চন্দ্রকোনা রোডের সভায় দলীয় প্রার্থী কালীপদ সরেনের সঙ্গে অভিষেক। নিজস্ব চিত্র।
ভোট বৈতরণী পেরোতে তৃণমূলের অন্যতম ভরসা ভরসা লক্ষ্মীর ভান্ডার। ফের বুঝিয়ে দিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সুর চড়ালেন হাই কোর্টের ওবিসি শংসাপত্র নিয়ে দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে। মনে করালেন বাম আমলের হিংসার কথাও।
বুধবার বিকেলে শালবনি বিধানসভার চন্দ্রকোনা রোডে ঝাড়গ্রাম কেন্দ্রে দলের প্রার্থী কালীপদ সরেনের সমর্থনে জনসভা করেন অভিষেক। মাঠের একাংশে করা হয়েছিল হেলিপ্যাড। সভায় ছিলেন সদ্য তৃণমূলে যোগ দেওয়া ঝাড়গ্রামের সাংসদ কুনার হেমব্রম। শান্তিনগর কলোনির মাঠের সেই সভায় মহিলাদের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। অভিষেক বলেন, "শালবনিতে যখন আমাদের দলের অধিবেশন হয়, তখন দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এসেছিলেন। সেইসময় মহিলারা বলেছিলেন লক্ষ্মীর ভান্ডারের ৫০০ টাকায় চলে না। তাই আমরা ঠিক করি এটা বাড়াতে হবে।" বিজেপি ক্ষমতায় এলে তিন মাসের মধ্যে লক্ষ্মীর ভান্ডার বন্ধ করার পরিকল্পনা করছে বলেও দাবি করেন। কোচবিহারের এক বিজেপি নেত্রীর সেই সংক্রান্ত বক্তৃতার অডিয়োও শোনান তিনি। মহিলাদের উদ্দেশ্যে বলেন, "আপনারা চিন্তা করছেন? ভয় পেয়েছেন? ভয় বা চিন্তা করবেন না, জিতব তো আমরা। লক্ষ্মীর ভান্ডারকে বুক দিয়ে আগলে রাখব। আমাদের গ্যারান্টি।" আবাস যোজনার প্রসঙ্গও তোলেন। তাঁকে বলতে শোনা যায়, "৪ তারিখ ফল বেরোলে আমাদের কালীপদ সরেন জিতবেন। তার ৬ মাসের মধ্যে আবাস যোজনায় যাঁদের তালিকায় নাম আছে, তাঁদের আবাস তৈরির প্রথম কিস্তির টাকা ঢুকবে।"
২০১০ সালের পর থেকে পাওয়া রাজ্যের সমস্ত ওবিসি সার্টিফিকেট বুধবার বাতিল করে দিয়েছে কলকাতা হাই কোর্ট। সেই নিয়ে সরব হয়ে অভিষেক অভিযোগ করেন, "হাই কোর্টের একাংশকে সঙ্গে নিয়ে এই ভারতীয় জনতা পার্টি বাংলার মানুষকে বঞ্চিত করছে। তার উচিত শিক্ষা দিতে হবে। ক্ষমতায় আসার আগেই বিজেপির এই রূপ! আমরা এসসি - এসটি-ওবিসি অধিকার কাড়তে দেবো না। এটা গ্যারান্টি।" দাবি করেন, বিজেপি যদি জেতে তাহলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হবে এসসি-এসটিদের। আবার অভিন্ন দেওয়ানি বিধি আনতে চলেছে। এতে সংরক্ষণ ব্যবস্থাই তুলে দেবে। গড়বেতা, শালবনিতে বাম আমলে রাজনৈতিক হিংসার কথাও মনে করিয়ে অভিষেক দাবি করেন, ‘‘একসময় সিপিএমের হার্মাদদের রাজত্ব ছিল, মানুষ সুশান্ত ঘোষদের অত্যাচারের অবসান ঘটিয়েছেন ২০১১ সালে। তারপর থেকে শান্তি ও উন্নয়ন বজায় আছে।"
বিকেল তিনটায় সভার সময় নির্দিষ্ট থাকলেও, অভিষেকের কপ্টার নামে তার ঘন্টা দুয়েক পরে। অভিষেক মঞ্চে ওঠার আগে বক্তৃতা করেন বিদায়ী সাংসদ কুনার। তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পরে এটিই ছিল তাঁর প্রথম বক্তৃতা। তিনি বলেন, "বিজেপি জাতিসত্তা মানতে চায়নি, হিন্দুত্ব ছাড়া সেকেন্ড অপশন নেই ওদের। বিজেপি ইউনিফর্ম সিভিল কোড চালু করলে আদিবাসীদের অস্তিত্ব চলে যাবে। অন্যদিকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জঙ্গলমহলে মাওবাদী সমস্যা মিটিয়ে শান্তি ও উন্নয়ন করেছেন।" অভিষেককে বিঁধে সিপিএমের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সম্পাদক সুশান্ত ঘোষ বলেন, "যাদের শূন্য বলেন, দূরবীন দিয়ে দেখার কথা বলেন ওঁনার দলের নেত্রী তাদের নিয়ে অত চিন্তা কেন?" বিজেপির রাজ্য কমিটির সদস্য ধীমান কোলের দাবি, "হারার আতঙ্কে তৃণমূল এখন অসংলগ্ন কথা বলছে।"
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy