Advertisement
E-Paper

উলুবেড়িয়ায় ফের থানা ফুটবল লিগ চালুর দাবি

সাত বছর বন্ধ রয়েছে উলুবেড়িয়া থানা ফুটবল লিগ। জেলার অন্যান্য থানা এলাকায় এই লিগ চালু থাকলেও উলুবেড়িয়ায় তা বন্ধ থাকায় স্থানীয় ফুটবলপ্রেমীরা হতাশ। এর জন্য মহকুমা ক্রীড়া সংস্থার পাশাপাশি শাসক দলের স্থানীয় নেতৃত্বের সদিচ্ছা ও উদ্যোগ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তাঁরা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২২ জুন ২০১৫ ০১:৫২

সাত বছর বন্ধ রয়েছে উলুবেড়িয়া থানা ফুটবল লিগ। জেলার অন্যান্য থানা এলাকায় এই লিগ চালু থাকলেও উলুবেড়িয়ায় তা বন্ধ থাকায় স্থানীয় ফুটবলপ্রেমীরা হতাশ। এর জন্য মহকুমা ক্রীড়া সংস্থার পাশাপাশি শাসক দলের স্থানীয় নেতৃত্বের সদিচ্ছা ও উদ্যোগ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তাঁরা। তাঁদের দাবি, এই লিগ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এলাকার খেলাধুলোর পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। ভাল খেলোয়াড় উঠে আসার সুযোগও মার খাচ্ছে।

বর্তমান তৃণমূল পরিচালিত সরকার খেলাধুলোর উন্নতির জন্য নানা পদক্ষেপের পাশাপাশি রাজ্য জুড়ে বিভিন্ন ক্লাবগুলিকে খেলাধুলার চর্চা বাড়ানোর জন্য আঅর্তিক অনুদান দিচ্ছে। এই খাতে উলুবেড়িয়ায় অন্তত ৩০-৪০টি ক্লাব ২ লক্ষ টাকা করে পেয়েছে। শুধু তাই নয়, থানাগুলোকেও খেলাধুলার চর্চার জন্য টাকা দেওয়া হচ্ছে। জেলার অন্য থানাগুলিতে পুলিশের উদ্যোগে থেলার আয়োজন হলেও উলুবেড়িয়ায় থানা ফুটবল লিগ না হওয়ায় জেলার প্রাক্তন খেলোয়াড় থেকে ফুটবলপ্রেমী সকলেই ক্ষুব্ধ। যদিও স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব এর জন্য এলাকায় মাঠের সমস্যাকেই দায়ী করেছেন। তবে একইসঙ্গে তাঁদের বক্তব্য, উলুবেড়িয়া স্টেডিয়ামের আধুনিকীকরণ হচ্ছে। এতে উলবেড়িয়ার খেলাধুলোর পরিবেশের উন্নতি হবে। উলুবেড়িয়া দক্ষিণের বিধায়ক তথা তৃণমূলের হাওড়ার গ্রামীণ এলাকার সভাপতি পুলক রায় বলেন, ‘‘মূলত খেলার মাঠের সমস্যার জন্যই এটা হচ্ছে না। স্টেডিয়াম তৈরি হয়ে গেলেই ফুটবল লিগ চালু করা হবে।’’

স্টেডিয়াম তৈরি হয়ে গেলে সেখানে বড় বড় দলের খেলোয়াড়দের আনাগোনা বাড়বে। তখন উলুবেড়িয়া থানা লিগ আদৌ সেখানে করা যাবে কি না এমন প্রশ্নও উঠেছে। এ ব্যাপারে পুলকবাবুর বক্তব্য, ‘‘এমন আশঙ্কার কোনও কারণ নেই। স্টেডিয়ামে স্থানীয় ছেলেদের খেলার সুযোগ ঠিকই থাকবে।’’ হাওড়া জেলা যুব কল্যাণ আধিকারিক অর্ঘ্যপ্রসূন কাজি বলেন, ‘‘আমি এ ব্যাপারে জানি না। তবে খোঁজখবর নিয়ে দ্রুত যাতে থানা লিগ ফের শুরু করা যায় তার ব্যবস্থা করব।’’

উলুবেড়িয়া থানা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন সূত্রে জানা গিয়েছে, ষাটের দতশকে এই লিগ চালু হয়। মাঝে দু-এক বছর খেলা বন্ধ থাকলেও পরে ফের তদা শুরু হয়েছিল। কয়েক মাস ধরে চলা এই লিগকে ঘিরে স্থানীয় ফুটবলপ্রেমীদের উৎসাহের শেষ থাকত না। সারা বছর ধরেই এলাকার ক্লাবগুলি এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের জন্য প্রস্তুতি চালাত। উলুবেড়িয়া হাইস্কুল মাঠ, স্টেডিয়াম মাঠ, বাঁশবেড়িয়া, কালসাপার মাঠ-সহ বেশ কয়েকটি মাঠে লিগের খেলা হত। সুপার ডিভিশন, এ ডিভিশন ও বি ডিভিশন এই ভাবে খেলা হত। ৩০-৩২টি টিম অংশ নিত। কুলগাছিয়া, বীরশিবপুর, বাগান্ডা, বাসুদেবপুর, রসুদেবপুর-সহ বিভিন্ন এলাকার দল এই লিগে খেলত। ২০০৭ সাল পর্যন্তও এই লিগ চলে। উলুবেড়িয়া থানা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের প্রাক্তন সম্পাদক শেখ বিল্লাল আহমেদ বলেন, ‘‘২০০৭ সালে একটি ক্লাবের সঙ্গে ঝামেলা হয়, তা আদালত পর্যন্ত গড়ায়। পরে তা মিটে গেলেও রাজনৈতিক পরিস্থিতি পাল্টাতে থাকায় আর লিগ চালানো সম্ভব হয়নি।’’

২০১১ সালের রাজ্যে সরকার বদল হলেও থানা লিগ ফের চালুর ব্যাপারে তারাও উদ্যোগী হয়নি বলে অভিযোগ। যদিও লিগ চালু তো দূরের কথা, এখনও পর্যন্ত এ নিয়ে কোনও কমিটিই তৈরি হয়নি বলে তৃণমূল সূত্রে খবর।

অসীম রায় (রাজস্থান ক্লাবের প্রাক্তন ফুটবলার), শেখ সুরাপউদ্দিন (মহমেডান স্পোর্টিংয়ের জুনিয়ার দলের প্রাক্তন ফুটবলার) বলেন, ‘‘দীর্ঘ দিন লিগ না-হওয়ায় উলুবেড়িয়ায় খেলার পরিবেশ কার্যত নষ্ট হয়ে গিয়েছে। আমরা চাই, এখানে খেলাধুলোর পরিবেশ ফিরে আসুক।’’ ১৯৮৭ সালে নেহরু কাপে ভারতীয় দলের অধিনায়ক উলুবেড়িয়ার ছেলে তরুণ দে বলেন, ‘‘এই লিগ বন্ধ হওয়াটা খুবই দুঃখজনক। খেলাধুলার স্বার্থে সব রাজনৈতিক দল, প্রাক্তন খেলোয়াড় ও প্রশাসন মিলে উদ্যোগী হয়ে এই লিগ ফের দ্রত চালু করা উচিত।’’ উলুবেড়িয়ার সাংসদ সুলতান আহমেদ বলেন, ‘‘থানা লিগ বন্ধ থাকার কথা জানি। ফের যাতে তা চালু হয় সে জন্য স্থানীয় নেতৃত্বের সঙ্গে কথা বলব।’’

Uluberia football Trinamool sports Ashim roy football association
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy