সংগঠনের হাল নিয়ে ফের দলীয় কর্মীদের অনুযোগ শুনতে হল হুগলি লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী লকেট চট্টোপাধ্যায়কে।
কয়েকদিন আগে চাঁপদানিতে নির্দিষ্ট এলাকায় লকেট না-যাওয়ায় প্রকাশ্যেই তাঁর কাছে ক্ষোভ উগরে দিয়েছিলেন দলের এক স্থানীয় নেতা। তারপরে চুঁচুড়ায় কর্মী-বৈঠকে দলীয় সংগঠনের অব্যবস্থা নিয়েও ক্ষোভের কথা শুনতে হয়েছিল তাঁকে। শুক্রবার বিজেপি প্রার্থীকে একই পরিস্থিতির মুখে পড়তে হল পান্ডুয়ায়। বিজেপি সূত্রের খবর, সবাইকেই ক্ষোভ দূরে সরিয়ে রেখে ভোটের কাজে ঝাঁপিয়ে পড়ার পরামর্শ দেন লকেট। এতে অবশ্য ক্ষুব্ধ কর্মীরা সন্তুষ্ট হতে পারেননি। লকেট অবশ্য দাবি করেন, ‘‘সকলের কথাই শোনা হয়েছে। কারও কোনও ক্ষোভ নেই।’’
এ দিন বেলা একটা নাগাদ লকেট পান্ডুয়ার তেলিপাড়ায় জিটি রোডের ধারে দলীয় কার্যালয়ে আসেন। বিজেপির বেশ কিছু নেতাকর্মী সেখানে জড়ো হয়েছিলেন। লকেট কার্যালয়ের সামনে দলীয় পতাকা উত্তোলনের সময় ওই নেতা-কর্মীদের একাংশ তাঁকে বলতে থাকেন, তাঁদের কিছু বলার আছে, শুনতে হবে। এ নিয়ে একপ্রস্থ হইচই হয়। তার পরে লকেট সবাইকে কার্যালয়ের ভিতরে ডেকে নেন। বিজেপি সূত্রের খবর, তখন ওই নেতা-কর্মীরা তাঁর কাছে সংগঠন নিয়ে নানা অভিযোগ করেন। অভিযোগ, যাঁরা কষ্ট করে এলাকায় দলীয় সংগঠনকে একটু একটু করে চাঙ্গা করেছেন, দলের বর্তমান ক্ষমতাসীন নেতারা তাঁদের গুরুত্ব দিচ্ছেন না। নিজেদের ইচ্ছেমতো কাজ করছেন।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
জেলায় বিজেপির সংখ্যালঘু মোর্চার সভাপতি শেখ নাসিরউদ্দিন বলেন, ‘‘আমরা এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে বিজেপি করি। শাসকদলের কম অত্যাচার সহ্য করিনি। শাসকদল আমার বিরুদ্ধে ন’টা মিথ্যা মামলা করেছে। বিজেপি করায় মারও খেয়েছি ওদের হাতে। আমার মতো অনেকেই আছেন। অথচ, দলে সে ভাবে আমাদের কথা শোনাই হচ্ছে না।’’ ক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা লকেটকে জানান, দলের পান্ডুয়া মণ্ডলের এক নেতার জন্যই বিভাজনের পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে। সঠিক কর্মসূচি নেওয়া হচ্ছে না। বিজেপি সূত্রের খবর, লকেট ওই নেতাকর্মীদের সব কথা শোনেন। তবে তিনি বলে দেন, এখন সবাই যেন শুধু ভোটে জেতার কথা নিয়েই মাথা ঘামান। সংগঠনের খুঁটিনাটি নিয়ে পরে আলোচনা করা যাবে। ঘণ্টাখানেক পরে লকেট সেখান থেকে বেরিয়ে ধনেখালিতে পরবর্তী কর্মসূচিতে যোগ দিতে বেরিয়ে যান।
লকেটের কথায় অবশ্য চিঁড়ে ভেজেনি। নাসিরউদ্দিন-সহ একাধিক নেতাকর্মী জানান, সমস্যার কথা তাঁরা দলের হুগলি সাংগঠনিক জেলার সভাপতি সুবীর নাগকে জানাবেন। তাঁদের বক্তব্য, ‘‘সঠিক বিচার চাই। তার উপরেই নির্ভর করছে আগামী দিনে কী ভাবে সংগঠনের কাজ আমরা করব অথবা নির্বাচনে থাকব কিনা। এমন ভাবে চললে নিচুতলার কর্মীদের মনোবল কমে যাবে।’’ সুবীরবাবু অবশ্য বলেন, ‘‘কিছু ক্ষোভ থাকতে পারে। পান্ডুয়া মণ্ডলের সব নেতাকে নিয়ে আলোচনা করছি। সব সমস্যা দ্রুত মিটে যাবে।’’