Advertisement
E-Paper

নজর নেই, অ্যাসিডের বিক্রি অবাধ

উলুবেড়িয়া মহকুমায় বেশ কয়েকটি সোনার দোকান ও বড় কারখানা রয়েছে। ওই সব জায়গাতেই কমবেশি অ্যাসিড ব্যবহার হয়। সরকারি তথ্য বলছে, অ্যাসিড সরবরাহের জন্য গোটা মহকুমায় ৮০টি হার্ডওয়্যারের দোকান রয়েছে।

নুরুল আবসার

শেষ আপডেট: ২৬ জুন ২০১৭ ০২:৪৫

সরকারি নিয়মকে বুড়ো আঙুল দেখিয়েই দেদার বিকোচ্ছিল অ্যাসিড। সংবাদপত্রে প্রতিবেদন প্রকাশের পর টনক নড়েছিল পুলিশ। বেআইনি অ্যাসিড বিক্রির বিরুদ্ধে শুরু হয়েছিল অভিযান। তবে সেটা একদিনের জন্যই। তারপরই রণে ভঙ্গ দিলেন পুলিশ ও প্রশাসনিক কর্তারা।

উলুবেড়িয়ায় মাস খানেক আগেই এক যুবতী অ্যাসিড খেয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। কী ভাবে ওই যুবতী অ্যাসিড পেলেন, তার তদন্তে নেমেই অ্যাসিড বিক্রির ফাঁক নজরে আসে। তখনই ঠিক হয়, প্রতি সপ্তাহে থানাগুলির পক্ষ থেকে বিভিন্ন এলাকার দোকান এবং গয়না তৈরির কারখানাগুলিতে অভিযান চালানো হবে। এর পরেই উলুবেড়িয়ার এসডিও এবং এসডিপিও-র নেতৃত্বে আধিকারিকদের একটি দল বাগনানের বেশ কয়‌েকটি হার্ডওয়্যারের এবং গয়না তৈরির কারখানায় অভিযান চালায়। দেখা যায়, কারও কাছেই অ্যাসিড বিক্রির লাইসেন্স নেই। অথচ প্রতিটি জায়গাতেই প্রচুর পরিমাণ অ্যাসিড রয়েছে। বেআইনিভাবে অ্যাসিড মজুত করার জন্য ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে মামলা রুজু করা হয়। শুধু তাই নয়, অ্যাসিড বিক্রি বা মজুত করার জন্য কী কী করণীয় তা-ও ওই ব্যবসায়ীদের বলে দেওয়া হয়। কিন্তু সেই শেষ। এর পর আর কোনও অভিযান হয়নি। উলুবেড়িয়ার মহকুমাশাসক অংশুল গুপ্তের অবশ্য দাবি, ‘‘শীঘ্র অভিযান শুরু হবে।’’

উলুবেড়িয়া মহকুমায় বেশ কয়েকটি সোনার দোকান ও বড় কারখানা রয়েছে। ওই সব জায়গাতেই কমবেশি অ্যাসিড ব্যবহার হয়। সরকারি তথ্য বলছে, অ্যাসিড সরবরাহের জন্য গোটা মহকুমায় ৮০টি হার্ডওয়্যারের দোকান রয়েছে। বেসরকারি মতে এই সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ। জানা গিয়েছে, স্থানীয় পঞ্চায়েত এবং পুরসভার থেকে ট্রেড লাইসেন্স নিয়ে চলছে এই কারবার। কিন্তু অ্যাসিড বিক্রির জন্য প্রয়োজনীয় লাইসেন্স কোনও দোকানেই নেই। মানা হয় না আদালতের নির্দেশও। এ রাজ্যে সোনার দোকান-সহ বিভিন্ন কারখানায় অ্যাসিড ব্যবহার করা হয়। নিয়মানুযায়ী, অ্যাসিড বিক্রি করলে লাইসেন্স থাকা বাধ্যতামূলক। তা হলে এত দোকানে অ্যাসিড ব্যবহার হচ্ছে জেনেও প্রশাসন নির্বিকার কেন? প্রশ্ন তুলছেন এলাকার বাসিন্দারাই। তাঁদের অভিযোগ, ‘‘পুলিশ-প্রশাসন দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বা অভিযান চালানো হবে বলেই দায় এড়িয়ে যাচ্ছে। কড়া ব্যবস্থা
নিচ্ছে না।’’

তবে মহকুমা প্রশাসন সূত্রে খবর, কী ভাবে অ্যাসিড মজুত করতে হবে সেই নির্দেশ জানানো হয়েছিল ব্যবসায়ীদের। হার্ডওয়্যারের দোকানগুলি থেকে কারা অ্যাসিড কিনছেন, কী জন্য তা কেনা হচ্ছে, ক্রেতাদের নাম ও ফোন নম্বর রেজিস্ট্রারে লিখে রাখতে হবে। গয়না তৈরির কারখানাগুলিকেও একই কথা বলা হয়। তাঁদেরও একটি রেজিস্ট্রার রাখতে বলা হয়। সেখানেই লেখা থাকবে কার কাছ থেকে কারখানার মালিক অ্যাসিড কিনেছেন এবং কতটা খরচ হয়েছে তার বিস্তারিত বিবরণ। প্রতি ১৫ দিন অন্তর সেই রেজিস্ট্রার মহকুমা প্রশাসনের কাছে দেখিয়ে আনার জন্য দোকান এবং কারখানা মালিকদের নির্দেশ দেওয়া হয়। কিন্তু সেই নিয়ম খাতায় কলমে রয়ে গিয়েছে বলেই অভিযোগ স্থানীয়দের।

Acid Acid attack অ্যাসিড
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy