এক গৃহবধূকে গলা টিপে খুনের দায়ে তাঁর স্বামী, শাশুড়ি এবং খুড়শ্বশুরকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা দিল চুঁচুড়া আদালত। সাজাপ্রাপ্তরা হল— প্রশান্ত হেমব্রম, ভারতী হেমব্রম ও ফুলকুমার হেমব্রম। তাদের বাড়ি পান্ডুয়ার হাড্ডেপাড়ায়। বুধবার আদালতের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারক পুলক তিওয়ারি এই সাজা শোনান। ঘটনার ২ বছর ৪ মাসের মধ্যে মামলার নিষ্পত্তি হল।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রশান্তের সঙ্গে ধনেখালির শিবাইচণ্ডী এলাকার তরুণী চুমকি কিস্কুর বিয়ে হয়েছিল ২০১০ সালে। বিয়ের সময় পণ নিয়েছিল প্রশান্তের পরিবার। পরে আরও পণের দাবিতে চুমকির উপর অত্যাচার শুরু করে শ্বশুরবাড়ির লোকেরা। বাপেরবাড়ি থেকে পণ আনার জন্য চাপ দেওয়া ছাড়াও তাঁকে মারধর করা হত বলেও অভিযোগ উঠেছিল।
২০১৪ সালের ৩ এপ্রিল ওই বধূর মৃত্যু হয়। তাঁর বাবা মৌলি কিস্কু পান্ডুয়া থানায় জামাই প্রশান্ত, শাশুড়ি ভারতী এবং খুড়শ্বশুর ফুলকুমারের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। ওই অভিযোগের ভিত্তিতে খুনের মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করে পুলিশ। অভিযুক্ত তিন জনকেই গ্রেফতার করা হয়। মামলার সরকারি আইনজীবী বিদ্যুৎ রায়চৌধুরী জানান, সেই সময় সরকারি একটি নির্দেশ ছিল, মহিলাদের বিরুদ্ধে অপরাধের ঘটনার তদন্ত মহিলা অফিসারকে দিয়ে করাতে হবে। সেই অনুযায়ী চুঁচুড়া মহিলা থানার তৎকালীন ওসি শেলি বন্দ্যোপাধ্যায়কে মামলার তদন্তভার দেওয়া হয়। তদন্তকারী অফিসার আদালতে অভিযুক্ত তিন জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেন। চুঁচুড়া আদালতের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা বিচারকের এজলাসে মামলার শুনানি হয়। মামলা চলাকালীন অভিযুক্ত তিন জনেই জামিন পেয়ে যান। আদালতে অভিযুক্ত তিন জনেরই দোষ প্রমাণিত হয়। আদালতে অবশ্য আসামীরা দাবি করেন, তাঁরা নির্দোষ।
বিদ্যুৎবাবু জানান, মোট ১৮ জন সাক্ষ্য দেন। তাঁদের মধ্যে ৬ জন ঘটনার পরে আদালতে এসে ম্যাজিস্ট্রেটের কাছে গোপন জবানবন্দিও দিয়েছিলেন। সোমবার বিচারক পুলক তিওয়ারি অভিযুক্ত ৩ জনকেই দোষী সাব্যস্ত করেন। ওই দিনই আসামীদের হেফাজতে নেয় আদালত। বুধবার বিচারক সাজা ঘোষণা করেন। বিদ্যুৎবাবু বলেন, ‘‘আসামীরা গলা টিপে ওই গৃহবধূকে মেরে ফেলেন বলে আদালতে প্রমাণিত হয়েছে। বিচারক দোষী তিন জনকেই যাবজ্জীবন সশ্রম কারাবাসের সাজা দিয়েছেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy