Advertisement
০২ মে ২০২৪
Coronavirus

বাড়ল গণ্ডিবদ্ধ এলাকা, হাসপাতালও

হুগলি জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, গত এক সপ্তাহে জেলায় আড়াইশো জনেরও বেশি মানুষের শরীরে করোনাভাইরাসের উপস্থিতির প্রমাণ মিলেছে।

প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

নুরুল আবসার ও প্রকাশ পাল
উলুবেড়িয়া ও চুঁচুড়া শেষ আপডেট: ০৮ জুন ২০২০ ০৬:৩৬
Share: Save:

যত দিন যাচ্ছে, পাল্লা দিয়ে বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। হাওড়া ও হুগলি জেলায় করোনা-আক্রান্তের ছবিটা একই রকম। দুই জেলাতেই প্রশাসনের আধিকারিকদের দাবি, গত তিন সপ্তাহ ধরে এই জেলায় যত মানুষের শরীরে এই ভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়ছে, তাঁদের অধিকাংশই পরিযায়ী শ্রমিক।

হুগলি জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, গত এক সপ্তাহে জেলায় আড়াইশো জনেরও বেশি মানুষের শরীরে করোনাভাইরাসের উপস্থিতির প্রমাণ মিলেছে। এর অধিকাংশই মহারাষ্ট্র-সহ বিভিন্ন রাজ্য থেকে ফিরে আসা শ্রমিক। জেলাশাসক ওয়াই রত্নাকর রাও বলেন, ‘‘প্রায় চারশো পরিযায়ী শ্রমিক করোনায় আক্রান্ত বলে পরীক্ষায় জানা গিয়েছে। গত আড়াই মাসে বাকিদের সংক্রমণ এর অর্ধেক।’’ এক সপ্তাহ আগে প্রশাসনের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী এই জেলায় মোট করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ছিল ৩১৭। তার মধ্যে পরিযায়ী শ্রমিক ছিলেন ১৩০ জন। অর্থাৎ এই ক’দিনে আরও প্রায় ১৭০ জন পরিযায়ী শ্রমিক আক্রান্তের তালিকায় যুক্ত হয়েছেন।

শনিবার শ্রীরামপুর শ্রমজীবী কোভিড হাসপাতালে করোনা আক্রান্ত ১১ জন যুবক ভর্তি হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ৮ জনই তারকেশ্বর ব্লকের বাসিন্দা। অপর তিন জনের বাড়ি রিষড়া, সিঙ্গুর এবং ত্রিবেণীতে। ভর্তি হওয়া যুবকদের অধিকাংশই পরিযায়ী শ্রমিক। রবিবার ওই হাসপাতাল থেকে পাঁচ যুবক ছাড়া পেয়েছেন। তাঁদের দু’জন করে তারকেশ্বর এবং অপর জন চণ্ডীতলার বাসিন্দা।

হাওড়াতেও মাত্র এক সপ্তাহের মধ্যে ‘গণ্ডিবদ্ধ’ এলাকার সংখ্যা বেড়ে গিয়েছে এক ধাক্কায় অনেকটাই। ১ জুন পর্যন্ত জেলায় মোট গণ্ডিবদ্ধ এলাকার সংখ্যা ছিল যেখানে ৭৬টি, সেখানে ৭ জুন সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১২১টিতে। এর মধ্যে শুধু গ্রামীণ এলাকাতে গণ্ডিবদ্ধ এলাকার সংখ্যা ৪২ থেকে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭৭টিতে। পাশাপাশি জেলা স্বাস্থ্য দফতরের বক্তব্য, জেলায় এ পর্যন্ত প্রায় ২০ হাজার পরিযায়ী শ্রমিক এসেছেন। এক সপ্তাহ আগে পর্যন্ত জেলায় আক্রান্তের মোট সংখ্যা যেখানে ছিল ১০২৯ এখন সেই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১২৫৮তে।

গ্রামীণ জেলার মধ্যে সব থেকে বেশি গণ্ডিবদ্ধ এলাকা করা হয়েছে উদয়নারায়ণপুরে। এখানে সংখ্যাটা ২৬। এই এলাকা থেকে ৬ জুন পর্যন্ত ৫০ জনের আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া গিয়েছে। সবাই পরিযায়ী শ্রমিক। এছাড়া যেখানে গণ্ডিবদ্ধ এলাকা আছে সেগুলি হল উলুবেড়িয়া পুরসভা (৪), বাগনান ১ ব্লক (৩), ডোমজুড় (২), সাঁকরাইল (৪), পাঁচলা (৬), শ্যামপুর ১ (৫), শ্যামপুর ২ (২), উলুবেড়িয়া ১ (৭), উলুবেড়িয়া ২ (৩), আমতা ১ (৮), আমতা ২ (২) এবং জগৎবল্লভপুর (৫)।

আক্রান্তের সংখ্যা দিনের পর দিন বেড়ে চলায় চিন্তিত হাওড়া জেলা স্বাস্থ্য দফতর ও জেলা প্রশাসনের কর্তারাও। এই পরিস্থিতিতে করোনা হাসপাতালের সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। ফুলেশ্বরের একটি বেসরকারি হাসপাতালকে করোনা হাসপাতালে পরিণত করা হয়েছে আগেই। হাওড়া শহরের একটি বেসরকারি হাসপাতালকেও করোনা হাসপাতালে পরিণত করা হয়েছে। নতুন সংযোজন হাওড়ারই টি এল জয়সওয়াল হাসপাতাল। এছাড়া শ্রম দফতরের অধীনে থাকা উলুবেড়িয়া ইএসআই এবং বালিটিকুরি ইএসআই হাসপাতালকেও করোনা হাসপাতালে পরিণত করা হয়েছে বলে শ্রম দফতরের রাষ্ট্রমন্ত্রী নির্মল মাজি জানান।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Coronavirus Howrah Hooghly
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE