তোতন রায়।
গুপ্তিপাড়া ফেরিঘাট থেকে নিখোঁজ শান্তিপুরের শাড়ি ব্যবসায়ী তোতন রায়ের (৩৫) মৃতদেহ উদ্ধার হল গঙ্গা থেকেই। বৃহস্পতিবার দুপুরে শান্তিপুরের ঘোড়ালিয়ার পালপাড়া ঘাটের কাছে একটি দেহ ভাসতে দেখে বাসিন্দারা পুলিশে জানান। পুলিশ গিয়ে মৃতদেহটি উদ্ধার করে ময়না তদন্তে পাঠায়। তোতনবাবুর পরিবার দেহ শানাক্ত করে। শরীরে আঘাতের চিহ্ন আছে বলে পরিবারের দাবি। ছেলেকে খুন করে গঙ্গায় ফেলে দেওয়া হয়েছে, এই মর্মে শান্তিপুর থানায় তিন মাঝি এবং গাড়িচালক রাজু সাহার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন বাবা ফণীভূষণ রায়।
মঙ্গলবার রাতে গুপ্তিপাড়া ফেরিঘাটে ভেসেল থেকে গঙ্গায় তোতনবাবুর গাড়ি পড়ে যায়। তিনি গাড়ির ভিতরে ছিলেন। সেই সময় থাকা ঘাটের মাঝিরা দাবি করেছিল, তারা তোতনবাবুকে উদ্ধার পাড়ে তোলে। তিনি বমি করছিলেন। কিন্তু তার পর থেকে তাঁর আর খোঁজ মেলেনি। তাঁর গাড়ির চালক রাজু সাহাও কিছু জানাতে পারেনি। শাড়ি ব্যবসায়ী তোতনবাবু পাওনা আদায়ের জন্যই ওই দিন বেরিয়েছিলেন বলে তাঁর পরিবার সূত্রে জানানো হয়। এমনকী তাঁর কাছে লাখ তিনেক টাকাও ছিল পরিবারের দাবি। ছেলের নিখোঁজ হওয়া নিয়ে বুধবারই থানায় অভিযোগ দায়ের করেন ফণীভূষণবাবু। এ দিন ছেলের দেহ উদ্ধারের ঘটনায় তিনি জানান, মাঝিরা তাঁর ছেলেকে উদ্ধার করে পাড়ে তুলেছে বলে জানিয়েছিল তা যে মিথ্যা তা প্রমাণ হয়ে গিয়েছে। তাঁর প্রশ্ন, ‘‘গাড়ি ঠিক থাকল, অথচ আমার ছেলে মারা গেল—তা কী করে হয়? তা ছাড়া আমার ছেলেকে নাকি জল থেকে তোলাও হয়েছিল। তা হলে আবার জলে পড়ল কী ভাবে? সিসি টিভির ক্যামেরাও বা ওই সময় বন্ধ হল কেন? ছেলে নিখোঁজের পর কেন তাঁর গাড়ির চালক রাজু সাহা সে কথা বাড়িতে জানাল না। এই সব প্রশ্নের তদন্ত করুক পুলিশ। আমরা চাই আমার ছেলের খুনি শাস্তি পাক।”
এ দিন তোতনবাবুর দেহ উদ্ধারের পর প্রশ্ন উঠেছে, রাজু এবং মাঝিরা কি ওই দিন পুলিশকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছিলেন? ফণীভূষণবাবুর অভিযোগ, ছেলের কাছে ব্যবসার তিন লক্ষ টাকা ছিল। এ ছাড়াও, গলায় দু’টি সোনার চেন, হাতে সোনার আংটি ছিল। দু’টি মোবাইল ফোন এবং দু’টি এটিএম কার্ডও ছিল। সে সবের লোভেই পরিকল্পনা করে তাঁকে খুন করে দেহ জলে ফেলে দেওয়া হয়েছে। এ দিন দেহ উদ্ধারের খবর মিলতেই চার জন মাঝি এবং গাড়িচালক রাজুকে আটক করে বলাগড় থানার পুলিশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy