Advertisement
E-Paper

দেখা নেই তারকাদের, হাল ধরলেন জেলার নেতারাই

কেউ জোর দিলেন পদযাত্রায়। কেউ সাইকেল-মিছিলে। কেউ বা জনসভা এবং বাড়ি বাড়ি জনসংযোগে। আগামী ২৫ এপ্রিল নির্বাচন। তার আগের শেষ রবিবারে হাওড়ার উলুবেড়িয়া এবং হুগলির বিভিন্ন এলাকায় প্রচারের কাজ সারল রাজনৈতিক দলগুলি। কিন্তু সে ভাবে দেখা মিলল না হেভিওয়েট নেতা-নেত্রীদের। জেলার নেতারাই প্রার্থীদের নিয়ে এ দিন সকাল থেকে নেতৃত্ব দিলেন প্রচারে। দুপুরের চড়া রোদ মাথায় করেও মানুষের বাড়ি বাড়ি ঘুরতে দেখা গিয়েছে প্রার্থীদের। প্রচার চলে সন্ধ্যা পর্যন্ত।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২০ এপ্রিল ২০১৫ ০১:২৭
হুগলির রিষড়ায় বিজেপি নেতা রাহুল সিংহের রোড শো।

হুগলির রিষড়ায় বিজেপি নেতা রাহুল সিংহের রোড শো।

কেউ জোর দিলেন পদযাত্রায়। কেউ সাইকেল-মিছিলে। কেউ বা জনসভা এবং বাড়ি বাড়ি জনসংযোগে।

আগামী ২৫ এপ্রিল নির্বাচন। তার আগের শেষ রবিবারে হাওড়ার উলুবেড়িয়া এবং হুগলির বিভিন্ন এলাকায় প্রচারের কাজ সারল রাজনৈতিক দলগুলি। কিন্তু সে ভাবে দেখা মিলল না হেভিওয়েট নেতা-নেত্রীদের। জেলার নেতারাই প্রার্থীদের নিয়ে এ দিন সকাল থেকে নেতৃত্ব দিলেন প্রচারে। দুপুরের চড়া রোদ মাথায় করেও মানুষের বাড়ি বাড়ি ঘুরতে দেখা গিয়েছে প্রার্থীদের। প্রচার চলে সন্ধ্যা পর্যন্ত।

সকালে উলুবেড়িয়ার ২১, ২২ এবং ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের দলীয় প্রার্থী যথাক্রমে মুক্তেশ দে, শাশ্বতী সাঁতরা এবং তৃপ্তি অধিকারীর সমর্থনে পাড়ায় পাড়ায় ‘রোড শো’ করেন তৃণমূল সাংসদ সুলতান আহমেদ। কয়েকশো মোটরবাইক নিয়ে তাতে সামিল হন দলের কর্মী-সমর্থকেরা। সাংসদ নিজেও ছিলেন একটি মোটরবাইকে। পাশেই ২৭ নম্বর ওয়ার্ডের দলীয় প্রার্থী অভয় দে’র ওয়ার্ডে পদযাত্রা করেন তৃণমূল কর্মীরা। তাতেও সামিল হন সুলতান।

সুলতান যখন ওই ওয়ার্ডে পদযাত্রা করছেন, তখন সেখানকার বিজেপি প্রার্থী পাপিয়া মণ্ডল ব্যস্ত বাড়ি বাড়ি ঢুকে জনসংযোগে। বাড়ির হেঁসেলে ঢুকে পাপিয়া সৌজন্য বিনিময় করে নেন গৃহবধূদের সঙ্গে। অন্য দিকে, ২৯ নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপি প্রার্থী অঞ্জনা অধিকারী এবং ওই দলের ৩০ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী মনোরঞ্জন খাঁ বিভিন্ন এলাকায় সাইকেল-মিছিল করেন।

দলীয় প্রার্থীদের নিয়ে উত্তরপাড়ায় কংগ্রেস নেতা আব্দুল মান্নান।

১৯ নম্বর ওয়ার্ডে কংগ্রেসের অন্যতম হেভিওয়েট প্রার্থী পম্পা ধাড়া। আগের পুবোর্ডে এই ওয়ার্ডের কংগ্রেসের কাউন্সিলর ছিলেন উত্তম ধাড়া। এ বারে আসনটি মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত হয়ে যাওয়ায় উত্তমবাবুর স্ত্রী পম্পাদেবী প্রার্থী হয়েছেন। উত্তমবাবু এলাকার জনপ্রিয় নেতা। কংগ্রেসের দুর্দিনেও তিনি দল ছেড়ে যাননি। এই ওয়ার্ডে তাঁদের লড়াই যে বেশ কঠিন তা একান্ত আলাপচারিতায় মানছেন তৃণমূল নেতারা। স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে উত্তমবাবু এলাকা চষে ফেলেছেন। এখন তিনি পাড়ায় পাড়ায় বৈঠকে ব্যস্ত। এই আসনটিকে আলাদা করে নজর দিচ্ছেন দলের নেতারাও। রবিবার এই ওয়ার্ডে প্রচারে সামিল হলেন কংগ্রেস বিধায়ক অসিত মিত্র, জেলা কংগ্রেসের তরফে এই ওয়ার্ডে দলের পর্যবেক্ষক দুর্গাপদ দাস প্রমুখ। বিকেল থেকে শুরু হল সাইকেল-মিছিল। ওয়ার্ডের অলি-গলি ঘুরে তা শেষ হল সন্ধ্যায়। সিপিএমের তরফে কোনও মিছিল বা ‘রোড শো’ করা হয়নি। বাড়ি বাড়ি গিয়েই প্রচার সারেন দলের প্রার্থী ও নেতা-কর্মীরা।

সন্ধ্যায় উলুবেড়িয়ার দু’টি জনসভা করেন রাজ্যের সেচমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। ২০ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল প্রার্থী অর্জুন সরকার এবং আরও দুই প্রার্থী মুক্তেশ দে এবং শাশ্বতী সাঁতরার সমর্থনে করা দু’টি জনসভায় রাজীব কেন্দ্রের বিজেপি সরকার এবং রাজ্যের আগের বামফ্রন্ট সরকারের সমালোচনা করেন। বক্তৃতায় তিনি বলেন, ‘‘একমাত্র মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন তৃণমূল কংগ্রেস সরকারের আমলেই রাজ্যে উন্নয়নের জোয়ার বয়েছে।’’

সে ভাবে কলকাতার ‘ওজনদার’ নেতানেত্রী না আসায় হুগলিতে ভোটের আগে শেষ রবিবারের প্রচার শেষ হয় কার্যত ম্যাড়মেড়ে ভাবে। কলকাতার নেতাদের মধ্যে একমাত্র বিজেপির রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহ এ দিন দলীয় প্রার্থীদের সমর্থনে এই জেলায় প্রচারে আসেন। বিকেলে রিষড়ার ৪ নম্বর গেটের সামনে থেকে ‘রোড শো’ শুরু করেন তিনি। শ্রীরামপুর পুরসভার প্রভাসনগর, তারাপুকুর হয়ে বৈদ্যবাটিতে গিয়ে ‘রোড-শো’ শেষ হয়।

কংগ্রেস নেতা আব্দুল মান্নানও এ দিন পথে নামেন দলীয় প্রার্থীদের সমর্থনে। শ্রীরামপুর, বৈদ্যবাটি, রিষড়া এবং উত্তরপাড়ার বিভিন্ন জায়গায় প্রচার চালান তিনি। কখনও হুডখোলা গাড়িতে, আবার কখনও পথসভা করেন হুগলির এই কংগ্রেস নেতা। সঙ্গে ছিলেন দিলীপ নাথ, সঞ্জয় চট্টোপাধ্যায়ের মতো জেলা কংগ্রেস নেতারা।

জেলার দুই তৃণমূল সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং রত্না দে নাগ নিজেদের এলাকায় প্রচার করেন। কল্যাণবাবু সকালে রিষড়ায় মিছিল করেন। বিকেলে ডানকুনি এবং উত্তরপাড়ায় মোট ৫টি সভা করেন। বিকেলে সাহাগঞ্জের ডানলপ কারখানার সামনে থেকে তৃণমূলের বিশাল মিছিল বের হয়। জিটি রোড ধরে হুগলি মোড়, পিপুলপাতি, রবীন্দ্রনগর, হাসপাতাল মোড়, ঘড়ির মোড় হয়ে খাদিনা মোড়ে গিয়ে মিছিল শেষ হয়। সাংসদ রত্নাদেবীর পাশাপাশি মিছিলে ছিলেন বিধায়ক তপন মজুমদার।

চুঁচুড়ায় গঙ্গায় নৌকা চেপে প্রচার করেন বিজেপি প্রার্থীরা। দলের জেলা সহ-সভাপতি স্বপন পালের নেতৃত্বে অন্নপূর্ণা ঘাট থেকে গঙ্গাবক্ষে প্রচার শুরু হয়। শেষ হয় ময়ূরপঙ্খী ঘাটে।

বিভিন্ন দলের নেতাকর্মীরা মনে করছেন, কলকাতা পুরভোটের জন্য রাজ্য স্তরের নেতারা সে ভাবে সময় বের করতে না পারায় জেলায় প্রচারে আসতে পারেননি। শনিবারই কলকাতা পুরভোট শেষ হয়েছে। এ বার জেলার পুরসভাগুলির প্রচার তুঙ্গে উঠবে।

—নিজস্ব চিত্র।

Election campaigning municipal election trinamool tmc cpm congress bjp abdul mannan kalyan bandopadhyay ratna dey nag southbengal
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy