Advertisement
E-Paper

বাগনানে নিকাশি নালার কাজ বন্ধ

কাজিয়া বেধেছে রেলের সঙ্গে পঞ্চায়েত সমিতির। তার জেরে বন্ধ হয়ে গিয়েছে বাগনানের নিকাশি খাল সংস্কারের কাজ। ফলে এই বর্ষায় ফের বাগনান শহর যে ফের জলমগ্ন হয়ে পড়বে তা নিয়ে কোনও সন্দেহই নেই শহরবাসীর।

নুরুল আবসার

শেষ আপডেট: ০৪ জুলাই ২০১৬ ০২:৩৭
এই নিকাশি নালা সংস্কার নিয়েই বেধেছে গোলমাল। ছবি: সুব্রত জানা।

এই নিকাশি নালা সংস্কার নিয়েই বেধেছে গোলমাল। ছবি: সুব্রত জানা।

কাজিয়া বেধেছে রেলের সঙ্গে পঞ্চায়েত সমিতির। তার জেরে বন্ধ হয়ে গিয়েছে বাগনানের নিকাশি খাল সংস্কারের কাজ। ফলে এই বর্ষায় ফের বাগনান শহর যে ফের জলমগ্ন হয়ে পড়বে তা নিয়ে কোনও সন্দেহই নেই শহরবাসীর।

বাগনান শহরের উত্তর দিক দিয়ে রেলের নয়ানজুলি বয়ে গিয়েছে। কিন্তু বছরের পর বছর দোকানের বর্জ্য পড়ে নয়ানজুলির অনেকটা অংশ মজে গিয়েছে। নয়ানজুলি সংস্কার হলে শহরের জল তার মাধ্যমে দামোদর এবং রূপনারায়ণ নদে পড়বে। ফলে শহরবাসী জল জমার হাত থেকে রেহাই পাবেন। সেইমতো এই নয়ানজুলি সংস্কারের পরিকল্পনা করে বাগনান ১ পঞ্চায়েত সমিতি। কাজটি করার জন্য পঞ্চায়েত সমিতি দেয় ১২ লক্ষ টাকা। বিধায়ক অরুণাভ সেন তাঁর বিধায়ক তহবিল থেকে দেন ১৬ লক্ষ টাকা। সেইমতো নয়ানজুলি সংস্কারে নামে পঞ্চায়েত সমিতি।

কিন্তু গোলমাল দেখা দেয় স্টেশন রোড (উত্তর)-এর নীচ দিয়ে যে নিকাশি নালা গিয়েছে তা পরিষ্কার করার সময়। পঞ্চায়েত সমিতির কর্তারা জানান, স্টেশন রোডের (উত্তর) অন্তত ৮ ফুট নীচে রয়েছে ওই নিকাশি নালা। কিন্তু বর্জ্য জমে এমনই অবস্থা যে এত নীচে নেমে ময়লা সাফ যথেষ্ট কঠিন। অথচ এই নালা সাফ করা না হলে রাস্তার দু’দিকের নয়ানজুলির জল প্রবাহিত হতে পারবে না। পঞ্চায়েত সমিতি সিদ্ধান্ত নেয় রাস্তা কেটে নালা সাফ করা হবে। কাজ হয়ে গেলে তার উপরে একটি কালভার্ট তৈরি করে দেওয়া হবে। এমনভাবে সেটি বানানো হবে যাতে উপর দিয়ে অনায়াসে গাড়ি চলাচল করতে পারে।

যেহেতু নয়ানজুলি এবং রাস্তার এই অংশটি পড়ে রেলের অধীনে। তাই কাজ করার জন্য রেলের অনুমতি চেয়ে চিঠি লেখা হয়। কালভার্ট করার জন্য রেলের অনুমতি নেওয়ার দরকার পড়ে। পঞ্চায়েত সমিতির কর্তাদের দাবি, রেল কর্তৃপক্ষ লিখিত অনুমতি না দিলেও মৌখিকভাবে কাজটি করতে বলেন। সেইমতো নয়ানজুলি সাফ করার কাজ শুরু হয়। কিন্তু সমস্যা দেখা দেয় রাস্তা ভেঙে কালভার্ট তৈরির সময়। পঞ্চায়েত সমিতির অভিযোগ, রাস্তা ভেঙে কালভার্ট করতে গেলে আরপিএফ বাধা দেয়। বাগনানের বিধায়ক অরুণাভ সেন বলেন, ‘‘দক্ষিণ পূর্ব রেল কর্তৃপক্ষের কাছ মৌখিক অনুমতি পাওয়ার পরেই ঠিকা সংস্থা কাজে নামে। কিন্তু আরপিএফ ঠিকা সংস্থার কর্মীদের ভয় দেখিয়ে কাজ বন্ধ করতে বাধ্য করে।’’ একই অভিযোগ করে পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি নয়ন হালদার বলেন, ‘‘আরপিএফ আমাদের কোনও কথা শুনতে চায়নি। লিখিত অনুমতি না দেখাতে পারলে কাজ করতে দেওয়া হবে না বলে তারা জানিয়ে দেয়। অথচ বার বার আবেদন করা সত্ত্বেও রেল কর্তৃপক্ষ লিখিত অনুমতি দিতে রাজি নন। ফলে কাজ বন্ধ করে দিতে আমরা বাধ্য হই।’’

নিকাশির কাজের জন্য ইতিমধ্যেই রাস্তার ধারে বেশ কিছু দোকানদার তাঁদের দোকান সরিয়ে জায়গা ফাঁকা করে দিয়েছেন। পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি বলেন, ‘‘আমরা অনুরোধ করায় ওই দোকানিরা উন্নয়নমূলক কাজের স্বার্থে সরে গিয়েছেন। কিন্তু আসল কাজটাই তো হল না।’’ আপাতত নয়ানজুলির পানা পরিষ্কার করা হচ্ছে। পঞ্চায়েত সমিতির কর্তাদের দাবি, যতটুকু কাজ হয়েছে তাতে পরিস্থিতি কিছুটা সামাল দেওয়া যাবে। কিন্তু কালভার্ট তৈরি হলে শহরবাসী জলমগ্ন হওয়ার হাত থেকে অনেকটাই রেহাই পেতেন।

আরপিএফের পক্ষ থেকে অবশ্য কাজ বন্ধ করার অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে। বাহিনী সূত্রের খবর, পঞ্চায়েত সমিতি রাতে কাজ করতে চাইছিল। কিন্তু এই এলাকা দিয়ে বিদ্যুতের লাইন গিয়েছে। রাস্তা কাটার সময়ে তারের ক্ষতি হলে রেল চলাচল বিঘ্নিত হতে পারত। তাই সমিতিকে বলা হয়েছিল দিনের বেলায় কাজ করতে। তবে দক্ষিণ-পূর্ব রেলের খড়্গপুর ডিভিশনের এক পদস্থ কর্তা জানান, রাস্তা কেটে কালভার্ট করার ব্যাপারে ইঞ্জিনিয়ারদের সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে।

Bagnan Drain work
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy