Advertisement
২৩ মে ২০২৪
Coronavirus

শহরের ছোঁয়াচ বাঁচিয়ে রাখাই চ্যালেঞ্জ হাওড়ার

প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, হাওড়া শহরে আক্রান্তের সংখ্যা সব থেকে বেশি।

নজরদারি: পুলিশের নাকা উলুবেড়িয়ার রাজাপুরে। ছবি: সুব্রত জানা

নজরদারি: পুলিশের নাকা উলুবেড়িয়ার রাজাপুরে। ছবি: সুব্রত জানা

নুরুল আবসার
উলুবেড়িয়া শেষ আপডেট: ২৩ এপ্রিল ২০২০ ০৪:৩৫
Share: Save:

করোনা সংক্রমণের ক্ষেত্রে জেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য দফতরের কাছে ক্রমশ মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে হাওড়া শহর। তবে গ্রামীণ এলাকায় (যার বেশিরভাগ পড়ে উলুবেড়িয়া মহকুমার মধ্যে) করোনার আঁচ এখনও লাগেনি। এই পরিস্থিতিতে এই মহকুমাকে করোনা-মুক্ত রাখাই চ্যালেঞ্জ জেলা প্রশাসনের কাছে।

প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, হাওড়া শহরে আক্রান্তের সংখ্যা সব থেকে বেশি। এ ছাড়া সাঁকরাইল, ডোমজুড় এবং জৎবল্লভপুর— হাওড়া সদর মহকুমার এই তিনটি ব্লক মিলিয়েও কয়েকজন আক্রান্তের সন্ধান মিলেছে। অন্য দিকে উলুবেড়িয়া মহকুমার অধীনে থাকা ৯ টি ব্লক এবং উলুবেড়িয়া পুরসভা এলাকা এখনও অবধি করোনামুক্ত। বাগনান-২ নম্বর ব্লকে একজন করোনা আক্রান্তের সন্ধান মিলেছিল। পরে তিনি সুস্থ হয়ে যান।

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়েছে, আগামী দিনগুলি খুব গুরুত্বপূর্ণ। করোনা-সংক্রমণ রুখতে আরও জোরদার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। শহর আক্রান্ত হলেও গ্রামীণ এলাকায় সংক্রমণ না ছড়ানোকে নিজেদের সাফল্য বলেই দাবি জেলা প্রশাসনের।

জেলা প্রশাসনের আধিকারিকদের একটা বড় অংশ জানিয়েছেন, প্রথম থেকেই বেশ কিছু ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল স্বাস্থ্য দফতরের সঙ্গে আলোচনা করে। ভিন রাজ্য বা বিদেশ থেকে কেউ এলে যাতে তিনি স্বাস্থ্য পরীক্ষা করিয়ে নিভৃতবাসে থাকেন, সেটা নিশ্চিত করা
হয়েছে। গ্রামবাসীরাও এক্ষেত্রে সচেতনতার পরিচয় দিয়েছেন। বাইরে থেকে কেউ এলে আশা কর্মীদের খবর দেওয়া, নিভৃতবাসের নিয়ম না মানলে স্বাস্থ্য দফতর ও পুলিশকে খবর দেওয়া এ সব বিষয়ে কড়া নজর ছিল এলাকাবাসীর।

ফলে বাইরে থেকে আসা কোনও ব্যক্তি অযথা ঘুরে বেড়াতে পারেননি। যারা ঘরে নিভৃতবাসের নিয়ম মানেননি তাঁদের পুলিশ নিয়ে গিয়ে রেখেছে হাসপাতালে। সেখানে কোনও সন্দেহজনক উপসর্গ দেখা গেলে পাঠানো হয়েছে নিভৃতবাসে। কোয়রান্টিনে থাকাকালীন কারও শরীরে সন্দেহজনক উপসর্গ দেখা দিলে তাঁকে পাঠানো হয়েছে আইসলেশন হাসপাতালে। বিভিন্ন সরকারি হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্রে আলাদা ফিভার ক্লিনিক খোলা হয়েছে।

সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার উপরেও গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। জনবহুল এলাকার বাজার-হাট সরানো হয়েছে অনেক বড় জায়গায়। প্রথম দিকে ঢিলে দিলেও পরের দিকে রাস্তায় বিনা কারণে ঘোরাঘুরি করতে দেখলে পুলিশ কড়া ব্যবস্থা নিয়েছে। বহু লোককে গ্রেফতার করেছে, থানায় ধরে এনে মুচলেকা লিখিয়েছে, মোটরবাইক বাজেয়াপ্ত করেছে। ফলে রাস্তায় ভিড় কমে গিয়েছে।

জেলা প্রশাসনের এক কর্তা জানান, হাওড়া শহর থেকে আক্রান্তের আত্মীয়রা যাতে উলুবেড়িয়া এলাকায় না আসেন, সেটা নজরে রাখা হয়েছে। উলুবেড়িয়া মহকুমার সীমানায় নজরদারি জোরদার করার জন্য পুলিশকে বলা হয়েছে। প্রতিটি হাসপাতালে ফিভার ক্লিনিকে থার্মাল স্ক্রিনিং করা হচ্ছে।

এই সব ব্যবস্থা তো হাওড়া শহরেও করা হয়েছিল। তার পরেও সেখানে করোনা রোখা গেল না কেন?

জেলা স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্তার উত্তর, হাওড়া শহর এলাকা ঘন জনবসতিপূর্ণ। ফলে করোনা প্রতিরোধে যেটা প্রধান অস্ত্র সেই শারীরিক দূরত্ব বহু ক্ষেত্রে বজায় রাখা যায়নি। উলুবেড়িয়ার জনবসতির ঘনত্ব অনেক কম। তবে এটা নিয়ে আত্মসন্তুষ্টিতে ভুগতে নারাজ জেলা প্রশাসন ও জেলা স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা। এতটুকু গাফিলতিও যে প্রাণঘাতী হতে পারে, সে বিষয়ে তাঁরা সতর্ক।

(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE