Advertisement
E-Paper

সাহায্য করল আধার, বাড়ি ফিরল কিশোর

প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ১৫ ডিসেম্বর রাতে শেওড়াফুলি স্টেশনে চুপটি করে বসেছিল ছেলেটি। সঙ্গে ছিল জামাকাপড়ের একটি ব্যাগ। কিছু যাত্রী তাকে শেওড়াফুলি রেল পুলিশের কাছে পৌঁছে দেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৪ ডিসেম্বর ২০১৭ ০১:৫৭
পরিবারের সঙ্গে জবার আলম। নিজস্ব চিত্র

পরিবারের সঙ্গে জবার আলম। নিজস্ব চিত্র

রাজমিস্ত্রির জোগাড়ে হিসেবে কাজের আশায় ঘর ছেড়ে অচেনা জায়গায় এসে হারিয়ে গিয়েছিল মালদহের বছর চোদ্দোর এক কিশোর। হুগলি জেলা চাইল্ড লাইনের চেষ্টায় শুক্রবার সে বাড়ি ফিরল। এ কাজে সহায়ক হল ছেলেটির আধার কার্ড।

প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ১৫ ডিসেম্বর রাতে শেওড়াফুলি স্টেশনে চুপটি করে বসেছিল ছেলেটি। সঙ্গে ছিল জামাকাপড়ের একটি ব্যাগ। কিছু যাত্রী তাকে শেওড়াফুলি রেল পুলিশের কাছে পৌঁছে দেন। পরের দিন রেল পুলিশের তরফে ছেলেটিকে চাইল্ড লাইনের হাতে তুলে দেওয়া হয়। চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটির নির্দেশে তাকে পাঠানো হয় হাওড়ার বাগনানের ইটিন্ডা হোমে।

চাইল্ড লাইন সূত্রের খবর, ছেলেটির কথাবার্তা অসংলগ্ন থাকায় তার ঠিকানা জানা যাচ্ছিল না। তার ব্যাগ ঘেঁটে আধার কার্ড পাওয়া যায়। দেখা যায়, ছেলেটির নাম জবার আলম। বাড়ি মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুরের জগন্নাথপুরের। চাইল্ড লাইনের আধিকারিকেরা হরিশ্চন্দ্রপুর থানার অন্তর্গত ভালুকা ফাঁড়ির অফিসারদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। মালদহ চাইল্ড লাইনেও বিষয়টি জানানো হয়। পুলিশ ওই কিশোরের বাড়ি খুঁজে বের করে।

জবারের বাবা আতাউর রহমান ইটভাটার শ্রমিক। জবাররা পাঁচ ভাই। সে-ই বড়। অভাবের সংসার। তাই রোজগারের আশায় আগাম দাদনের টাকা নিয়ে কিশোর ছেলেকে কিছুদিন আগে কালিয়াচকের এক ঠিকাদারের হাতে তুলে দেন আতাউর। জবার কলকাতায় চলে আসে। এখানে এক দিন তাকে দিয়ে রাজমিস্ত্রির জোগাড়ের কাজও করানো হয়। কিন্তু তার পরে লোকটি তাকে ফেলে চলে যায়। এর পরে অন্য এক জন বাড়ি পৌঁছনোর নাম করে তাকে শেওড়াফুলি স্টেশনে এন‌ে ফেলে রেখে পালায়।

সিডব্লিউসি-র নির্দেশে হুগলি চাইল্ড লাইনের আধিকারিক অমিত সরকার পুলিশের সাহায্য নিয়ে ছেলেটিকে মালদহে নিয়ে যান। বৃহস্পতিবার সেখানকার চাইল্ড লাইন‌ের হাতে জবারকে তুলে দেওয়া হয়। পরে তাদের মাধ্যমে ছেলেটিকে তার বাবার হাতে তুলে দেওয়া হয়। অমিত বলেন, ‘‘ছেলেটি খুবই কম কথা বলে। কথা বোঝাও দুষ্কর হচ্ছিল। আধার কার্ড থাকায় ওকে বাড়ি ফেরানো সহজ হল।’’

বাড়ি ফিরতে পেরে ছেলেটি খুশি। ছেলেকে ফিরে পেয়ে খুশি মা-বাবাও। আতাউর বলেন, ‘‘আর ওকে বাইরে পাঠাব না। বাবা-ছেলে এখানেই কাজ করব।’’ ভালুকা পঞ্চায়েতের প্রধান ওবাইদুর রহমান আতাউরের প্রতিবেশী। প্রধান বলেন, ‘‘ওঁরা খুব অভাবী। তবু নাবালক ছেলেকে বাইরে পাঠাতে নিষেধ করেছিলাম। কিন্তু ওঁরা শোনেননি। ওঁদের সাহায্য করার চেষ্টা করব।’’

চাইল্ড লাইনের আধিকারিকদের বক্তব্য, অল্পবয়সী ছেলেদের কাজে পাঠানোর প্রবণতা বিপজ্জনক। এতে একটি ছেলের ভবিষ্যৎ নষ্টের যথেষ্ট সম্ভাবনা থাকে। এ ক্ষেত্রেও পথ হারিয়ে ছেলেটি অন্য কোনও জায়গায় পৌঁছে যেতে পারত। যাত্রীরা রেল পুলিশের হাতে তুলে দেওয়ায় এ যাত্রায় সে বাড়ি ফিরতে পারল।

Missing aadhaar card Missing youth শেওড়াফুলি
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy