Advertisement
E-Paper

প্রচার বানচালের চেষ্টার নালিশ, তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব অব্যাহত

ভোটের আগেই সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতে তারকেশ্বর পুরসভা দখলে এসে গিয়েছে। তা সত্ত্বেও গোষ্ঠীকোন্দলের জেরে দলের অস্বস্তি কাটছে না সেখানে। এ বার এলাকার কয়েকজন তৃণমূল কর্মীর বিরুদ্ধেই দলীয় প্রার্থীর পাড়া-বৈঠক ভেস্তে দেওযার চেষ্টার অভিযোগ উঠল। এই ওয়ার্ডে বিরোধী দলগুলি প্রার্থী দিতে পারেননি। এখানে তৃণমূল প্রার্থী কাকলি বন্দ্যোপাধ্যায়ের একমাত্র প্রতিপক্ষ নির্দল প্রার্থী কুহেলি কুণ্ডু।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৯ এপ্রিল ২০১৫ ০২:০৫

ভোটের আগেই সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতে তারকেশ্বর পুরসভা দখলে এসে গিয়েছে। তা সত্ত্বেও গোষ্ঠীকোন্দলের জেরে দলের অস্বস্তি কাটছে না সেখানে। এ বার এলাকার কয়েকজন তৃণমূল কর্মীর বিরুদ্ধেই দলীয় প্রার্থীর পাড়া-বৈঠক ভেস্তে দেওযার চেষ্টার অভিযোগ উঠল।

এই ওয়ার্ডে বিরোধী দলগুলি প্রার্থী দিতে পারেননি। এখানে তৃণমূল প্রার্থী কাকলি বন্দ্যোপাধ্যায়ের একমাত্র প্রতিপক্ষ নির্দল প্রার্থী কুহেলি কুণ্ডু। যিনি একাধারে তারকেশ্বর শহর মহিলা তৃণমূলের সভানেত্রী এবং বিদায়ী উপ-পুরপ্রধান উত্তম কুণ্ডুর স্ত্রী। ফলে অভিযোগের তির তাঁদের বিরুদ্ধেই। কুহেলীদেবী অবশ্য অভিযোগ মানেননি।

নির্দল হয়ে দাঁড়ানোয় জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব নেতানেত্রীকেই সাসপেন্ড করেছে। কুহেলির ক্ষেত্রে অবশ্য তার অন্যথা হয়েছে। দলের বাড়িতে গিয়ে দফায় দফায় তাঁকে বোঝান। মহিলা তৃণমূলের পদ থেকে তিনি ইস্তফাপত্র দিলেও দল এখনও তা ম়ঞ্জুর করেনি। দলের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এ ব্যাপারে পদক্ষেপ করা হবে বলে জানিয়েছেন জেলা মহিলা তৃণমূলের সভানেত্রী করবী মান্না। শেষ পর্যন্ত, লিফলেট দিয়ে দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে লড়াই থেকে কুহেলি সরে দাঁড়াবেন বলে দলকে জানান।

তৃণমূল শিবিরের খবর, দলের নির্দেশে কাকলিদেবী এবং বিদায়ী পুরপ্রধান স্বপন সামন্ত মঙ্গলবার কুহেলির বাড়িতে যান। ঠিক হয়, বুধবার সন্ধ্যায় দেশবন্ধু মূর্তির সামনে কুহেলির সমর্থনে পাড়া-বৈঠকে থাকবেন কুহেলি। সেই মতো এ দিন সন্ধ্যায় কাকলি-সহ অন্য তৃণমূল নেতারা সেখানে যান। কিন্তু এলাকার লোকজনের কাছে তাঁরা জানতে পারেন, এলাকার তিন তৃণমূল কর্মী এসে বলে গিয়েছেন, বৈঠক বাতিল করা হয়েছে। এ নিয়ে উত্তেজনা ছড়ায়। শেষ পর্যন্ত, কোনওক্রমে বৈঠক করা হয়। কুহেলি অবশ্য হাজির হননি। উত্তমবাবুকেও দেখা যায়নি। তৃমমূল প্রার্থীর হয়ে প্রচারে বেরনো লোকজন বলছেন, মুখে বললেও বাস্তবে হয়তো লড়াই থেকে কুহেলি সরবেন না! এ দিন অবশ্য রাজ্যের মন্ত্রী তথা স্থানীয় বিধায়ক রচপাল সিংহের তরফে লিফলেট ছড়ানো হয়। কুহেলি প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে সরে দাঁড়াচ্ছেন বলে তাতে জানানো হয়। বৈঠক বাতিল করার চেষ্টার প্রসঙ্গে স্বপনবাবু বলেন, ‘‘দলীয় নেতৃত্বের সঙ্গে এ নিয়ে আলোচনা করব। দল যা বলবে, তা-ই করব।’’ রচপাল বলেন, ‘‘কারা এমন করেছেন, খোঁজ নেব।’’ মন্ত্রীর সংযোজন, ‘‘কুহেলি প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে সরে দাঁড়াবেন বলে জানিয়েছেন। আমি সেই লিফলেট মানুষকে দিচ্ছি। উনি কেন বৈঠকে গেলেন না, তা নিয়ে কথা বলব।’’ কুহেলীদেবীর বক্তব্য, ‘‘কাকলি ১৮ তারিখ মনোনয়ন জমা দেন। কিন্তু তার পর থেকে আমার বা জনগণের সঙ্গে কোনও যোগাযোগ করেননি। তাই নির্দল হয়ে দাঁড়িয়েছিলাম। তবে, দলের কথায় লড়াই থেকে সরে দাঁড়িয়েছি। আগামীকাল থেকে ওঁর হয়ে প্রচারে নামব। আর দলের বিপক্ষে সংবাদমাধ্যমে কিছু বলব না।’’

প্রসঙ্গত উত্তম এবং কুহেলিকে টিকিট দেওয়া নিয়ে এ বার একের পর এক নাটক হয় তৃণমূলের অন্দরে। তৃণমূল রাজ্যের ক্ষমতায় আসার পরেই থানায় ঢুকে পুলিশকে মারধরের অভিযোগ ওঠে উপ-পুরপ্রধান উত্তমবাবুর বিরুদ্ধে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে পুরভবন কার্যত ঘিরে ফেলে তাঁকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাতেও ডাকাবুকো এই নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠা বন্ধ হয়নি। বিরোধীরা যেমন তাঁর বিরুদ্ধে ‘সন্ত্রাস’-এর নালিশ জানিয়েছে, তেমনি দলেও ভুরি ভুরি অভিযোগ উঠেছে। দেবোত্তর সম্পত্তিতে এক নিকটাত্মীয়কে বাড়ি করে দেওয়া, নিয়ম বহির্ভূত ভাবে বহুতল তৈরি-সহ নানা অভিযোগ তাঁর বিরুদ্ধে জমা পড়ে তৃণমূলের শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে। এই সব অভিযোগের প্রেক্ষিতে তৃণমূলের রাজ্য নেতৃত্ব এ বার ঠিক করেছিল উত্তমবাবুকে টিকিট দেওয়া হবে না। তার বদলে কুহেলীকে দাঁড় করানো হবে। কিন্তু উত্তমের ঘনিষ্ঠ এক মন্ত্রী এবং সাংসদ দলের সেই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ান। তাঁদের বদান্যতাতেই দল একশো আশি ডিগ্রি ঘুরে গিয়ে উত্তমকে টিকিট দেয়। তবে কুহেলিকে প্রার্থী করা হয়নি। শেষে, কুহেলী ৩ নম্বর ওয়ার্ডে নির্দল হয়ে দাঁড়িয়ে পড়েন।

শেষ পর্যন্ত পরিস্থিতি কোন দিকে গড়ায় সেটাই দেখার।

tarakeswar trinamool tmc congress cpm bjp municipal election south bengal
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy