Advertisement
E-Paper

নেতা গ্রেফতার ঘিরে ধুন্ধুমার

ফাঁড়িতে ভাঙচুর চালানোর অভিযোগে পুলিশ বিক্ষোভকারীদের পাঁচ জনকে গ্রেফতার করা হয়। অভিযোগ উড়িয়ে বিজেপি নেতৃত্বের দাবি, ফাঁড়িতে ভাঙচুর হয়নি। রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে পুলিশ সাজানো অভিযোগ করছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১০ মে ২০১৯ ০২:১১
সামাল: পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশের লাঠিচার্জ। নিজস্ব চিত্র

সামাল: পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশের লাঠিচার্জ। নিজস্ব চিত্র

শ্রীরামপুরের তৃণমূল প্রার্থী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিয়ে ফেসবুকে কুরুচিকর পোস্ট করার অভিযোগে পুলিশ এক আরএসএস নেতাকে গ্রেফতার করেছিল বুধবার রাতে। তার জেরে ধুন্ধুমার হল শেওড়াফুলিতে। ধৃতকে ছেড়ে দেওয়ার দাবিতে বিজেপি-আরএসএসের লোকজন রাস্তা অবরোধ, ফাঁড়ি ঘেরাও করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে পুলিশ লাঠিচার্জ করে।

ফাঁড়িতে ভাঙচুর চালানোর অভিযোগে পুলিশ বিক্ষোভকারীদের পাঁচ জনকে গ্রেফতার করা হয়। অভিযোগ উড়িয়ে বিজেপি নেতৃত্বের দাবি, ফাঁড়িতে ভাঙচুর হয়নি। রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে পুলিশ সাজানো অভিযোগ করছে। গোলমালের সময় ঘটনাস্থলে উপস্থিত বিজেপির শ্রীরামপুর সাংগঠনিক জেলা সভাপতি সুমন ঘোষ। তাঁর দাবি, ‘‘ফেসবুক পোস্টটিতে খারাপ কিছু ছিল না। মানুষকে আবেগপ্রবণ না-হয়ে ভেবেচিন্তে ভোট দেওয়ার আবেদন জানানো হয়েছিল। এটা অপরাধ? পুলিশ বিনা প্ররোচনায় বর্বরোচিত ভাবে লাঠিচার্জ করল। ফাঁড়ি ভাঙচুরের সাজানো অভিযোগ করল।’’

চন্দননগর কমিশনারেটের এক কর্তা বলেন, ‘‘নির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতেই পুলিশ ব্যবস্থা নিয়েছে। পুলিশের কাজে বাধা দেওয়া হয়েছে। ফাঁড়িতেও ভাঙচুর চালানো হয়েছে।’’ তৃণমূ‌ল নেতা তথা কল্যাণবাবুর নির্বাচনী এজেন্ট দিলীপ যাদব বলেন, ‘‘ফেসবুকে ওই কুরুচিকর পোস্টের ব্যাপারে আমরা তথ্য প্রমাণ দিয়ে অভিযোগ দায়ের করেছিলাম। পুলিশ পুলিশের কাজ করছে। বিজেপির জনভিত্তি নেই বলে হুজ্জুতি করেছে।’’

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, গত ৩ মে শ্রীরামপুরে প্রচারের সময় কল্যাণবাবুর সঙ্গে এক তরুণী ছিলেন। দু’জনের ছবি তোলেন মেয়েটির দাদা। তাঁদের বাবা সেটি ফেসবুকে পোস্ট করেন। অভিযোগ, শেওড়াফুলির আরএসএস নেতা অমনিশ আইয়ার ছবিটি খারাপ উদ্দেশ্যে ছড়িয়ে দেন। কল্যাণবাবুর নির্বাচ‌নী এজেন্ট দিলীপ এবং তরুণীর বাবা শ্রীরামপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশ নির্দিষ্ট ধারায় মামলা রুজু করে।

তরুণীর বাবার বক্তব্য, ‘‘কল্যাণবাবুর সঙ্গে আমাদের কার্যত পারিবারিক সম্পর্ক। মেয়ের সঙ্গে ওঁর জেঠু-ভাইঝির সম্পর্ক। অথচ, ছবিতে এত নিম্নরুচির মন্তব্য করা হল, বলার নয়।’’ বুধবার অমনিশকে পুলিশ গ্রেফতার করে। প্রতিবাদে রাত ৮টা নাগাদ বিজেপি এবং আরএসএস-এর এক দল নেতাকর্মী শেওড়াফুলি ফাঁড়িতে বিক্ষোভ শুরু করেন। ফাঁড়ির মোড়ে জিটি রোড অবরোধ করা হয়। সার দিয়ে গাড়ি দাঁড়িয়ে যায়। বেশ কিছুক্ষণ অবরোধের পরে বিক্ষোভকারীরা উঠে এসে ফাঁড়ির ভিতরে বসে পড়েন। তৃণমূল এবং পুলিশের বিরুদ্ধে স্লোগান, এবং ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনি চলতে থাকে। ফাঁড়ির ইনচার্জ শুভাশিস দাস তাঁদের বোঝানোর চেষ্টা করলেও লাভ হয়নি। ফাঁড়ির গেট আটকে বিক্ষোভকারীদের অনেকে শুয়ে পড়েন। তাঁদের মধ্যে মহিলাও ছিলেন।

রাত পৌনে ১০টা নাগাদ বাহিনী নিয়ে ঘটনাস্থলে আসেন শ্রীরামপুর থানার আইসি দিব্যেন্দু দাস। গেটের মুখ আটকে থাকায় তিনি ফাঁড়িতে ঢুকতে পারেননি। তখনই পুলিশ লাঠিচার্জ করে। মহিলারাও ছাড় পাননি বলে অভিযোগ। ফাঁড়ি সংলগ্ন রাস্তায় হুলস্থুল পরিস্থিতি হয়। এর পরেই পুলিশ অভিযোগ তোলে, ফাঁড়িতে ভাঙচুর করা হয়েছে। কয়েক জন পুলিশকর্মী আহত হয়েছেন। ওই অভিযোগে ইন্দ্রজিৎ সিংহ, অলোক সরকার, স্নেহাংশু মোহান্তি, রবীন্দ্র শর্মা এবং অশোক সিংহ নামে পাঁচ জনকে গ্রেফতার করা হয়। তাঁদের এবং অমনিশকে বৃহস্পতিবার শ্রীরামপুর আদালতে হাজির করানো হয়। বিচারক তাঁদের ১৪ দিন জেল হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। ধৃতদের মধ্যে দলের চাঁপদানি মণ্ডলের সম্পাদক রবীন্দ্রের দাবি, ‘‘ফাঁড়িতে ভাঙচুর হলে তো সিসিটিভি ফুটেজ থাকবে। ছবি দেখানো হোক।’’

Lok Sabha Election 2019 RSS লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy