Advertisement
১৯ মে ২০২৪

মজুরি মেলেনি এক মাস, বন্ধ হনুমান চটকল

নগদ-লক্ষ্মী মুখ ফেরানোয় গয়নার দোকান থেকে ছোট-মেজো-সেজো অনেক বাণিজ্য প্রতিষ্ঠানই ঝাঁপ ফেলে দিচ্ছে। নোটের সেই চোট লাগল এ বার চটকলেও!

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০৭ ডিসেম্বর ২০১৬ ০২:৪৬
Share: Save:

নগদ-লক্ষ্মী মুখ ফেরানোয় গয়নার দোকান থেকে ছোট-মেজো-সেজো অনেক বাণিজ্য প্রতিষ্ঠানই ঝাঁপ ফেলে দিচ্ছে। নোটের সেই চোট লাগল এ বার চটকলেও!

পাঁচশো আর হাজার টাকার পুরনো নোট বাতিলের পরে প্রাপ্য মজুরি না-মেলায় হাওড়ার ঘুসুড়ি এলাকার হনুমান জুটমিলে বেশ কিছু দিন ধরে শ্রমিক-অসন্তোষ চলছিল। তার প্রভাব পড়ছিল উৎপাদনেও। গত প্রায় এক মাসেও সেই সমস্যা মেটেনি। শেষমেশ মঙ্গলবার সকাল থেকে অনির্দিষ্ট কালের জন্য বন্ধ হয়ে গেল হনুমান চটকল। কর্মহীন হয়ে পড়লেন প্রায় আড়াই হাজার কর্মী।

চটকল-কর্তৃপক্ষের দাবি, মজুরি না-পাওয়ায় কর্মীরা ক্রমাগত মারমুখী হয়ে উঠছিলেন। কাজও বন্ধ করে দিয়েছিলেন। তাই মিল বন্ধ করে দেওয়া ছাড়া আর কোনও উপায় ছিল না। তবে কর্মচারী সংগঠনগুলির অভিযোগ, চটকলে কোনও শ্রমিক-অসন্তোষই ছিল না। কর্মী ও শ্রমিক সংগঠনগুলিকে সম্পূর্ণ অন্ধকারে রেখে কর্তৃপক্ষ এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, এ দিন সকালে কাজে যোগ দিতে গিয়ে কর্মীরা দেখেন, চটকলের গেটে ‘সাসপেনশন অব ওয়ার্ক’ বা কাজ বন্ধের নোটিস ঝুলছে। সেই নোটিস দেখেই সকালের শিফ্‌টে কাজ করতে আসা কয়েকশো কর্মী বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। খবর পেয়ে চটকেলের গেটে পৌঁছে যান স্থানীয় বিধায়ক তথা রাজ্যের ক্রীড়া ও যুবকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী লক্ষ্মীরতন শুক্ল, উত্তর হাওড়ার তৃণমূল সভাপতি তথা হাওড়া পুরসভার মেয়র-পারিষদ গৌতম চৌধুরী। তাঁদের অভিযোগ, ওই চটকলে প্রতি মাসের ১০ এবং ২৫ তারিখে অর্থাৎ দু’দফায় মজুরি দেওয়া হয়। কিন্তু ৮ নভেম্বর নোট বাতিলের পর থেকে এখনও পর্যন্ত কোনও মজুরি পাননি কর্মীরা। সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন তাঁরা। সেই সমস্যার সমাধান না-করে শ্রমিক-অসন্তোষের বাহানায় চটকলটি আচমকা বন্ধ করে দেওয়া হল।

‘‘মালিকেরা মিথ্যে অভিযোগে চটকলটি বন্ধ করে দিয়েছেন। আমাদের সঙ্গে মালিক পক্ষের কোনও কথা হয়নি। ওই মিলে কোনও শ্রমিক-অসন্তোষও নেই,’’ বলেন ওই জুটমিলের আইএনটিটিইউসি শ্রমিক সংগঠনের সভাপতি অশোক ঘোষ।

হনুমান চটকলের বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের অভিযোগ, যে-সব কর্মীর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নেই, নোট বাতিলের পরে চটকল-কর্তৃপক্ষ তাঁদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খুলিয়ে দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছিলেন। তার জন্য শ্রমিকদের ফর্মও পূরণ করা হয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কাজের কাজ কিছুই হয়নি।

কর্মী-শ্রমিকদের মজুরি যে বকেয়া পড়েছে, চটকলের তরফে তা স্বীকার করা হয়েছে। চটকল-কর্তৃপক্ষের তরফে ডি কে পাটনি জানান, পুরনো নোট বাতিলের ফলে ঠিক সময়ে মজুরি দেওয়া যায়নি। যে-সব কর্মীর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নেই, তাঁদের অ্যাকাউন্ট খোলার জন্য কাজ চলছে। ‘‘কিন্তু কর্মীরা এর মধ্যেই কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে মারমুখী আচরণ শুরু করায় আমরা মিল বন্ধ করতে বাধ্য হয়েছি,’’ ব্যাখ্যা দিয়েছেন পাটনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Jute Mill closed
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE