Advertisement
২০ মে ২০২৪

নিকাশি সমস্যায় জেরবার আরামবাগ শহর

সম্প্রতি আরামবাগ পুরসভা এলাকার বাসিন্দাদের মুখোমুখি হয়েছিলেন চেয়ারম্যান স্বপন নন্দী। সেই আলোচনায় উঠে এল এলাকাবাসীর নানা দাবি, প্রাপ্তি-প্রত্যাশা। সঞ্চালনায় ছিলেন পীযূষ নন্দী। রইল সেই আলোচনার বাছাই প্রশ্নোত্তর।সম্প্রতি আরামবাগ পুরসভা এলাকার বাসিন্দাদের মুখোমুখি হয়েছিলেন চেয়ারম্যান স্বপন নন্দী। সেই আলোচনায় উঠে এল এলাকাবাসীর নানা দাবি, প্রাপ্তি-প্রত্যাশা। সঞ্চালনায় ছিলেন পীযূষ নন্দী। রইল সেই আলোচনার বাছাই প্রশ্নোত্তর।

আবর্জনা আর ঝোপের দখলে চলে যাচ্ছে রাস্তা। ছবি: মোহন দাস।

আবর্জনা আর ঝোপের দখলে চলে যাচ্ছে রাস্তা। ছবি: মোহন দাস।

শেষ আপডেট: ১৪ অক্টোবর ২০১৬ ০২:৩১
Share: Save:

সম্প্রতি আরামবাগ পুরসভা এলাকার বাসিন্দাদের মুখোমুখি হয়েছিলেন চেয়ারম্যান স্বপন নন্দী। সেই আলোচনায় উঠে এল এলাকাবাসীর নানা দাবি, প্রাপ্তি-প্রত্যাশা। সঞ্চালনায় ছিলেন পীযূষ নন্দী। রইল সেই আলোচনার বাছাই প্রশ্নোত্তর।

পানীয় জলের সমস্যা মিটেছে ঠিকই। কিন্তু নিকাশি সমস্যায় জেরবার বিবেকানন্দ পল্লি। নিকাশি সমস্যার কারণে ওয়ার্ডের ভিতরের রাস্তাগুলি ভাঙছে। নির্মল বাংলাকে কেন্দ্র করে ওয়ার্ডের ভিতরে জঙ্গলগুলি পরিষ্কার হল। এটা কি নিয়মিত করা যায় না?

সমীর দাস (অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মী), ওয়ার্ড ১৯

পুরপ্রধান: শহরে নিকাশি সমস্যা দীর্ঘ দিনের। সেই সমস্যা মেটাতে ভূগর্ভস্থ নিকাশি নালার কাজ চলছে। শহরের সমস্ত জল কানা দ্বারকেশ্বরে নদে ফেলা হবে। শহর পরিষ্কার রাখতে ওয়ার্ডগুলিতে নিয়মিত সাফাই কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে।

এমনিতেই বেহাল নিকাশির জন্য ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠে আন্দিমহল এলাকা। তার উপর দীর্ঘদিনের দাবি থাকা সত্ত্বেও আজ পর্যন্ত সেখানে রাস্তা হয়নি। বর্ষায় খুব সমস্যা হয়। বর্তমানে অপরিকল্পিত ভাবে নিকাশির ব্যবস্থা করতে গিয়ে ওয়ার্ডের সমস্ত নর্দমার জল আমাদের গার্লস কলেজ চত্বরে জমে যাচ্ছে।

সাজিদুল ইসলাম (অধ্যক্ষ), ওয়ার্ড ৬

পুরপ্রধান: আন্দিমহলে রাস্তা নির্মাণের অনুমোদন মিলেছে। খুব শীঘ্রই টেন্ডার প্রক্রিয়া শুরু হবে। গার্লস কলেজে নর্দমার জল ঢুকে যাওয়ার উৎসগুলি চিহ্নিত করা হয়েছে। আশা করি আর সমস্যা থাকবে না।

শহরের ব্যস্ত এবং গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা হাসপাতাল রোড। অথচ রাস্তা দখল করে ব্যবসা চলছে। ফলে সারাদিন যানজট লেগেই থাকে। রোগীদের নিয়ে যেতেও সমস্যা হয়। এই দমবন্ধ অবস্থা নিয়ে পুরসভা কী ভাবছে?

রেণুকা ঘোষ (বধূ), ওয়ার্ড ১৪

পুরপ্রধান: হাসপাতাল রোডের আগের সমস্যা অনেকটা কেটেছে। রাস্তাটি ওয়ানওয়ে করা হয়েছে। রাস্তা দখল করে যে যাঁরা ব্যবসা করছেন শীঘ্রই তাঁদের নোটিস দেওয়া হবে। ইতিমধ্যে শহরের পল্লিশ্রী এবং বসন্তপুরে হকার উচ্ছেদ করা হয়েছে। এখানেও খুব শীঘ্রই হকার উচ্ছেদ করা হবে। হকারদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা হবে।

পাড়ায় আবর্জনা ফেলার ব্যবস্থা নেই। যত্রতত্র গৃহস্থালি বর্জ-সহ নানা বর্জে দূষণ ছড়াচ্ছে। এই সব অস্বাস্থ্যকর পরিস্থিতি রুখতে কোনও ব্যবস্থা কি নিচ্ছে পুরসভা?

শ্যামল পাল (ব্যবসায়ী), ওয়ার্ড ১৪

পুরপ্রধান: আপাতত কয়েকটি ওয়ার্ড থেকে প্রতিদিন বাঁশি বাজিয়ে গৃহস্থালি আবর্জনা-সহ অন্যান্য আবর্জনা তুলে আনার ব্যবস্থা হয়েছে। ক্রমশ সব কটি ওয়ার্ড থেকেই তা সংগ্রহ করা হবে।

কুকুরের দৌরাত্ম্যে রাতে বের হওয়ায়ই দায়। ব্যবস্থা নেওয়ার আর্জি জানালে হাসাহাসি হচ্ছে পুরসভায়।

বিমল দাস (রাজমিস্ত্রি), ওয়ার্ড ৫

পুরপ্রধান: এই সমস্যা শহরে নতুন। আমরা খুব শীঘ্র বিশেষজ্ঞের কাছে পরামর্শ নেব।

যত্রতত্র প্লাস্টিক-সহ আবর্জনাময় রাস্তাঘাট নিয়মিত পরিষ্কার করার ব্যবস্থা নেই। যানযট মুক্ত রাখার দাবি থাকলেও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে না। রাস্তাগুলিতে গাড়ির গতি এবং হর্ন বাজানো নিয়ে কোনও বিধিনিষেধ নেই। নির্মাণ সংক্রান্ত পরিকল্পনায় নজরদারি না থাকায় শহর দিন দিন ঘিঞ্জি হয়ে যাচ্ছে।

তুফান মাল (ইঞ্জিনিয়ার), ওয়ার্ড ৩

পুরপ্রধান: শহরে যানজট এড়াতে মোট ২০টি জায়গায় পার্কিং জোন করতে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। সেই মতো কাজও শুরু হয়েছে। গাড়ির গতি এবং হর্ন বাজানো নিয়ে বিধিনিষেধ লাগু আছে। সেটি যাঁরা মানছেন না এ বার তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

গৌরহাটি মোড়ের পেট্রোল পাম্প সংলগ্ন বাসস্ট্যান্ড থেকে কাজিপাড়া ঢোকার রাস্তা এখনও মোরামের। ভারী যান চলাচল করায় সেটা সারা বছরই ভাঙা থাকে। জীবনবীমা অফিসের পিছনেই ঘন জঙ্গল এবং আবর্জনা। জল নিকাশির যে ব্যবস্থা ছিল সেটি বুজে গিয়েছে। সংশ্লিট চত্বরে শৌচাগার না থাকায় যাত্রী-সহ অন্য মানুষজন যত্রতত্র বিভিন্ন বাড়ির গায়ে শৌচকর্ম করছেন। এ সব সুরাহার দীর্ঘ দিনের দাবি এখনও মেটেনি।

দেবাংশু কুণ্ডু (ব্যবসায়ী), ওয়ার্ড ১৩

পুরপ্রধান: কাজিপাড়ার মূল রাস্তাটি ব্যক্তিগত হওয়ায় অতীত থেকেই সেটি পিচ বা কংক্রিট করতে আপত্তি আসছিল। রাস্তাটির স্থায়ী বন্দোবস্ত করতে মালিকদের সঙ্গে কথা বলা হচ্ছে। সমস্যা কেটে যাবে। শৌচাগার করার ক্ষেত্রেও জায়গার অভাব আছে। সেই অভাব মেটাতে ইতিমধ্যে স্থানীয় বাসিন্দারের সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে। আশা করছি সমস্যা মিটে যাবে।

এলাকায় চুরি-ছিনতাই, মদ-জুয়া এবং ডেনড্রাইট খেয়ে শিশুদের নেশাগ্রস্ত হওয়া নিয়ে পুরসভা কোনও ভূমিকা নিচ্ছে না।

রুস্তম খান (শ্রমিক), ওয়ার্ড ৭

পুরপ্রধান: শিশুদের নেশার সামগ্রী দেওয়া নিয়ে বিভিন্ন দোকানগুলিকে আমরা সতর্ক করেছি। মদ-জুয়া এবং চুরি-ছিনতাই নিয়েও আমরা রাতে বেশি করে পুলিশি টহলদারির আবেদন করেছি।

মশার দাপটে প্রাণ ওষ্ঠাগত। নিয়মিত কোনও পদক্ষেপ নিতে দেখা যায় না। ডেঙ্গির হাওয়ায় কয়েকদিন ব্লিচিং ছড়ানো, ওষুধ স্প্রে করার পর ফের আগের মতোই উদাসীন।

উৎপল বসু (ব্যবসায়ী), ওয়ার্ড ৪

পুরপ্রধান: মশা নিধনে নিয়মিত অভিযান চালাতে এ বার ওয়ার্ড কমিটিগুলিকেই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। স্প্রে মেশিন এবং ওষুধ ইত্যাদি আমরা সরবরাহ করব।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Arambagh Drainage problem
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE