Advertisement
E-Paper

অগ্নিসুরক্ষা শিকেয় বহুতলেও

ঘিঞ্জি বাজারে আগুন লাগলে কী হবে, তা নিয়ে সব সময় আশঙ্কায় থাকেন হুগলির ব্যবসায়ীরা। অধিকাংশ বাজারেই অগ্নিসুরক্ষা না মানার অভিযোগ জানান দমকল কর্তারা। আর প্রশাসন প্রতিবারই ‘এ বার ব্যবস্থা নেওয়া হবে’ বক্তব্য রেখেই দায় সারেন।

গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৯ ০৩:৪০
সর্বগ্রাসী: পুড়ে গিয়েছে আবাসনটির মিটার বক্স। ছবি: দীপঙ্কর দে

সর্বগ্রাসী: পুড়ে গিয়েছে আবাসনটির মিটার বক্স। ছবি: দীপঙ্কর দে

ঘিঞ্জি বাজারে আগুন লাগলে কী হবে, তা নিয়ে সব সময় আশঙ্কায় থাকেন হুগলির ব্যবসায়ীরা। অধিকাংশ বাজারেই অগ্নিসুরক্ষা না মানার অভিযোগ জানান দমকল কর্তারা। আর প্রশাসন প্রতিবারই ‘এ বার ব্যবস্থা নেওয়া হবে’ বক্তব্য রেখেই দায় সারেন। কিন্তু শুধু ঘিঞ্জি বাজার নয়, অগ্নিসুরক্ষা শিকেয় হুগলির বড় বড় আবাসনগুলিতেও।

শনিবার সকালে উত্তরপাড়ার বি কে স্ট্রিটের একটি আবাসনে আগুন লাগে। ধোঁয়ায় আবাসনের বাসিন্দাদের দম বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম হয়। সবথেকে বেশি সমস্যায় পড়ে আবাসনের খুদে ও বৃদ্ধ সদস্যরা। তাঁদের কাউকে কোলে করে, কাউকে ধরে ধরে সিঁড়ি দিয়ে কোনওক্রমে নামানো হয়। দমকলের কর্মীরা আবাসনের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন। ঘণ্টা খানেকের চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। র প্রাথমিক তদন্তে অনুমান, শর্ট সার্কিট থেকেই এই দুর্ঘটনা। বড় বিপদ থেকে অবশ্য এ দিন রক্ষা মিলেছে। কিন্তু বড় দুর্ঘটনা হলে কী হত, তা ভেবে আঁতকে উঠছেন আবাসনের সব বাসিন্দাই।

হুগলির উত্তরপাড়া, শ্রীরামপুর, চন্দননগর, চুঁচুড়ায় পায়ে পায়ে আবাসন। কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রেই অভিযোগ, ওই সব বহুতলে ন্যূনতম অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থাও থাকে না। কিন্তু প্রশ্ন, প্রোমোটার বা আবাসন নির্মাতারা প্রচুর টাকা দিয়ে যে ফ্ল্যাট বিক্রি করেন, সেখানে ন্যূনতম অগ্নি-সুরক্ষার ব্যবস্থা করা হয় না কেন?

জেলায় দমকলের পদস্থরা অবশ্য সেই দায় চাপিয়েছেন, পুরসভার উপর। কারণ পুরসভাই শেষ পর্যন্ত আবাসন নির্মাণে ছাড়পত্র দেয়।

দমকল বিভাগের অফিসারদের অবশ্য মতামত, অগ্নি নির্বাপণ বিধি অনুয়ায়ী ৪৭ ফুট উচ্চতার আবাসনের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় শংসাপত্র নিতে হয়। দমকলের পরিদর্শকরা আবাসনে গিয়ে এলাকা পরিদর্শন করেন প্রথমে। তারপর সেই আবাসনের বাসিন্দা-সংখ্যা ও জমির পরিমাপের উপর হিসাব করে অগ্নিনির্বাপণ ব্যবস্থার নির্দেশিকা তৈরি করেন দমকলের আধিকারিকেরা। পরিদর্শনের জন্য এবং বিধি মোতাবেক সমস্ত কিছু চূড়ান্ত করার জন্য সংশ্লিষ্ট সরকারি বিভাগে আগাম টাকা জমা দিতে হয়। তবে দমকলের পদস্থ কর্তারা স্পষ্ট জানিয়েছেন, পুরসভা চাইলে আবাসনের উচ্চতা কোনও বিষয় নয়। যে কোনও আবাসনেই আগুনের ক্ষেত্রে সর্তকতামূলক ব্যবস্থা নেওয় যেতেই পারে। যে ভাবে স্কুল এবং হাসপাতালের ক্ষেত্রে অগ্নি নির্বাপক বিধি কঠোরভাবে পালন করা হয়।

উত্তরপাড়ার পুরপ্রধান দিলীপ যাদবের দাবি, ‘‘বহুতল আবাসন যাঁরা বানান, তাঁদের বহুক্ষেত্রেই নিয়ম মানার বিষয়ে অনীহা রয়েছে। কিন্তু পুর কর্তৃপক্ষের কাজই তাঁদের বিধি মানানো। সিদ্ধান্ত হয়েছে, বহুতলে মিটার ঘরের জন্য আলাদা জায়গা রাখতে হবে। সিঁড়ির তলায় মিটার হলে মানুষ তো নামতেই পারবে না।’’

হুগলি-চুঁচুড়ার পুরপ্রধান গৌরীকান্ত মুখোপাধ্যায়ও মনে করেন, নিরাপত্তার প্রশ্নে দমকলের সঙ্গে কথা বলে নির্দিষ্ট অগ্নিবিধি লাগু

করা প্রয়োজন।

শ্রীরামপুরের পুরপ্রধান অমিয় মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমাদের পুর এলাকায় আগুন রুখতে চালু নিয়ম হচ্ছে। আগুন নেভাতে সিলিন্ডার রাখা বাধ্যতামূলক। সেই সিলিন্ডারের সঙ্গে যেন বহুতলের প্রতিটি তলায় পাইপ লাইনের সংযোগ থাকে।’’

পুরপ্রধানেরা যা-ই দাবি করুন, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই বহুতল নির্মাতারা তা মানেন না। উত্তরপাড়ার এক বহুতল নির্মাতার দাবি, ‘‘নিয়ম বাধ্যতামূলক হলে নিশ্চয় মানব।’’

Fire Accident Panic
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy