Advertisement
১৮ এপ্রিল ২০২৪

এক কলেই অ্যাকাউন্ট সাফ! জেরবার তরুণী থেকে অভিনেত্রী

ব্যাঙ্কগুলির তরফে বার বার সচেতন করা হচ্ছে। পাশাপাশি সতর্ক করছে পুলিশও। কেউ কেউ সতর্ক হলেও অনেকে এখনও শিকার হচ্ছে সাইবার জালিয়াতির। এর থেকে বাঁচার উপায় কি? আজ প্রথম কিস্তি।

গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায়
চুঁচুড়া শেষ আপডেট: ২৯ মার্চ ২০১৭ ০৩:২১
Share: Save:

ব্যাঙ্কগুলির তরফে বার বার সচেতন করা হচ্ছে। পাশাপাশি সতর্ক করছে পুলিশও। কেউ কেউ সতর্ক হলেও অনেকে এখনও শিকার হচ্ছে সাইবার জালিয়াতির। এর থেকে বাঁচার উপায় কি? আজ প্রথম কিস্তি।

উত্তরপাড়ার মাখলার বাসিন্দা শ্বেতা মণ্ডল। উচ্চ শিক্ষিতা। চাকরি পাননি। গৃহশিক্ষকতা করেন। সেই টাকা ব্যাঙ্কে জমিয়েছিলেন। মাখলায় একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে তরুণীর অ্যাকাউন্ট রয়েছে। সম্প্রতি তাঁর মোবাইলে ফোন আসে। ফোনের ওপ্রান্ত থেকে বলা হয় ব্যাঙ্ক থেকে ফোন করা হচ্ছে। শ্বেতা বলেন, ‘‘আমার কাছে ব্যাঙ্ক সংক্রান্ত কিছু তথ্য জানতে চাওয়া হয়। আমি বলতে অস্বীকার করলে বলা হয়, না বললে এটিএম কার্ড বাতিল হয়ে যাবে। বাধ্য হয়ে আমি সব তথ্য জানাই। পরে দেখি আমার অ্যাকাউন্ট থেকে ৪৫ হাজার ২১৫ টাকা তুলে নেওয়া হয়েছে। পুরো বিষয়টি জানিয়ে উত্তরপাড়া থানায় অভিযোগ দায়ের করি।’’

শ্বেতার মতোই প্রতারকের পাল্লায় পড়েছিলেন শ্রীরামপুরের দেওয়ানি বিচারক (জুনিয়র ডিভিশন) সোহন মুখোপাধ্যায়। তবে অল্পের জন্য বেঁচে গিয়েছেন। সম্প্রতি একদিন আদালতে বেরোনোর সময়েই এসেছিল ফোনটি। ‘ব্যাঙ্ক অফিসার’ পরিচয় দিয়ে এক জন তাঁর এটিএমের পিন নম্বর জানতে চান। সন্দেহ হওয়ায় সোহনবাবু ফোন রেখে ওই ব্যাঙ্কের শাখায় যোগাযোগ করেন। ব্যাঙ্ক থেকে তাঁকে বলা হয়, সেখান থেকে আদপেই ফোন করা হয়নি। অতঃপর বিষয়টি জানিয়ে পুলিশে লিখিত অভিযোগ করেন ওই বিচারক।

পুলিশ জেনেছে, বিচারকের ফোন এসেছিল ভিন্‌রাজ্য থেকে। ওই ঘটনায় কেউ ধরা পড়েনি। তবে শ্রীরামপুর থানার পুলিশের দাবি, বছর খানেক আগে একটি ঘটনায় প্রতারককে ঝাড়খন্ড থেকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। ঘটনার সঙ্গে সঙ্গেই অভিযোগ দায়ের হওয়ায় ব্যাঙ্কে যোগাযোগ করে অ্যাকাউন্ট নম্বর ব্লক করে দেওয়ায় প্রায় ২০ হাজার টাকা আটকে দেওয়া গিয়েছিল। শুধু হুগলি নয়, এইসব ব্যাঙ্ক জালিয়াতির কারবার রাজ্যের প্রতি জেলায় ছড়িয়ে পড়েছে। বাদ যায়নি কলকাতাও।

হুগলিরই বাসিন্দা, অভিনেত্রী লোপামুদ্রা সিংহের থেকে একই কায়দায় পিন নম্বর জেনে ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে বেশ কয়েক হাজার টাকা তুলে নেওয়া হয়েছিল। লোপামুদ্রার বক্তব্য, ব্যাঙ্ক অফিসার পরিচয় দেওয়ায় তাঁর সন্দেহ হয়নি। সে বার যায় ৮ হাজার টাকা। পরে ফের একই ঘটনা ঘটে। একটি গয়নার দোকান থেকে ২৯ হাজার টাকার কেনাকাটার মেসেজ আসে তাঁর মোবাইল ফোনে। লোপামুদ্রাদেবী বলেন, ‘‘আমি অ্যাকাউন্ট ব্লক করার সত্ত্বেও টাকাটা উঠে গেল। লালবাজারে সাইবার শাখায় অভিযোগ জানিয়েও কিনারা হয়নি।’’

সর্বত্রই এই ধরনের অভিযোগ বাড়ছে। প্রতারিতরা সুরাহা পাচ্ছেন না। কিনারা হচ্ছে না লক্ষ লক্ষ টাকার জালিয়াতির ঘটনার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Cyber forgeries online transaction
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE