প্রতীকী ছবি।
চোলাই বিক্রির অভিযোগ শুক্রবার রাতে সিঙ্গুর স্টেশন চত্বর থেকে দু’জনকে গ্রেফতার করেছিল শেওড়াফুলি রেল পুলিশ। ওই রাতেই তাঁদের মধ্যে একজনের অস্বাভাবিক মৃত্যু হল রেল পুলিশের হেফাজতে।
মৃতের নাম অমর মাহাতো (৫২)। তিনি সিঙ্গুর স্টেশন চত্বরেই থাকতেন। তাঁর দিদি মুকুরি ওঁরাওয়ের দাবি, ‘‘ভাই মদ খেত ঠিকই। কিন্তু চোলাই কারবারে যুক্ত ছিল না। স্টেশনের কাছে বিভিন্ন দোকানে টুকটাক কাজ করত। লক-আপে কী করে ভাই মারা গেল, তার সঠিক তদন্ত করা হোক।’’
হাওড়ার রেল পুলিশ সুপার নীলাদ্রি চক্রবর্তী বলেন, ‘‘চোলাই কারবারের নির্দিষ্ট অভিযোগে অমর-সহ দু’জনকে গ্রেফতার করা হয়। রাতে খাওয়া-দাওয়ার পরে অমর অসুস্থ হয়ে পড়েন। তার জেরেই মৃত্যু। বিভাগীয় তদন্ত শুরু হয়েছে।’’
রেল পুলিশ সূত্রের খবর, হেফাজতে মৃত্যু হওয়ায় নিয়মমতো ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে চিকিৎসকদের বোর্ড বসিয়ে শনিবার মৃতদেহের ময়নাতদন্ত করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের ভিডিওগ্রাফিও করা হয়েছে। রাত পর্যন্ত থানায় লিখিত কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি। একটি অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু হয়েছে।
রেল পুলিশ জানিয়েছে, শুক্রবার রাত ১০টা নাগাদ অমর এবং শেখ নজরুল নামে আর এক প্রৌঢ়কে ধরা হয়। তাঁদের কাছ থেকে ৩০ লিটার চোলাই বাজেয়াপ্ত করা হয়। তাঁদের শেওড়াফুলি জিআরপি থানার লক-আপে রাখা হয়। আবগারি আইনের নির্দিষ্ট ধারায় মামলা রুজু করা হয়।
রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ নজরুলের সামনেই রোগাটে চেহারার অমর অসুস্থ হয়ে পড়েন। শ্রীরামপুর ওয়ালশ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। এ নিয়ে নজরুলের বক্তব্য রেকর্ড করা হয়েছে। তবে, লক-আপের সিসি ক্যামেরা অকেজো ছিল বলে মেনে নিয়েছেন রেল পুলিশের একাংশ। শনিবার সকালে হাওড়া রেল পুলিশের ডিএসপি শিশিরকুমার মিত্র তদন্তে আসেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সিঙ্গুর-২ পঞ্চায়েতের রতনপুরে অমরদের বাড়ি। বছর পনেরো আগে তিনি বাড়ি ছেড়ে বেরিয়ে আসেন। তার পর থেকে তাঁর ঠিকানা ছিল সিঙ্গুর স্টেশন চত্বর।
তাঁর মৃত্যুর কথা জানার পরে ওই পঞ্চায়েতের সদস্য অমরনাথ সাবুই বলেন, ‘‘অমর চোলাইয়ের কারবার করতেন বলে তো শুনিনি, দেখিওনি।’’ রেল পুলিশের হেফাজতে মৃত্যু নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান। তিনি বলেন, ‘‘এই জেলাতেই পুলিশ হেফাজতে ভিখারি পাসোয়ানের মৃত্যুর ঘটনায় তোলপাড় করে দিয়েছিলেন বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর রাজত্বে এই ভাবে লক-আপে মৃত্যুর ঘটনা কেন ঘটবে? মুখ্যমন্ত্রীর খতিয়ে দেখা উচিত।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy