Advertisement
E-Paper

যুবকের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার, গ্রেফতার স্ত্রী

আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগে পুলিশ ওই যুবকের স্ত্রী ও শাশুড়িকে গ্রেফতার করেছে। অভিযুক্ত শ্বশুর ও শ্যালকের খোঁজে তল্লাশি চলছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৭ অক্টোবর ২০১৭ ০২:০৪
শুভদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়।

শুভদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়।

একটি বাড়ির দোতলায় সিঁড়ির সিলিং থেকে গলায় ওড়নার ফাঁস দিয়ে ঝুলন্ত অবস্থায় এক যুবকের মৃতদেহ উদ্ধার করল পুলিশ। বৃহস্পতিবার সকাল ৭টা নাগাদ এই ঘটনা ঘটেছে শিবপুরের ব্যাতাইতলা এলাকার মতিলাল মজুমদার লেনে। মৃত যুবকের নাম শুভদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় (৩০)। তিনি হাওড়া পুরসভার কর নির্ধারণ দফতরের অস্থায়ী কর্মী ছিলেন। পুলিশ জানিয়েছে, মাত্র ন’মাস আগে বিয়ে হয়েছিল শুভদীপের। আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগে পুলিশ ওই যুবকের স্ত্রী ও শাশুড়িকে গ্রেফতার করেছে। অভিযুক্ত শ্বশুর ও শ্যালকের খোঁজে তল্লাশি চলছে।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে লিলুয়ার মিরপাড়ার বাসিন্দা হিমাদ্রি মণ্ডলের মেয়ে ফাল্গুনীর সঙ্গে বিয়ে হয় হাওড়া পুরসভার অস্থায়ী কর্মী শুভদীপের। শিবপুরের ব্যাতাইতলায় শুভদীপের পৈতৃক দোতলা বাড়ি রয়েছে। অভিযোগ, বৌভাতের পরদিন থেকেই শ্বশুর-শাশুড়িকে নিয়ে অশান্তি শুরু করেন ফাল্গুনী। শুভদীপের বাড়ির অভিযোগ, শ্বশুর-শাশুড়িকে বাড়ি থেকে বার করে দিয়ে, বাড়ি বিক্রি করে লিলুয়ায় গিয়ে ঘর জামাই হয়ে থাকার জন্য স্বামীর উপরে চাপ সৃষ্টি করেন ফাল্গুনী।

পরিবারের তরফে আরও অভিযোগ, শুভদীপ স্ত্রীর দাবি মানতে না চাওয়ায় দিন দিন অশান্তির মাত্রা বাড়তে থাকে। তাঁকে আরও এই কাজে উৎসাহ দেন ফাল্গুনীর মা, বাবা, ভাই, দাদু ও দিদা। মৃত যুবকের পরিবারের অভিযোগ, শুধু মানসিক নির্যাতন নয় শুভদীপের শ্বশুরবাড়ির লোকজন মাঝেমাঝে ওই বাড়িতে এসে চূড়ান্ত অশান্তি ও গালিগালাজের পাশাপাশি মারধর পর্যন্ত করতেন। রেহাই পেতেন না শুভদীপের বৃদ্ধ বাবা-মাও।

গ্রেফতার হওয়ার পরে শুভদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্ত্রী ফাল্গুনী। বৃহস্পতিবার, শিবপুরের ব্যাতাইতলায়। নিজস্ব চিত্র

পুলিশ জানায়, ঘটনার আগের দিন বুধবার রাত ২টো পর্যন্ত স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে মারাত্মক ঝগড়াঝাঁটি হয়েছিল বলে জানা গিয়েছে। এর পরে সকলে যখন ঘুমোচ্ছেন, সেই সুযোগে স্ত্রীর ওড়না নিয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে তিনি আত্মঘাতী হন বলে প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান। রাষ্ট্রবিজ্ঞানে এম এ পাশ এলাকা ও অফিসে অত্যন্ত জনপ্রিয় ও নির্বিবাদী ওই যুবকের মৃত্যুর সংবাদে ব্যাতাইতলা এলাকা-সহ হাওড়া পুরসভায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। পুরসভার কর নির্ধারণ দফতরের সহকর্মীরা তাঁর বাড়িতে ছুটে যান। সেখানে ভিড় করেন এলাকার বাসিন্দারাও। এর পরে সকলে মিলে অভিযুক্তদের গ্রেফতারের দাবিতে শিবপুর থানায় যান। বৃহস্পতিবার দুপুরে তা ঘিরে শিবপুর থানার সামনে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়।

পরে থানায় ছেলেকে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগে গোকুলবাবু পুত্রবধূ ফাল্গুনী বন্দ্যোপাধ্যায়, শাশুড়ি ইন্দ্রাণী মণ্ডল, শ্বশুর হিমাদ্রী মণ্ডল, শ্যালক অভিজিৎ মণ্ডলের নামে অভিযোগ দায়ের করেন। থানায় দাঁড়িয়েই গোকুলবাবুর বলেন, ‘‘আজ সকালে ছেলের মৃতদেহ যখন সিলিংয়ে ঝুলছে, তখন ওঁর শাশুড়ি, শ্বশুড়, শ্যালক এসে আমাকে মারধর করে ৭ লক্ষ টাকা চান। বলেন, ওই টাকা না পেলে খুন করে ফেলবেন আমাকে। শেষে পাড়ার লোকেরা এসে ওঁদের আটকান।’’

হাওড়ার পুলিশ কমিশনার দেবেন্দ্র প্রকাশ সিংহ জানান, অভিযোগ পাওয়ার পরেই স্ত্রী ও শাশুড়িকে গ্রেফতার করা হয়েছে। কিন্তু শ্বশুর ও শ্যালক পলাতক। অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি চলছে। সকলকেই গ্রেফতার করা হবে।

Boy Wife Dead Husband
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy