Advertisement
E-Paper

অন্ধকার গাঢ় হল হরিপালের বসুবাড়িতে

হরিপালের বন্দিপুরের ব্যবসায়ী স্নেহাশিস বসুর (৬০) বাড়িটা নিষ্প্রদীপ ছিল সেই ২৪ এপ্রিল থেকেই। কিন্তু সোমবার সন্ধ্যায় সেই অন্ধকার আরও গাঢ় হল।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ৩০ এপ্রিল ২০১৯ ০২:৩৮
আকস্মিক: দুর্ঘটনায় মৃত স্নেহাশিস বসু, কাকলি বসু ও ছেলে শুভজিৎ। নিজস্ব চিত্র

আকস্মিক: দুর্ঘটনায় মৃত স্নেহাশিস বসু, কাকলি বসু ও ছেলে শুভজিৎ। নিজস্ব চিত্র

দোতলা সাদা বাড়িটায় কোনও আলো জ্বলছিল না।

হরিপালের বন্দিপুরের ব্যবসায়ী স্নেহাশিস বসুর (৬০) বাড়িটা নিষ্প্রদীপ ছিল সেই ২৪ এপ্রিল থেকেই। কিন্তু সোমবার সন্ধ্যায় সেই অন্ধকার আরও গাঢ় হল।

সিকিম বেড়াতে গিয়ে গ্যাংটকে মৃত্যু হল স্নেহাশিসবাবু, তাঁর স্ত্রী কাকলি (৪২), ছেলে শুভজিৎ (২৬), স্নেহাশিসবাবুর ভাগ্নী সোমা কর (৩২) এবং সোমার স্বামী সন্দীপের (৪৪)। শুভজিতের স্ত্রী মহুয়া এবং সোমা-সন্দীপের পাঁচ বছরের ছেলে সূর্য জখম অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। সোমা-সন্দীপদের বাড়ি কলকাতার শ্যামবাজারের কাছে মদনমোহনতলা স্ট্রিটে। সাতজনের দলটি ২৪ এপ্রিল সিকিম রওনা হয়েছিল।

রবিবারের ওই দুর্ঘটনার খবর হরিপালে পৌঁছনোর পর থেকেই বসু-বাড়ির সামনে ভিড় করেন পড়শিরা। সকলের মুখই থমথমে। আশপাশ থেকে চলে আসেন আত্মীয়েরাও। ফোনে সিকিমে যোগাযোগ করার চেষ্টা করছিলেন তাঁরা। সেখানে ততক্ষণে পৌঁছে গিয়েছেন মৃত সন্দীপবাবুর শ্যালক সন্দীপ মিত্র। এ দিন বিকেলে বন্দিপুর থেকে স্ন‌েহাশিসবাবুর আত্মীয় এবং স্থানীয় কয়েক জন্য গ্যাংটক রওনা হন।

বন্দিপুর বাজারে স্নেহাশিসবাবুর কিছু দোকান রয়েছে। সেই সব দোকানঘর ভাড়া দিতেন তিনি। জেনারেটরের ব্যবসাও ছিল। বাবার সঙ্গে সেই ব্যবসা দেখতেন শুভজিৎ। স্নেহাশিসবাবুর পিসতুতো ভাই সন্দীপ সরকার বলেন, ‘‘খবরটা বিশ্বাসই হচ্ছে না। ওখান থেকে যা খবর পেয়েছি, তাতে ছাঙ্গু লেক থেকে ফেরার সময় হঠাৎ করে আবহাওয়া খারাপ হয়ে পড়ে। কিছুক্ষণ ওরা অপেক্ষাও করেছিল। কিন্তু রাত হয়ে যাবে বলে ওই পরিস্থিতিতেই এগোতে থাকে। তাতেই গাড়িটা খাদে পড়ে যায়।’’ মহুয়ার দিদিমা মায়া খাঁয়ের আক্ষেপ, ‘‘স্নেহাশিসবাবুরা ভীষণ ভাল মানুষ ছিলেন। একটা দুর্ঘটনা সব শেষ করে দিল।’’

গ্যাংটক থেকে ফোনে সন্দীপবাবু বলেন, ‘‘বোন-ভগ্নিপতি দু’জনেই চলে গেল। ভাগ্নেটা এই বয়সে বাবা-মা দু’জনকেই হারাল।’’ একইসঙ্গে তিনি জানান, সূর্যের আঘাত তেমন গুরুতর নয়। মহুয়ার দু’টি পা-ই জখম হয়েছে। হাসপাতাল থেকে ফোনে মহুয়া বলেন, ‘‘ঘন কুয়াশার মধ্যে ঝিরিঝিরি বৃষ্টি পড়ছিল। হঠাৎ গাড়িটা নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দিক ঠিক করতে না পেরে ধীরে ধীরে খাদে নেমে গেল। এর পরে আর কিছু আমার মনে নেই।’’

গত বছরের ২৬ জানুয়ারি শুভজিতের সঙ্গে মহুয়ার বিয়ে হয়। এক বছর কাটতেই মহুয়া স্বামীকে হারালেন, এ আক্ষেপও এ দিন শোনা গিয়েছে ওই বাড়ির সামনে। ময়নাতদন্তের পরে আজ, মঙ্গলবার দুপুরে মৃতদেহ নিয়ে গ্যাংটক থেকে আত্মীয়েরা রওনা হবেন বলে স্নেহাশিসবাবুদের পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে।

Death Accident Changu Lake Gangtok
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy