পরিস্থিতি সামাল দিতে ঘটনাস্থলে র্যাফ। ছবি: প্রকাশ পাল।
বধূর অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে রবিবার উত্তপ্ত হয়ে উঠল হুগলির উত্তরপাড়ার মাখলা। মহিলাকে খুনের অভিযোগ তুলে দেহ ঘিরে সকাল থেকে বিকাল পর্যন্ত দফায় দফায় বিক্ষোভ দেখায় জনতা। মৃতদেহ উদ্ধার করতে গিয়ে বিক্ষোভের মুখে পড়তে হয় পুলিশকে। শেষ পর্যন্ত পুলিশ বধূর শাশুড়ি এবং জা-কে গ্রেফতার করলে পরিস্থিতি শান্ত হয়। জেলা পুলিশের এক অফিসার বলেন, ‘‘নির্দিষ্ট ধারায় মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু হয়েছে। মৃতার স্বামী এবং দেওর পলাতক। তাঁদের খোঁজ চলছে।’’
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, মৃত শম্পা সরকার বাগ (৩০)-এর বাপের বাড়ি নালিকুলে। বছর খানেক আগে মাখলার গভর্নমেন্ট কলোনির বাসিন্দা সোমনাথ সরকারের সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়। সোমনাথ বেলুড়ে একটি কারখানায় কাজ করেন। শম্পা তাঁর দ্বিতীয় স্ত্রী। বছর দু’য়েক আগে প্রথম স্ত্রী আগুনে পুড়ে মারা যান। সেই নিয়ে আদালতে মামলাও চলছে। শম্পার বাপের বাড়ির লোকের অভিযোগ, বিয়ের পর থেকেই পণের জন্য শম্পার উপর অত্যাচার করতেন শ্বশুরবাড়ির লোকজন। কিন্তু ভালভাবে সংসার করার জন্য মুখ বুজে সব সহ্য করতেন শম্পা। কিন্তু শেষ রক্ষা হলো না। শ্বশুরবাড়ির লোকেরাই তাঁদের মেয়েকে মেরে ফেলল।
এ দিন সকাল ১১টা নাগাদ প্রতিবেশীরা শম্পার মৃতদেহ খাটে শোওয়ানো অবস্থায় দেখেন। শ্বশুরবাড়ির লোকেরা জানান, শম্পা গলায় দড়ি দিয়ে আত্মঘাতী হন। তাঁরাই দেহ নামিয়েছেন। প্রতিবেশীরা তা বিশ্বাস করতে চাননি। ঘটনার কথা চাউর হতেই দলে দলে লোক ওই বাড়ির সামনে জড়ো হন। শ্বাসরোধ করে শম্পাকে খুন করা হয়েছে অভিযোগ তুলে জনতা বিক্ষোভ শুরু করে। ঘটনার পরেই শম্পাদেবীর স্বামী এবং দেওর গা-ঢাকা দেন। জনতা শাশুড়ি ও ননদকে মারধর করে। বাড়িতে এবং মোটরবাইক ভাঙচুর করা হয়। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে দেহ উদ্ধার করতে গেলে বিক্ষোভের মুখে প়ড়ে। পরিস্থিতি সামাল দিতে ডানকুনি থানার পুলিশ এবং র্যাফ নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছন শ্রীরামপুরের এসডিপিও সুবিমল পাল। পৌঁছে যান স্থানীয় কাউন্সিলর তথা উত্তরপাড়ার পুরপ্রধান দিলীপ যাদবও। জনতা ‘দোষী’দের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে মৃতদেহ নিয়ে যেতে দেওয়া হবে না বলে জানিয়ে দেয়। বিকেলে মৃতার মা উত্তরপাড়া থানায় মেয়েকে শ্বাসরোধ করে মেরে ফেলা হয়েছে বলে শ্বশুরবাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন। অভিযোগের ভিত্তিতে শাশুড়ি কৃষ্ণা সরকার এবং জা শ্রীমন্তী সরকারকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এর পরে বিক্ষোভ উঠলে পুলিশ শম্পাদেবীর মৃতদেহ ময়নাতদন্তে পাঠায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy