Advertisement
০৩ মে ২০২৪
তৃণমূলের বিরুদ্ধে নালিশ ডিএসও-র

ফেলে মার, ঢুকতেই দি‌ল না কলেজে

মঙ্গলবার যেখানে শেষ হয়েছিল, বুধবার সেখান থেকেই শুরু হল।মঙ্গলবারের পরে বুধবারও শ্রীরামপুর গার্লস কলেজের গেট আটকে, ডিএসও প্রার্থীদের মারধরের অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার ২৩টি আসনের মধ্যে ১৪টিতে মনোনয়ন জমা দিতে পেরেছিল ডিএসও।

ডিএসও-র এক নেত্রীকে মার। বুধবার।ছবি: নিজস্ব চিত্র

ডিএসও-র এক নেত্রীকে মার। বুধবার।ছবি: নিজস্ব চিত্র

প্রকাশ পাল
শ্রীরামপুর শেষ আপডেট: ১৯ জানুয়ারি ২০১৭ ০১:০৭
Share: Save:

মঙ্গলবার যেখানে শেষ হয়েছিল, বুধবার সেখান থেকেই শুরু হল।

মঙ্গলবারের পরে বুধবারও শ্রীরামপুর গার্লস কলেজের গেট আটকে, ডিএসও প্রার্থীদের মারধরের অভিযোগ উঠল তৃণমূলের বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার ২৩টি আসনের মধ্যে ১৪টিতে মনোনয়ন জমা দিতে পেরেছিল ডিএসও। কিন্তু এ দিন তাদের কর্মী-সমর্থকদের কলেজে ঢুকতেই দিল না তৃণমূল। ফলে নতুন করে একটিও মনোনয়ন জমা করতে পারল না এসইউসির ছাত্র সংগঠন।

ডিএসও-র অভিযোগ, পুলিশ ছিল নীরব দর্শক। কলেজের অধ্যক্ষা সোমা রায় অবশ্য বলেন, ‘‘কলেজের ভিতরে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ছিল। ভিতরে কোনও গোলমাল হয়নি।’’ সোমাদেবীর দাবি, মঙ্গলবার এবং বুধবার কলেজ ক্যাম্পাসে কোনও বহিরাগত ঢোকেননি।

ডিএসও-র রাজ্য সভাপতি মৃদুল সরকারের অভিযোগ, ‘‘পুলিশ কর্তারা নিরাপত্তার আশ্বাস দিয়েছিলেন। অথচ বুধবার কলেজে ঢোকার সময়ে পুলিশের সামনেই আমাদের সমর্থকদের মার খেতে হয়েছে। কয়েকজনের পোশাক ছিঁড়ে দেওয়া হয়েছে। প্রহৃত এক ছাত্রীকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।’’ তাঁর দাবি, মনোনয়নের স্বাভাবিক পরিবেশ তৈরি না হওয়া পর্যন্ত ওই কলেজে নির্বাচন স্থগিত রাখা হোক। না হলে আইনের সাহায্য নেওয়া হবে বলে জানান তিনি। যদিও জেলা পুলিশের এক কর্তার দাবি, এ দিন কলেজ চত্বরে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক ছিল। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেছে।

রাজ্যে ক্ষমতায় আসার পরে হুগলি জেলার সব কলেজের ছাত্র সংসদ দখলে এনেছে টিএমসিপি। কিন্তু বহু চেষ্টা সত্ত্বেও শ্রীরামপুর গার্লস কলেজে সেভাবে সংগঠন তৈরি করতে পারেনি তৃণমূলের ছাত্র সংগঠন। এই কলেজের ছাত্র সংসদ ডিএসও-র দখলে। কলেজ ক্যাম্পাসে সংগঠনের জোর না থাকায় মঙ্গলবার এবং বুধবার বহিরাগত পুরুষ এবং মহিলা কর্মীদের কলেজের সামনে জড়ো করে তৃণমূল। কলেজের সামনে দেখা যায় শ্রীরামপুর পুরসভার কাউন্সিলর ঝুম মুখোপাধ্যায়, উত্তম রায়, সন্তোষ সিংহ, প্রাক্তন কাউন্সিলর রাজেশ সিংহ, শ্রমিক-নেতা অন্বয় চট্টোপাধ্যায়-সহ কয়েকজন তৃণমূল নেতা-নেত্রীকে। বুধবার বেলা সাড়ে ১১টা নাগাদ ডিএসও-র মেয়েরা একটি গাড়িতে চেপে এসে দৌড়ে কলেজে ঢোকার চেষ্টা করেন। অভিযোগ, গেটের মুখে তাঁদের আটকে মারধর করে তৃণমূল। কলেজের সামনে ইউনিয়ন ইনস্টিটিউশনের কাছেও ডিএসও সমর্থক ছাত্রীদের পেটানো হয় বলে অভিযোগ।

প্রশাসন সূত্রে খবর, এ দিন দুপুর ২টো পর্যন্ত মনোনয়ন জমা দেওয়ার কথা ছিল। পরে এক ঘণ্টা সময় বাড়ানো হয়। পৌনে তিনটে নাগাদ পুলিশ কর্তারা ডিএসও-র মেয়েদের কলেজের সামনে নিয়ে যায়। কিন্তু পুলিশের অনুরোধ সত্ত্বেও ফের কলেজ গেটে তাঁদের পথ আটকায় তৃণমূল। কয়েকজন টিএমসিপির বহিরাগত মেয়েদের মুখে কাপড় বেঁধে লাঠি হাতে ঘুরতে দেখা যায়। শেষ পর্যন্ত ডিএসও-র মেয়েরা কলেজে ঢুকতেই পারেননি। এ দিন ছিল মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষ দিন।

টিএমসিপি অবশ্য ডিএসও-র বিরুদ্ধে হামলার পাল্টা অভিযোগে থানায় ডায়েরি করেছে। তাদের অভিযোগ, ডিএসও-র মেয়েদের ছোড়া ইটে কাউন্সিলর ঝুমদেবীর কপাল ফেটেছে। টিএমসিপি-র হুগলি জে‌লার আহ্বায়ক রিঙ্কু চট্টোপাধ্যায়ের দাবি, ‘‘কলেজের সাধারণ মেয়েরা ডিএসও-কে চায় না। আজ ওরা পুলিশকে মেরেছে। আমাদেরও মেরেছে।’’ তাঁর আরও দাবি, এ দিন কলেজের সামনে কোনও বহিরাগত ছিলেন না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

DSO TMCP
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE