Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

ই-রিকশার পথেই টোটোচালকেরা

সংঘাতের পথ ছেড়ে প্রশাসনের দেখানো পথেই হাঁটলেন টোটোচালকেরা। ই-রিকশা নেওয়ার আবেদনের নির্দিষ্ট ফর্ম তুলতে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বিতরণ কেন্দ্রগুলির সামনে লম্বা লাইন পড়ল। রোদ মাথায় নিয়ে প্রথম দিনেই ফর্ম তুললেন প্রায় দু’হাজার টোটোচালক।

ফর্ম নিতে লাইন চালকদের। বৃহস্পতিবার, হাওড়ায়। নিজস্ব চিত্র

ফর্ম নিতে লাইন চালকদের। বৃহস্পতিবার, হাওড়ায়। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২৩ মার্চ ২০১৮ ০১:৪৯
Share: Save:

সিদ্ধান্তে অনড় থাকলে যে ফল মেলে, হাওড়ায় টোটোর বদলে ই-রিকশা চালু নিয়ে সরকারের কঠোর মনোভাবে তা আবার প্রমাণ হল।

সংঘাতের পথ ছেড়ে প্রশাসনের দেখানো পথেই হাঁটলেন টোটোচালকেরা। ই-রিকশা নেওয়ার আবেদনের নির্দিষ্ট ফর্ম তুলতে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে বিতরণ কেন্দ্রগুলির সামনে লম্বা লাইন পড়ল। রোদ মাথায় নিয়ে প্রথম দিনেই ফর্ম তুললেন প্রায় দু’হাজার টোটোচালক।

জেলা প্রশাসনের তরফে আগেই বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানানো হয়েছিল, ২২ মার্চ থেকে ২৬ মার্চ ই-রিকশা নেওয়ার জন্য আবেদনপত্র সাতটি জায়গা থেকে দেওয়া হবে। সেই জায়গাগুলি হল সাঁতরাগাছি বাসস্ট্যান্ড, আরতি কটন মিলের মাঠ, হাওড়া রেল মিউজিয়াম, ঘাসবাগান স্পোর্টিং ক্লাব, বেলিলিয়াস পার্ক ও পদ্মপুকুর জল প্রকল্পের পাশের মাঠ। জানানো হয়েছিল, আবেদনপত্র পেতে হলে টোটোচালকদের ভোটার কার্ড, হাওড়া পুরসভা বা হাওড়া পুলিশ কমিশনারেটের দেওয়া লাইসেন্স এবং নম্বর প্লেট দেখাতে হবে। এক জনকে দেওয়া হবে একটি মাত্র ফর্ম।

এ দিন সকাল থেকে ওই সাতটি কেন্দ্রে পুলিশি প্রহরায় ফর্ম বিলি হয়। রোদের জন্য পুলিশের পক্ষ থেকে প্যান্ডেল করা হয়েছিল। পুরসভা ব্যবস্থা করেছিল পানীয় জলের।

প্রসঙ্গত, বুধবার টোটোচালকদের একাংশের বিক্ষোভ ও পুলিশের সঙ্গে তাঁদের খণ্ডযুদ্ধে উত্তাল হয় হাওড়া ময়দান চত্বর। ওই ঘটনার পরেই চালকদের মধ্যে বিভাজন স্পষ্ট হয়ে যায়। একাংশ অভিযোগ করে, যে টোটোমালিকেরা বহু টোটো কিনে ব্যবসা করছিলেন তাঁরাই শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকে হিংসাত্মক রূপ দেন। কিন্তু এই ঘটনা জেলা প্রশাসনের কাছে কার্যত শাপে বর হয়। অধিকাংশ টোটোচালক প্রশাসনের সিদ্ধান্ত যে মেনে নিয়েছেন, এ দিন প্রতিটি কেন্দ্রে দীর্ঘ লাইন সেটাই প্রমাণ করেছে।

স্বভাবতই প্রশ্ন উঠেছে, ফর্ম যখন নিতেই হল তখন পুলিশের সঙ্গে খণ্ডযুদ্ধের প্রয়োজন ছিল কি? বেলিলিয়াস পার্কে ফর্ম নিতে আসা এক টোটোচালক গণেশ সাউ বলেন, ‘‘বহু মানুষ টোটো চালিয়ে সংসার চালাচ্ছেন ঠিকই। কিন্তু সরকার যখন ই-রিকশা চালু করে যান চলাচলে গতি আনতে চাইছে, তখন এ ভাবে হিংসাত্মক প্রতিবাদের প্রয়োজন ছিল না।’’ জাকির হোসেন নামে আর এক চালকের অভিযোগ, ‘‘টোটোমালিকদের একাংশ নিজেদের স্বার্থে এই আন্দোলন সংগঠিত করেছিলেন। তাঁদের এক-এক জনের প্রচুর টোটো ভাড়া খাটছিল শহরে।’’

হাওড়ার অতিরিক্ত জেলাশাসক (সাধারণ) অভিজিৎ লাটুয়া বলেন, ‘‘টোটোচালকেরা না বুঝেই আন্দোলন করেছেন। আরও যে সমস্যা আছে, তা প্রশাসন দূর করার চেষ্টা করছে।’’ জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, স্ত্রীর নামে লাইসেন্স অথচ গাড়ি চালান স্বামী, বা প্রতিবন্ধী কারওর নামে লাইসেন্স অথচ গাড়ি চালান অন্য কেউ, এমন ক্ষেত্রগুলি বিবেচনা করা হচ্ছে। তা ছাড়া কেউ গাড়ি বিক্রি করে দেওয়ার পরেও লাইসেন্সে বর্তমান মালিকের নাম নেই— এমন ঘটনাও প্রচুর। সে সব ক্ষেত্রে কী করা যায়, ভাবা হচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Toto E-Rickshaws Howrah
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE