থাকলে লালারসের নমুনা পরীক্ষাও বাধ্যতামূলক। কিন্তু এত কিছুর পরেও এক শ্রেণির মানুষের হুঁশ ফিরছে না।

নুরুল আবসার ও সুব্রত জানা

শেষ আপডেট: ১৮ জুলাই ২০২০ ০৫:২৮
প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

করোনা সংক্রমণ রুখতে মাস্ক পরা, দূরত্ব-বিধি বজায় রাখা এবং স্যানিটাইজ়ার ব্যবহারে জোর দিচ্ছে সরকার। জ্বর, সর্দি-কাশি বা শ্বাসকষ্টের মতো উপসর্গ থাকলে লালারসের নমুনা পরীক্ষাও বাধ্যতামূলক। কিন্তু এত কিছুর পরেও এক শ্রেণির মানুষের হুঁশ ফিরছে না।

জ্বরে আক্রান্ত হয়ে বৃহস্পতিবার শ্যামপুর-২ ব্লকের আন্টিলাপাড়ার বছর পঞ্চাশের এক প্রৌঢ়ের মৃত্যুতে সেই সচেতনতার প্রশ্নটিই সামনে এল। পরিবারের সকলের জ্বর হলেও ওই প্রৌঢ় এবং তাঁর ছেলে লালারসের নমুনা পরীক্ষা করাননি। বাকি চার জন করিয়েছিলেন। তাঁদের মধ্যে প্রৌঢ়ের স্ত্রীর রিপোর্ট পজ়িটিভ আসায় তাঁকে উলুবেড়িয়া ইএসআই হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। গ্রামবাসীর দাবি, প্রৌঢ়ের জ্বর ছাড়াও সর্দি-কাশি এবং শ্বাসকষ্ট— করোনার সব উপসর্গই ছিল। ওই ভাইরাসেই মৃত্যু হয়েছে, এই সন্দেহে শুক্রবার ওই গ্রামের বাসিন্দারা প্রৌঢ়ের শেষকৃত্যে যোগ দিতে চাননি। দেহ দীর্ঘক্ষণ বাড়িতেই পড়ে থাকে। শেষে পুলিশ এসে দেহ ময়নাতদন্তের জন্য উলুবেড়িয়া হাসপাতালে পাঠায়।

জ্বরে আক্রান্ত ওই পরিবারের বাকিরা গত মঙ্গলবার বাড়িতে আসা আশাকর্মীদের কাছে পরীক্ষার জন্য লালারসের নমুনা দিলেও ওই প্রৌঢ় এবং তাঁর ছেলে দেননি কেন?

ছেলের দাবি, ‘‘যে দিন আশাকর্মীরা বাড়িতে এসেছিলেন, সে দিন বাবা জ্বরের জন্য বাগনানের একটি নার্সিংহোমে ভর্তি ছিলেন। আমিও বাবার সঙ্গে ছিলাম। তাই পরীক্ষা করানো হয়নি। তবে, ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে গিয়ে আমি করাব।’’

মুখে দাবি করলেও মৃত প্রৌঢ় যে নার্সিংহোমে ভর্তি ছিলেন, এ সংক্রান্ত কোনও নথিপত্র ওই পরিবার দেখাতে পারেনি বলে দাবি করেছেন ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিক অপূর্ব মণ্ডল। তিনি বলেন, ‘‘করোনাতে প্রৌঢ়ের মৃত্যু হয়েছে কিনা বলতে পারব না। নার্সিংহোম থেকে ফিরলেই যাতে তিনি এবং ছেলে লালারসের নমুনা পরীক্ষা করিয়ে নেন সেটা ওই পরিবারকে বলা হয়েছিল। কিন্তু তার আগেই প্রৌঢ় মারা গেলেন। বারবার বলা সত্ত্বেও তাঁর ছেলেও এখনও পরীক্ষা করাননি। অথচ, তাঁরও জ্বরের ইতিহাস আছে।’’

ব্লক প্রশাসনের এক পদস্থ কর্তার বক্তব্য, ‘‘সরকারের তরফ থেকে সব রকম চেষ্টা সত্ত্বেও কিছু মানুষ করোনাকে গুরুত্ব দিচ্ছেন না। আন্টিলাপাড়ার ঘটনাটি তারই প্রমাণ।’’স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ওই প্রৌঢ় কলকাতায় একটি রেস্তরাঁ চালাতেন। ছেলেও সঙ্গে থাকতেন। জ্বর হওয়ায় দিনদশেক আগে দু’জনেই ফিরে আসেন। পরিবারের বাকিরাও জ্বরে পড়েন। করোনা সংক্রমণ বাড়তে থাকায় এই ব্লকে স্বাস্থ্য দফতরের পক্ষ থেকে আশাকর্মীরা প্রতিদিন বাড়ি বাড়ি ঘুরে জ্বরের তথ্য সংগ্রহ করছেন। আক্রান্তদের লালারসের নমুনাও নেওয়া হচ্ছে। সেই কাজেই গত মঙ্গলবার তাঁরা ওই বাড়িতে যান। কিন্তু প্রৌঢ় এবং তাঁর ছেলে বাড়িতে ছিলেন না।

বৃহস্পতিবার বিকেলে জ্বর বেড়ে যাওয়ায় প্রৌঢ় গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। তাঁকে ঝুমঝুমিতে ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হলে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা। দেহ বাড়িতে ফিরিয়ে আনেন পরিবারের লোকজন।

Coronavirus lockdown
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy