Advertisement
E-Paper

পাঠ্যক্রমে বদল হলেও বেহাল ল্যাবরেটরি, শঙ্কায় শিক্ষকেরা

দু’বছর হল উচ্চমাধ্যমিক স্তরে আমুল বদলেছে পাঠ্যক্রম। কিন্তু তার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে বদলায়নি জেলার স্কুল ল্যাবরেটরিগুলির পরিকাঠামো। কয়েকটি স্কুলের প্রধান শিক্ষকদের আক্ষেপ, ল্যাবরেটরিতে পর্যাপ্ত পরিকাঠামো না থাকায় এ বার উচ্চমাধ্যমিকে ফল তুলনায় খারাপ হয়েছে।

অভিষেক চট্টোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ১৩ জুলাই ২০১৫ ০১:১৯

দু’বছর হল উচ্চমাধ্যমিক স্তরে আমুল বদলেছে পাঠ্যক্রম। কিন্তু তার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে বদলায়নি জেলার স্কুল ল্যাবরেটরিগুলির পরিকাঠামো। কয়েকটি স্কুলের প্রধান শিক্ষকদের আক্ষেপ, ল্যাবরেটরিতে পর্যাপ্ত পরিকাঠামো না থাকায় এ বার উচ্চমাধ্যমিকে ফল তুলনায় খারাপ হয়েছে। জেলা স্কুল শিক্ষা দফতরের অবশ্য বক্তব্য, জেলার স্কুলগুলির ল্যাবরেটরির উন্নয়নে ২ লক্ষ টাকা করে অনুদান দেওয়া হয়েছে। যদিও অনেক স্কুলেরই অভিযোগ, তারা সেই অনুদান পায়নি।

মাধ্যমিকের পাঠ্যক্রম অনুযায়ী প্র্যাকটিক্যাল ক্লাসের বিশেষ গুরুত্ব না থাকলেও একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণিতে বিজ্ঞান বিষয়টি পুরোটাই ল্যাবরেটরি নির্ভর। ভাল ফল করতে পড়ুয়াদের কাছে প্র্যাকটিক্যাল ক্লাসের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বিভিন্ন স্কুলের বিজ্ঞান শিক্ষকদের বক্তব্য, ল্যাবরেটরির যন্ত্রপাতি পুরনো হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তার কার্যকারিতা কমে। এছাড়াও নতুন সিলেবাস অনুযায়ী প্র্যাকটিক্যাল ক্লাসের জন্য অনেক নতুন যন্ত্রপাতি কেনা প্রয়োজন। কিন্তু টাকা না থাকায় অনেক প্রয়োজনীয় যন্ত্র ও কেমিক্যাল কেনা আটকে যাচ্ছে। যার প্রভাব পড়ছে ছাত্রছাত্রীদের পঠনপাঠনে। আধুনিক যন্ত্রপাতি না থাকায় দুর্ঘটনার আশঙ্কাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।

সমস্যার কথা স্বীকার করে হাওড়া জেলা স্কুল শিক্ষা দফতরের উচ্চপদস্থ এক কর্তা জানান, ল্যাবরেটরির পরিকাঠামোর উন্নয়নে যে সব স্কুল অনুদান পাননি তারা আমাদের কাছে আবেদন করতে পারে। নতুন পাঠ্যক্রমের খুঁটিনাটি নিয়ে শিক্ষকদের প্রশিক্ষণ শিবির করার বিষয়ে আলোচনা চলছে।

বছর কয়েক আগেও একাদশ শ্রেণির বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হওয়ার জন্য ছাত্রছাত্রীদের উৎসাহ থাকত কলা কিংবা বাণিজ্য বিভাগের থেকে তুলনায় বেশি। কিন্তু সম্প্রতি জেলার বেশ কয়েকটি স্কুলে এর উল্টো প্রবণতা দেখা গিয়েছে। আমতার রসপুর হাইস্কুলের বিজ্ঞান বিভাগে এ বার ৯ জন পড়ুয়া ভর্তি হয়েছে। গতবার এই সংখ্যা ছিল ১৫। ডোমজুড় ঝাঁপড়দহ ডিউক ইনস্টিটিউশনে এ বার বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হয়েছে ৫০ জন। গতবার সংখ্যাটা ছিল ৬৮। আন্দুল এইচ সি স্কুলে এ বার ৩৬ জন পড়ুয়া ভর্তি হয়েছে। গত বছরের চেয়ে এ বার ১৪ জন কম। ডোমজুড় কেশবপুর হাইস্কুলে রসায়ন ও কম্পিউটার সায়েন্সের প্রাথমিক পরিকাঠামো না থাকায় অনুমোদন থাকা সত্ত্বেও বিজ্ঞান বিভাগ শুরুই করতে পারেননি স্কুল কর্তৃপক্ষ। তাঁদের বক্তব্য, প্রয়োজনীয় শিক্ষক নেই। ল্যাবরেটরির পরিকাঠামোরও প্রভূত উন্নতি দরকার। এই অবস্থায় বিজ্ঞান বিভাগ চালু করে দিলে ছাত্রছাত্রীদের প্রতি বঞ্চনা করা হবে।

ঝাঁপড়দহ ডিউক ইনস্টিটিউশনের প্রধান শিক্ষক শ্যামসুন্দর দত্তর কথায়, ‘‘একটি ল্যাবরেটরিতে প্রতিটি যন্ত্রের অন্তত দু’টি করে সেট থাকা উচিত। তাতে সব পড়ুয়া বিষয়টি হাতে কলমে শিখতে পারবেন। কিন্তু আমাদের স্কুলের স্কুল ল্যাবরেটরিতে কয়েকটি প্রয়োজনীয় যন্ত্রই নেই।’’ ডোমজুড়ের এই স্কুলটি ল্যাবরেটরির সরঞ্জাম কেনার জন্য কোনও অনুদান পায়নি। একই সমস্যা আন্দুল এইচ সি স্কুলে। প্রধান শিক্ষক কুন্তল সিংহ বলেন, ‘‘সরকারি অনুদান না পেয়ে স্কুল তহবিল ও পড়ুয়াদের মাইনের টাকায় ল্যাবরেটরির কিছু যন্ত্রপাতি কেনা হয়েছে। তবে সেটাও যথেষ্ট নয়। ল্যাবরেটরির নিরাপত্তার প্রশ্নও রয়েছে। বাধ্য হয়েই অনেক প্র্যাকটিক্যাল ক্লাস করা যাচ্ছে না। যার ফলে এ বছর উচ্চ মাধ্যমিকে বিজ্ঞান বিভাগের ফল তুলনায় খারাপ হয়েছে।’’

আমতার রসপুর হাইস্কুলের প্রধানশিক্ষক পিন্টু দাস জানান, তাঁদের স্কুল ২ লক্ষ টাকা অনুদান পেয়েছে। তবে একই সঙ্গে তাঁর দাবি, ‘‘নতুন পাঠ্যক্রম অনুযায়ী শুধুমাত্র পদার্থবিদ্যার ল্যাবরেটরি সাজাতেই কয়েক লক্ষ টাকার যন্ত্রপাতি কিনতে হবে। নতুন ধাঁচের প্র্যাকটিক্যাল ক্লাস নিয়ে অনেক শিক্ষক-শিক্ষিকাও বিভ্রান্ত। এ বিষয়ে শিক্ষকদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা উচিত।’’

science laboratory Madhyamik syllabus higher secondary southbengal
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy