Advertisement
E-Paper

দুই জেলায় পুলিশের সামনেই বাজল ডিজে

দশমীর বিকেল পর্যন্ত অবশ্য পরিস্থিতি এরকম ছিল না। এ বার পুজোর দিনগুলিতে পুলিশ-প্রশাসনের তৎপরতায় ডিজে কিছুটা কোণঠাসাই ছিল দুই জেলায়। কিন্তু ভাসানের শোভাযাত্রা বের হতেই যে কে সেই!

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০৫ অক্টোবর ২০১৭ ০০:৫৬
দাপট: আরামবাগ থানার সামনে ডিজে বাজিয়ে নাচ। নিজস্ব চিত্র

দাপট: আরামবাগ থানার সামনে ডিজে বাজিয়ে নাচ। নিজস্ব চিত্র

আইন আছে। আইন রক্ষায় রাস্তায় আছে পুলিশ। তবু ডিজে-দৈত্যের দাপট বজায় থাকল দুর্গাপুজোর ভাসানে। কোথাও রাস্তা বন্ধ করে, আবার কোথাও খোদ থানার সামনেই বাজল ডিজে। হুগলির আরামবাগ থেকে হাওড়ার সাঁকরাইল—সর্বত্রই কমবেশি দেখা গেল এই ছবি। দুর্গাপুজোর ভাসানে এই অবস্থা হলে কালীপুজোয় আরও কত গুণ বেশি হবে শব্দের দাপট? সেই প্রশ্নই এখন ঘুরপাক খাচ্ছে দুই জেলার সাধারণ মানুষের মধ্যে।

আইন বলছে, এ রাজ্যে ডিজে বাজানো নিষিদ্ধ। দেখামাত্রই তা বাজেয়াপ্ত করার কথা পুলিশ-প্রশাসনের। কিন্তু আমজনতার অভিজ্ঞতা, নিয়ম শুধু কাগজে-কলমেই। আর তাই মঙ্গলবার রাতে অনেক জায়গাতেই আইনরক্ষকদের নাকের ডগাতেই কান ঝালাপালা করেছে ডিজে।

দশমীর বিকেল পর্যন্ত অবশ্য পরিস্থিতি এরকম ছিল না। এ বার পুজোর দিনগুলিতে পুলিশ-প্রশাসনের তৎপরতায় ডিজে কিছুটা কোণঠাসাই ছিল দুই জেলায়। কিন্তু ভাসানের শোভাযাত্রা বের হতেই যে কে সেই! পুজোর সময়ে ডিজে বন্ধে তৎপর পুলিশ ভাসানে ডিজের দাপট দেখেও বেশিরভাগ জায়গাতেই কার্যত দর্শকের ভূমিকা নিল।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় আরামবাগ থানার সামনে পিসি সেন রোডে ডিজে বাজিয়ে একের পর এক বিসর্জনের শোভাযাত্রা গিয়েছে। আরামবাগ শহরের ১৭টি পুজোর মধ্যে ১০-১২টি পুজো শোভাযাত্রা বের করেছিল। তারমধ্যে ৪টি পুজো ডিজে বেজেছে। আরামবাগের রামকৃষ্ণ ক্লাব তো থানার নাকের ডগায় শোভাযাত্রা দাঁড় করিয়ে প্রায় ২০ মিনিট ধরে ‘অকের্স্ট্রা’র আসর বসিয়ে দেয়। বন্ধ হয়ে যায় রাস্তা। সব দেখেও কার্যত কোনও ব্যবস্থাই নেয়নি পুলিশ। ঘটনার সময়ে রাস্তার পাশ দিয়ে যাচ্ছিলেন সুমন্ত রায় নামে এক ব্যক্তি। তাঁর ক্ষোভ, ‘‘আরামবাগ থানার গেটের সামনে তারস্বরে ডিজে বাজিয়ে নাচ চলছে, এরকম আগে দেখিনি।’’ সংশ্লিষ্ট পুজো কমিটির সম্পাদক রামপ্রসাদ রানার অবশ্য দাবি করেছেন, ‘‘প্রশাসনের অনুমতি নিয়েই আমরা বিসর্জনের শোভাযাত্রা করেছি।’’ আরামবাগ থানার এক কর্তা জানান, পুরো ঘটনাটি আমরা দেখেছি। তদন্ত করা হবে। কিন্তু থানার সামনে ডিজে বাজিয়ে গান-বাজনা হলেও পুলিশ ব্যবস্থা নিল না কেন? সেই প্রশ্নের উত্তর অবশ্য মেলেনি।

শুধু আরামবাগ নয়, হুগলির জেলা সদর চুঁচুড়া থেকে শুরু করে ব্যান্ডেল, মগরা, পান্ডুয়া, বলাগড়, শ্রীরামপুর-সহ বিভিন্ন জায়গাতেই বিসর্জনে ব্যবহৃত হয়েছে ডিজে। চণ্ডীতলা ২ ব্লকের কয়েকটি এলাকায় বির্সজনের শোভাযাত্রায় ট্রাকের উপর বড়বড় সাউন্ড বক্স এবং প্রচুর মাইক লাগানো হয়েছিল। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, ডিজের আওয়াজে বাড়িও কেঁপে উঠেছে। পান্ডুয়ার জিটি রোড দিয়ে মঙ্গলবার গভীর রাত পর্যন্ত ডিজে বাজিয়ে একের পর এক শোভাযাত্রা গিয়েছে। ডিদএলাকার অনেকেই অভিযোগ করেছেন, তাঁরা রাতে ঘুমোতে পারেননি। পান্ডুয়া থানার পুলিশের সাফাই, কেউ কোনও পুজো কমিটির বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করলে তবেই তারা ব্যবস্থা নিতে পারবে।

কমবেশি একই ছবি দেখা গিয়েছে হাওড়ায়। বাগনান, সাঁকরাইল, উলুবেড়িয়া সর্বত্রই দেখা গিয়েছে শোভাযাত্রায় বাজছে ডিজে। ভাসানের সময়ে সব জায়গাতেই রাস্তায় ছিল বাড়তি পুলিশ। কিন্তু ডিজে বন্ধে তাঁরা কোনও ব্যবস্থা নেয়নি বললেই চলে। বিষয়টি পরোক্ষে হলেও মেনে নিয়েছেন দুই জেলার পুলিশ কর্তারা।

হাওড়ার এক পুলিশ কর্তার আশ্বাস, যারা ডিজে বাজিয়ে শোভাযাত্রা করেছে তারা কেউ রেহাই পাবে না। ওই কর্তা বলেন, ‘‘বিসর্জন চলাকালীন ডিজের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিলে আইনশৃঙ্খলার অবনতি হতে পারতো। তাই তখন কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। আইনভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

Sound Pollution DJ police Arambagh আরামবাগ
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy