Advertisement
E-Paper

অনুদান পেতে গভীর রাতেও থানায় লাইন

চেক হাতে নিয়ে পান্ডুয়ার অরবিন্দ পল্লির শিখা দাস তো বলেই ফেললেন, ‘‘বেশ ভাল লাগছে। এত টাকার চেক! রাত হয়েছে বলে নেব না? পুজো বলে কথা!’’

গৌতম বন্দ্যোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ১২ অক্টোবর ২০১৮ ০১:৫৫
উৎসাহ: রাতে পান্ডুয়া থানায় হাজির ক্লাবের সদস্যরা। নিজস্ব চিত্র

উৎসাহ: রাতে পান্ডুয়া থানায় হাজির ক্লাবের সদস্যরা। নিজস্ব চিত্র

রাত তখন প্রায় দেড়টা। বাইরে ঝিরঝিরে বৃষ্টি। তার মধ্যে পান্ডুয়া থানার সামনে জনাপঞ্চাশের লাইন। হাজির মহিলারাও!

বুধবার, দেবীপক্ষের দ্বিতীয়ায় এই ছবিটা শুধু পান্ডুয়ার নয়, হুগলি জেলার অনেক থানার সামনেই দেখা গিয়েছে। পুজো অনুদানের ১০ হাজার টাকার সরকারি চেক মিলবে বলে কথা!

সেই চেক হাতে নিয়ে পান্ডুয়ার অরবিন্দ পল্লির শিখা দাস তো বলেই ফেললেন, ‘‘বেশ ভাল লাগছে। এত টাকার চেক! রাত হয়েছে বলে নেব না? পুজো বলে কথা!’’ উত্তরপাড়ার এক পুজো উদ্যোক্তার কথায়, ‘‘সরকার পাশে এসে দাঁড়িয়েছে। তাই রাত না দিন, অত দেখছি না। চেক পেয়েছি, ব্যস্‌!’’

পুজো উদ্যোক্তাদের সরকারি অনুদান দেওয়ার বিষয়ে কলকাতা হাইকোর্ট কি হস্তক্ষেপ করবে? এই প্রশ্নে গত কয়েক দিন ধরে বিস্তর চর্চা চলেছে। কারণ, ওই অনুদানের বিরুদ্ধে জনস্বার্থ মামলা হয়। কিন্তু বুধবার হাইকোর্ট জানিয়ে দেয়, আইনে আদালতের হস্তক্ষেপের ব্যবস্থা নেই। তাই পুজো উদ্যোক্তাদের সরকারি অনুদান দেওয়ার বিষয়ে হস্তক্ষেপ করতে চায় না তারা।

এ কথা জানার পরেই হুগলির বিভিন্ন পুজো উদ্যোক্তারা সময় গোনা শুরু করেন। বিকেলের পর থেকে পুলিশের ফোন পেতে শুরু করেন তাঁরা। ‘তিতলি’র চেয়েও দ্রুত গতিতে ছড়ায় খবর। বুধবার রাতেই মিলবে চেক। সেইমতো ভিড় জমে থানাগুলির সামনে। হুগলির পুলিশ সুপার (গ্রামীণ) সুকেশ জৈন জানান, বৃহস্পতিবার বিকেল পর্যন্ত ১৬টি থানা এলাকার ৬৭৫টি ক্লাবকে টাকা দেওয়া হয়েছে। তার পরেও কাজ চলেছে। চন্দননগর কমিশনারেট জানিয়েছে, তাদের আওতাধীন এলাকায় এ দিন বিকেল পর্যন্ত ৯১৪টি পুজোর উদ্যোক্তাদের চেক দেওয়া হয়েছে।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এ বার ওই অনুদান দেওয়ার কথা ঘোষণা করা মাত্র জেলার বহু উদ্যোক্তাই পুজোর আবেদনপত্র নিখুঁত করে জমা দেওয়ার চেষ্টায় দিনরাত এক করে ফেলেছিলেন। যাতে দশ হাজার টাকা ফসকে না যায়! পুলিশ জানিয়েছিল, গতবারের মতো এ বারও যাদের নিয়মমাফিক পুজোর অনুমতি আছে, তারাই টাকা পাওয়ার যোগ্য। তার উপর আবার পুজো কমিটিগুলির বিরুদ্ধে এলাকার মানুষের অভিযোগ থাকলে চলবে না। নিয়মকানুন মিটিয়ে অনলাইনে আবেদন করে কমিটিগুলি যখন অপেক্ষার দিন গোনা শুরু করেছে, তখন হাইকোর্টে মামলা।

শেষমেশ বুধবার রাত থেকে তাদের মুখে হাসি ফুটল। শ্রীরামপুরের চাতরার মহিলা পরিচালিত একটি পুজো কমিটির সম্পাদিকা পারমিতা ঘোষ বলেন, ‘‘মানুষ সংসার চালাতেই নাজেহাল। তাই শুধু চাঁদা তুলে পুজো করার দিন এখন শেষ। সরকার যে ভাবে এসে পুজো কমিটিগুলোর পাশে দাঁড়িয়েছে তাতে আমরা খুশি।’’ চুঁচুড়া ভগবতীডাঙা সর্বজনীনের সম্পাদিকা দীপা দাস বলেন, ‘‘আমাদের ছোট ক্লাব। দশ হাজার টাকা চাঁদা তুলতে কালঘাম ছুটে যায়। এ বার সরকার টাকা দেওয়ায় অনেক সুবিধা হল।’’

Puja Dole Police Station Puja Committee
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy