Advertisement
E-Paper

তিন দিনে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে ১২৪

নিশ্চিত হতে না-পারলেও দু’টি সম্ভাব্য কারণ খুঁজে পেয়েছেন জেলা স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা। তাঁরা জানান, কাঁকরাই গ্রামে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের একটি জলের পাইপ লাইনে ফাটল ধরেছে। প্রথমে ভাবা হয়েছিল সেখান থেকেই সংক্রমণ ঘটতে পারে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৩ মার্চ ২০১৮ ০২:৫৫
জল-আতঙ্ক: শয্যা মেলেনি। তাই দেবীপুর স্বাস্থ্যকেন্দ্রের মেঝেতেই চিকিৎসা অসুস্থদের । ছবি: সুব্রত জানা

জল-আতঙ্ক: শয্যা মেলেনি। তাই দেবীপুর স্বাস্থ্যকেন্দ্রের মেঝেতেই চিকিৎসা অসুস্থদের । ছবি: সুব্রত জানা

তিন দিন পার। উদয়নারায়ণপুরে ডায়েরিয়া পরিস্থিতি জটিল আরও হল। বাড়ল আক্রান্তের সংখ্যা। কিন্তু কী কারণে ডায়েরিয়া, সে ব্যাপারে বৃহস্পতিবারেও নিশ্চিত হতে পারল না স্বাস্থ্য দফতর।

এ দিন সকাল থেকে পাঁচারুল গ্রাম পঞ্চায়েতের আক্রান্তদের মধ্যে দেবীপুর ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ৯২ জন ভর্তি হন। উদয়নারায়ণপুর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হন ৩২ জন। একসঙ্গে এতজনের আক্রান্ত হওয়ার খবর পেয়ে দেবীপুর ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে আসেন হাওড়ার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক ভবানী দাস। তিনি বলেন, ‘‘মঙ্গল ও বুধবার গড়ে জনাতিরিশ মানুষ আক্রান্ত হচ্ছিলেন। কিন্তু বৃহস্পতিবার একসঙ্গে অনেকে আক্রান্ত হন। আমাদের সামনে এখন বড় চ্যালেঞ্জ, নতুন করে যাতে কেউ না-আক্রান্ত হন, তা দেখা।’’

মঙ্গলবার থেকে মূলত কাঁকরাই গ্রামের বাসিন্দারাই অসুস্থ হচ্ছেন। এ পর্যন্ত মোট ১৬৮ জনের আক্রান্ত হওয়ার খবর মিলেছে বলে জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে। অনেককে হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়াও হয়েছে। কিন্তু কী কারণে সংক্রমণ?

নিশ্চিত হতে না-পারলেও দু’টি সম্ভাব্য কারণ খুঁজে পেয়েছেন জেলা স্বাস্থ্য দফতরের কর্তারা। তাঁরা জানান, কাঁকরাই গ্রামে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের একটি জলের পাইপ লাইনে ফাটল ধরেছে। প্রথমে ভাবা হয়েছিল সেখান থেকেই সংক্রমণ ঘটতে পারে। বৃহস্পতিবার অন্য একটি তথ্য মিলেছে। ওই গ্রামে শনি ও রবিবার একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠান হয়। তার জন্য ভোগ তৈরি হয় একটি পুরনো পাতকুয়োর জলে। হাসপাতালে ভর্তি এমন অনেকে জানিয়েছেন, ভোগ খাওয়ার পর থেকেই তাঁদের পেটের যন্ত্রণা, বমি ও পায়খানা শুরু হয়।

মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক বলেন, ‘‘আমরা ঠিক বুঝতে পারছি না জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের জলের পাইপ লাইন ফেটে গিয়ে সংক্রমণ হয়েছে না ভোগ থেকে বিপত্তি! নিশ্চিত হওয়ার জন্য ফেটে যাওয়া পাইপলাইনের জলের নমুনা, পাতকুয়োর জলের নমুনা এবং আক্রান্তদের মলের নমুনা পরীক্ষায় পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট আসার পরেই রোগের প্রাদুর্ভাবের কারণ বোঝা যাবে।’’

এ দিন দেবীপুর ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, তিল‌ ধারণের জায়গা নেই। শয্যা ভর্তি হয়ে যাওয়ায় মেঝেতে ঠাঁই হয়েছে অনেক আক্রান্তের। জায়গা না-হওয়ায় পাশেই পাঁচারুল ফ্লাড শেল্টারেও শিবির করে আক্রান্তদের রাখা হয়েছে। বিভিন্ন উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে চিকিৎসকদের আনা হয়েছে। আনা হয়েছে আশাকর্মীদেরও। হাসপাতালে আসেন বিধায়ক সমীর পাঁজা, উলুবেড়িয়ার মহকুমাশাসক অংশুল গুপ্ত, বিডিও জয়জিৎ লাহিড়ী। মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক জানান, চিকিৎসার জন্য স্যালাইন এবং ওষুধের অভাব হবে না।

দেবীপুর ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি শিউলি হাজরা, ঝুমা পাল, স্বপ্না মণ্ডলেরা বলেন, ‘‘উৎসব শেষে সোমবার আমাদের ভোগ বিলি করা হয়। তা খাওয়ার পর থেকেই শরীর খারাপ লাগে। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বমি-পায়খানা শুরু হয়।’’

যে পাতকুয়োর জল ব্যবহার করে ভোগ তৈরি হয় তার মালিক সন্দীপ দেয়াশি বলেন, ‘‘ওই জল আমরা আর ব্যবহার করি না। কুয়োটি পরিত্যক্ত।’’ তা হলে কেন ওই জল ব্যবহার করা হল? ধর্মীয় অনুষ্ঠানের উদ্যোক্তারা জানান, ওই জলেই ভোগ রান্না হবে, এটাই প্রথা। জেলা প্রশাসনের কর্তারা জানান, পাতকুয়োর জলে সংক্রমণ ধরা পড়লে সেটি ‘সিল’ করে দেওয়া হবে।

Dengue Patients উদয়নারায়ণপুর
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy